• লা লিগা
  • " />

     

    নাটকীয় ড্রয়ে ১০ ম্যাচ পর থামল রিয়ালের জয়রথ

    নাটকীয় ড্রয়ে ১০ ম্যাচ পর থামল রিয়ালের জয়রথ    

    ফুলটাইম
    লেগানেস ২-২ রিয়াল মাদ্রিদ


    রিয়াল মাদ্রিদের জন্য ছিল নিছক আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচ। আর লেগানেসের জন্য সেটাই জীবন মরণ লড়াই। মাঠে সবটুকু ঢেলে দিয়েও অবশ্য লেগানেসের শেষ রক্ষা হয়নি। দরকার ছিল জয়ের, চ্যাম্পিয়ন  রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ড্র পর্যন্ত যেতে পেরেছে লেগানেস। সেল্টা ভিগোর চেয়ে এক পয়েন্টে পিছিয়ে থেকে তাই রেলিগেশনে পড়তে হলো তাদের।

    আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচ বলেই জিনেদিন জিদান বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছিলেন দলে। থিবো কোর্তোয়া, টনি ক্রুস, লুকা মদ্রিচ, দানি কারভাহাল, রাফায়েল ভারান সবাই ছিলেন বেঞ্চে। কিন্তু সার্জিও রামোস 'নতুন' একাদশটাকেও নেতৃত্ব দিলেন আগের মতোই। ম্যাচের ৯ মিনিটে ইস্কোর ফ্রি-কিক থেকে হেডে লিগের ১১তম গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়েছিলেন রামোস। ১১ গোল করে এই শতাব্দীতে ডিফেন্ডার হিসেবে লা লিগার এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডও হয়েছে রিয়াল অধিনায়কের।

    এই ম্যাচে রিয়ালের আকর্ষণ বলতে ছিলেন করিম বেনজেমা। লা লিগার সর্বোচ্চ গোলদাতা হতে অবশ্য তাকে ৪ গোল করতে হত। হ্যাটট্রিক করলে ছুঁয়ে ফেলতেন মেসিকে। তবে রেলিগেশন এড়ানোর লড়াইয়ে নামা লেগানেসের বিপক্ষে সেভাবে সুযোগ পেলেন কমই। 


    প্রথমার্ধেই ম্যাচে ফেরে লেগানেস। ব্রায়ান গিল বাম পায়ের দারুণ শটে কাছের পোস্টে রিয়ালের দ্বিতীয় পছন্দের গোলরক্ষক আলফোন্সো আরিওলাকে হার মানান। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও আবার নড়বড়ে হয়ে যায় লেগানেস। মার্কো আসেনসিও গোল করে ৫২ মিনিটে আবার এগিয়ে নেন রিয়ালকে। এবারও ইস্কোর অবদান তাতে, তার থ্রু পাস ধরেই গোলের সামনে এগিয়ে দিয়েছিলেন আসেনসিও।

    আবার পিছিয়ে পড়ে নতুন করে ফেরার লড়াই শুরু করে লেগানেস। দ্বিতীয়ার্ধে আর মাঠে নামেননি রামোস। তার জায়গায় নেমেছিলেন নাচো। ৬১ মিনিটের বেনজেমা, কাসেমিরো, আসেনসিওকে তুলে ক্রুস, ইয়োভিচ আর ব্রাহিম ডিয়াজকে নামিয়ে দেন জিদান। কিন্তু লেগানেস আবার ম্যাচে ফেরে ৭৮ মিনিটে, রজার আসালের গোলে। শেষ ১০ ম্যাচের কোনোটিতেই দুই গোল হজম করেনি রিয়াল, লিগের শেষ ম্যাচে এসেছে সেই ধারা ভাঙার পর হারই চোখ রাঙাচ্ছিল তাদের।

    রিয়ালের হারানোর কিছু নেই, লেগানেসের অবশ্য সবটুকুই হারানোর ছিল। সেই ম্যাচে লেগানেস নিজদের চরম দুর্ভাগাই ভাবতে পারে। মৌসুমের মাঝপথে হুট করে দলের মূল স্ট্রাইকার মার্টিন ব্রাথওয়েটকে টান দিয়েছিল বার্সেলোনা। এবারের রিয়ালের বিপক্ষে একটি সম্ভাব্য পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত তারা।

    সমতায় ফেরার পর রিয়ালের রক্ষণভাগে সবটুকু নিংড়ে দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে গেছে তারা। অন্তত দুইবার গোলের সামনে থেকে সহজ সুযোগ পেয়েও লেগানেস বল মেরেছে বাইরে দিয়ে। পেনাল্টির ঘটনা ম্যাচ শেষের ৫ মিনিট আগে। ভিএআর আরেকবার বিতর্ক উস্কে দিয়েছে তখন। ডানদিক থেকে আসা ক্রস লেগেছিল লুকা ইয়োভিচের হাতে। এমন পরিস্থিতিতে আগেও পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেখেছে লা লিগা। ইয়োভিচ অবশ্য অপ্রস্তুত ছিলেন, হাত প্রশস্তও হতে দেননি। ভিএআরের কাছে পেনাল্টি না দেওয়ার জন্য ওটুকু যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে।

    অন্য ম্যাচে একই সঙ্গে রেলিগেশন এড়াতে লড়ছিল সেল্টা ভিগো। রেলিগেটেড হয়ে যাওয়া এস্পানিওলের বিপক্ষে ম্যাচ ছিল তাদের। গোলশূন্য ড্র করেও তারা বেঁচে গেছে লেগানেস ড্র করায়।

    চ্যাম্পিয়ন রিয়ালের অবশ্য এসবে খুব বেশি কিছু যায় আসে না। ম্যাচের শুরুটা তাদের হয়েছিল লেগানেসের কাছ থেকে গার্ড অফ অনার পেয়ে। ম্যাচ শেষে বিষণ্ণ লেগানেস খেলোয়াড়দের সান্ত্বনা দিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাদের। আপাতত রিয়ালের লক্ষ্য সার্জিও রামোসকে এই মৌসুমে আরেকবার মাঠে ফেরানো। সেটা করতে হলে চ্যাম্পিয়নস লিগে ম্যানচেস্টার সিটিকে হারাতে হবে। সব ফিরে পাওয়ার মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে লড়াইটাই এখন বাকি রিয়ালের।