• লা লিগা
  • " />

     

    ১১ জুলাই ইনিয়েস্তার কাছে 'দ্বিতীয়' জন্মদিন

    ১১ জুলাই ইনিয়েস্তার কাছে 'দ্বিতীয়' জন্মদিন    

    ফ্রান্সেস্ক ফ্যাব্রিগাস বক্সের ঠিক বাইরে থেকে বল বাড়িয়েছেন। আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা বক্সের ভেতর, তাকে পাহারায় রাখতে পারেনি নেদারল্যান্ডসের কেউ। ইনিয়েস্তা এক পায়ে বল নিয়ন্ত্রণ করলেন, ডান পায়ে এরপর শট মারলেন গোল বরাবর। সেই বল গিয়ে জড়াল মার্টিন স্কেটেলেনবার্গের জালে। নির্ধারিত ৯০ মিনিট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর অতিরিক্ত সময়ে সকার সিটিতে তখন বাকি আর মাত্র ৪ মিনিট। বিশ্বকাপ ফাইনালে এমন জায়গা থেকে ফেরাও কঠিন। নেদারল্যান্ডস আর ফিরতে পারেনি, স্পেন সেবার জিতে নিয়েছিল নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ। এই ঘটনার ১০ বছর পর অনেককিছুই বদলে গেছে। কিন্তু একটা ব্যাপার এখনও বদলায়নি। ১১ জুলাই এলেই শুভেচ্ছা বার্তা সিক্ত হন ইনিয়েস্তা, এই দিনেই তো স্পেনকে বিশ্বকাপ পাইয়ে দিয়েছিলেন তিনি!

    ইনিয়েস্তার ওই গোলের পর বার্সেলোনার হয়ে যতবার স্পেনের বিভিন্ন মাঠে তিনি খেলতে গিয়েছেন, ততোবার দর্শকরা দাঁড়িয়ে সম্মান জানিয়েছে তাকে। সেটা চিরবৈরী বার্নাব্যুই হোক, অ্যাটলেটিকোর মাঠেই হোক। ইনিয়েস্তা হয়ে গেছেন বিশ্বকাপজয়ীদের ভেতরও সেরাদের সেরা।
     


    "ওই গোলের মুহুর্ত এখনও শিহরণ জাগিয়ে যায়। এরপর থেকে ব্যাপারটা এমন দাঁড়িয়েছে যে ১১ জুলাই যেন আমার জন্মদিন। আমি প্রচুর শুভেচ্ছাবার্তা পাই এইদিনে।"- বিশ্বকাপ জয়ের ১০ বছর পূর্তিতে ইনিয়েস্তা সেদিনের স্মৃতি রোমন্থন করেছেন মার্কার কাছে।

    "এবারের উপলক্ষ্যটা আরেকটু বেশি, কারণ ১০ বছর পূর্তি হলো সেই ম্যাচের। দারুণ মুহুর্ত ছিল।"

    "সবকিছু যেন থমকে গেল, সব থেমে গেল! বল নিয়ন্ত্রণ করার পর আমি দেখলাম ডান পায়ে শট করার জন্য একদম পারফেক্ট মুহুর্ত। আমার তখনই মনে হয়েছিল, এটাই সেই মুহুর্ত, এটা গোল হবেই! কেন মনে হয়েছিল আমি জানিনা। এটা ছিল আমাদের মুহুর্ত, গোটা স্পেনের মুহুর্ত।"

    ২০১০ বিশ্বকাপে ফেভারিট হয়েই দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিল স্পেন। প্রথম ম্যাচ হারলেও এরপর আর তাদের দমানো যায়নি। দ্বিতীয় রাউন্ড, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনালের পর ফাইনালও স্পেন জিতেছিল ১-০ স্কোরলাইনে। ফাইনালের ওই গোলের পর তিনি যে স্পেনে সবার প্রিয়পাত্র হয়ে গেছেন, সেটা ইনিয়েস্তাও জানেন। স্বীকারও করে নিয়েছেন, "আমি যদি বলি স্পেনে আমি সবার নয়নের মণিতে পরিণত হয়েছি তাহলে সেটা বাড়াবাড়ি হবে না আশা করি।"

    ইনিয়েস্তা মনে করেন, স্পেনের এতোগুলো মানুষের মনে ঠাঁই নিতে পারাই তার সবচেয়ে বড় অর্জন, "শেষ বাঁশির পর আমি মাটিতে পড়ে গিয়েছিলাম। সবার আগে আমার কাছে এগিয়ে এসেছিল ভিক্টর ভালদেস। আমি কিছুই বলতে পারছিলাম না, শুধু কাঁদছিলাম। আমি শুনেছি অনেকেই ওই গোলের উদযাপন করতে গিয়ে বেকায়দা পড়ে গিয়ে আহত হয়েছিল। আবার অনেকে শুধু কেঁদেছে।"

    "এটা বলে বোঝানো যাবে না। এই আনন্দ নিজের সুখের নয়। এতোগুলো মানুষকে আনন্দ দেওয়ার তৃপ্তি। এটাই আমার সেরা উপহার।"