• আইপিএল ২০২০
  • " />

     

    মরগান-কামিন্সে রাজস্থানকে ডুবিয়ে নিজেদের কাজটা করে রাখলো কলকাতা

    মরগান-কামিন্সে রাজস্থানকে ডুবিয়ে নিজেদের কাজটা করে রাখলো কলকাতা    

    কলকাতা নাইট রাইডার্স ১৯১/৭, ২০ ওভার (মরগান ৬৮*, ত্রিপাঠি ৩৯, গিল ৩৬, তেওয়াতিয়া ৩/২৫, তিয়্যাগি ২/৩৬, আর্চার ১/১৯)
    রাজস্থান রয়্যালস ১৩১/৯, ২০ ওভার (বাটলার ৩৬, তেওয়াতিয়া ৩১, গোপাল ২৩*, কামিন্স ৪/৩৪, মাভি ২/১৫, বরুণ ২/২০)
    কলকাতা ৬০ রানে জয়ী


    কলকাতা এই ম্যাচ শুরু করেছিল পয়েন্ট টেবিলের শেষ, ৮ নম্বরে থেকে, রাজস্থান ছিল ছয়ে। তবে দুই দলের লড়াইয়ের ফল হতে পারতো একটাই-- এক দলের বিদায়, আরেক দলের শীর্ষ চারের দৌড়ে টিকে থাকা। দুবাইয়ে অইন মরগান ও প্যাট কামিন্সের তোপে রানতাড়ার পাওয়ারপ্লের মাঝেই মোটামুটি দৌড় থেকে ছিটকে গেল রাজস্থান, ইনিংসের মাঝপথে গিয়ে হিসাব ছিল শুধু রানরেটের। বড় ব্যবধানে শুধু হারেনি রাজস্থান, পয়েন্ট টেবিলে চেন্নাইয়ের নিচে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করতে হয়েছে তাদের। আর নিজেদের কাজটা যতখানি সম্ভব করে রাখলো কলকাতা, আপাতত চার নম্বরে উঠে এখন তারা তাকিয়ে থাকবে গ্রুপপর্বে শেষ দুই ম্যাচে-- যেখানে মুম্বাইয়ের মুখোমুখি হবে হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু খেলবে দিল্লির সঙ্গে। হায়দরাবাদ হারলে প্লে-অফ নিশ্চিত হবে কলকাতার, আর জিতলে কলকাতা আবারও পড়ে যাবে রানরেটের চক্করে। বেঙ্গালুরু-দিল্লির ম্যাচে জয়ী দলের নিশ্চিত হবে দুই নাম্বার পজিশন।

    সন্ধ্যার ম্যাচে পরের ইনিংসে শিশিরের প্রভাব মাথায় রেখেই আগে ব্যাটিং করতে হয়েছিল কলকাতাকে, সেখানে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল তারা। অবশ্য ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই নিতিশ রানা ফিরেছিলেন আর্চারের বলে, এরপর শুবমান গিল ও রাহুল ত্রিপাঠির জুটি ৪৯ বলে তুলেছিল ৭২ রান। তবে মাঝে ৪ ওভারের ব্যবধানে ২৭ রানের ভেতর ৪ উইকেট নিয়ে তাদেরকে ব্যাকফুটে ঠেলেছিল রাজস্থান, মরগান কলকাতাকে উদ্ধার করেছেন শেষ পর্যন্ত আইপিএলের নিজের সর্বোচ্চ ৩৫ বলে অপরাজিত ৬৮ রানের স্কোরে। ১৪তম ওভারে শ্রেয়াস গোপালের কাছ থেকে এসেছে ২১ রান, যার মধ্যে ২০-ই নিয়েছিলেন মরগান। আন্দ্রে রাসেল আসার পরই জফরা আর্চারের বদলে গোপালকেই এনেছিলেন স্মিথ, পাওয়ারপ্লেতেও গোপালের করা ৪র্থ ওভারে ১৭ রান নিয়ে একদফা মোমেন্টাম পেয়েছিল কলকাতা। 


    ১১ বলে ২৫ রানের দ্রুত ইনিংস খেলা রাসেলকে ফেরালেও মরগানকে আটকাতে পারেনি রাজস্থান, বেন স্টোকসের ১৯তম ওভারে উলটো তিনি ও প্যাট কামিন্স মিলে তুলেছেন ১৯ রান। শেষ ওভারের ৪র্থ ও ৫ম বলে সিঙ্গেল নেননি মরগান, শেষ বলে মেরেছেন ছয়-- তার আক্রমণাত্মক মানসিকতা ছিল এমনই। 

    সে মানসিকতা তিনি ধরে রেখেছিলেন ফিল্ডিংয়ের সময়ও, কামিন্সকে দিয়ে করিয়েছেন টানা ৩ ওভার। ইনিংসের প্রথম ৫ বলে ১৯ রান তুলে রবিন উথাপ্পা ও স্টোকস ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ‘অল-ইন গেম’ খেলবেন তারাও। ৬ষ্ঠ বলে উথাপ্পা মিডউইকেটে ধরা পড়েছেন, কামিন্সও ফিরে পেয়েছেন আত্মবিশ্বাস। 

    বেন স্টোকস এরপর কামিন্সের বলে দীনেশ কার্তিকের দারুণ ক্যাচের শিকার হয়েছেন, স্টিভ স্মিথ হয়েছেন প্লেইড-অন। এরপর শিভাম মাভিকে খোঁচা দিয়ে সানজু স্যামসন নেই-- রাজস্থানের অবস্থা তখন ‘একে একে নিবিছে দেউটি’র মতো। এরপর জস বাটলারের উইকেট না পেলেও কামিন্স পেয়েছিলেন রিয়ান পরাগেরটি। 

    রাজস্থানের ‘দ্য গ্রেট এসকেপ’-এর আশা হয়ে ছিলেন বাটলার, সঙ্গে রাহুল তেওয়াতিয়া। ভরুণ চক্রবর্তিকে লেংথ থেকে তুলে মারতে গিয়ে ওয়াইড লং-অনে কামিন্সের হাতেই ক্যাচ দিয়েছেন বাটলার, তখন তার রান ২২ বলে ৩৫, ইনিংসের বয়স ১০.৪। রাজস্থানের গতিপথ মোটামুটি নির্ধারিত হয়ে গেছে তখনই, তেওয়াতিয়াও অলৌকিক কিছু করতে পারেননি আর। 

    এরপরের হিসাব নিকাশ ছিল এমন-- রাজস্থানকে ১১১ রানের ভেতর আটকাতে পারলে সরাসরি প্লে-অফে চলে যাবে কলকাতা, ৮১ বা বেশি ও ৭৮ বা বেশি রানের ব্যবধানে জিতলে রান-রেটে ওপরে চলে যাবে যথাক্রমে বেঙ্গালুরু ও দিল্লির। শেষ পর্যন্ত রাজস্থানকে তারা আটকে দিয়েছে ১৩১ রানে, রানরেট -০.৪৬৭ থেকে বেড়ে হয়েছে -০.২১৪। এমন ম্যাচে জয়ের সঙ্গে মরগানের কলকাতার প্রাপ্যই ছিল অন্তত সেটি।