মিরপুর ফিরতে পেরেই খুশি তাসকিন, ফেরার লড়াইয়ে ঘাটতি পূরণের আশা
মুশফিকুর রহিম ইনডোরে ব্যাটিংয়ের পর রানিং করলেন, এরপর ফিল্ডিং। এরপর করলেন উইকেটকিপিংয়ের ড্রিলও। একজন আবার ক্যামেরা হাতে প্রায় পুরোটা সময়ই ব্যস্ত থাকলেন সে ছবি তুলতে। তাসকিন আহমেদ অবশ্য সুযোগ পেলেন শুধু রানিংয়ের। এক ট্রেইনারকে সঙ্গে নিয়ে ৩০ মিনিটের মতো দৌড়ালেন তিনি। বোলিং করতে না পারলেও সবুজ মাঠে দৌড়াতে পেরেছেন, তাসকিনের ভাল লাগা কাজ করছে সেটি নিয়ে। তবে এর চেয়েও বেশি ভাল লাগছে তার মিরপুর স্টেডিয়ামে আসতে পেরেই।
রবিবার থেকে ৪টি ভেন্যুতে ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত অনুশীলনের সুযোগ করে দিয়েছে বিসিবি, তাসকিন প্রথমবারের মতো এসেছিলেন বৃহস্পতিবার। শফিউল ইসলাম, মোহাম্মদ মিঠুন, মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে এদিন মিরপুরে ‘ফিরলেন’ তিনিও, অবশ্য সেটি শুধু রানিংয়ের মাধ্যমেই। কদিন বৃষ্টি এসে বাগড়া দিলেও তাসকিন অবশ্য রোদের দেখাই পেয়েছেন।
২০১৮ সালের মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিই হয়ে আছে তাসকিনের এখন পর্যন্ত শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। অভিষেকের পর একসময় বাংলাদেশ পেস বোলিংয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা ভাবা হতো তাকে, তবে আপাতত তিনি একাদশের বাইরেই। অ্যাকশনের কারণে নিষিদ্ধ হয়েছেন, ফর্মের কারণে বাদ পড়েছেন, চোটের সঙ্গে চলেছে লড়াই। আবু জায়েদ রাহি, এবাদত হোসেনরা দৃশ্যপটে এসেছেন এই সময়েই। শেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের স্কোয়াডে ডাক পেয়েছিলেন তাসকিন, যদিও খেলা হয়নি তার।
তাসকিন অবশ্য এই পরিস্থিতিতেও নিজের যা ঘাটতি, তা পুষিয়ে ফেরার লড়াইটা চালিয়ে যেতে চান, “আমার যা ঘাটতি আছে- ফিটনেস, ফিল্ডিং অন্যতম। এ দুইটা নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি। বোলিংয়ে কোচদের সঙ্গে কথা বলে যতটুকু পারি কাজ করার চেষ্টা করছি। “এজিলিটি” (নিয়ে কাজ করতে চেষ্টা করছি)। লকডাউনের পর যাতে নিজেকে আরও উন্নত করতে পারি। লড়াই করে আগের মতো যাতে সুযোগ হয় (দলে), এটাই লক্ষ্য আমার আরকি।”
একের পর এক সফর স্থগিতের ঘোষণা তাসকিনকে শুধু হতাশ করছে, তবে আপাতত স্বস্তি তার মিরপুরে ফিরতে পেরেই, “আলহামদুলিল্লাহ, ভাল লাগছে অনেক। রানিং করে ভাল লেগেছে, তবে এর চেয়েও বেশি ভাল লেগেছে আসলে মিরপুর স্টেডিয়ামে আসতে পেরে, ড্রেসিংরুমে আসতে পেরে। এতদিন বাসায় থেকেই অনুশীলনের চেষ্টা করেছি, কিন্তু মিরপুর তো আসা হয় নাই। এটা অন্যরকমের একটা ভাল লাগা। প্রায় পাঁচ মাস পর এলাম। একটা স্বস্তি লাগছে।”
অবশ্য খেলতে না পেরে অস্থিরতাও কাজ করছে তার, “খেলোয়াড় হিসেবে মাঝে মাঝে অস্থির হয়ে যাচ্ছি, খেলতে পারছি না অনেক দিন ধরে। ঘরে থাকা, একঘেয়েমি। হয়তো অনুশীলন করছি, কিন্তু একই তো ব্যাপার। অনেকের হয়তো কাজ শুরু হয়ে গেছে, কিন্তু আমাদের তো খেলাই বন্ধ। অবশ্যই খারাপ লাগছে। আল্লাহ যদি চায়, যত দ্রুত সব ভাল হয়।”
আপাতত রানিং, ঈদের পর বোলিংয়ের সুযোগ আসতে পারে তাসকিনদের। শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাতিলের সিদ্ধান্তের পর বিসিবি সামনে কোন সিরিজের দিকে এগুবে, নিশ্চিত হয়নি সেটিও। তবে খেলাই ফিরলে তাসকিনদের মুখোমুখি হতে হবে নতুন কিছু নিয়মের সঙ্গে। বলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে থুতু বা লালা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আইসিসি। তাসকিন অবশ্য মানিয়ে নিতে চান সেটির সঙ্গে, “দিন যতো যাচ্ছে, পেসারদের বিপক্ষেই নিয়ম যাচ্ছে। পুরাতন বলে রিভার্স সুইংয়ে একটা বড় ইস্যু। হয়তো বল শাইনের জন্য নতুন কিছু আসবে। আশা করি, আমাদের খেলা শুরু হলে নতুন কিছু আসবে। এর মাঝে থেকেই মানিয়ে নিতে হবে।”
“বিসিবিকে ধন্যবাদ। আমাদের অনুশীলনের জন্য আলাদা আলাদা করে ইকুইপমেন্ট পাঠিয়েছে। তারা যতোখানি পারে করছে। আমরাও করছি। নিজেদের এখন সাবধানতা অবলম্বন করা।”