বোলিংয়ে উজ্জ্বল জাহানারা, চ্যাম্পিয়ন সুপারনোভার বিপক্ষে থ্রিলার জিতল ভেলোসিটি
সুপারনোভা ১২৬-৮, ২০ ওভার (আতাপাত্তু ৪৪, হারমানপ্রিত ৩১, একতা ৩/২২, কাসপেরেক ২/২৩, জাহানারা ২/২৭)
ভেলোসিটি ১২৯-৫, ১৯.৫ ওভার (লুস ৩৭*, সুষ্মা ৩৪, কৃষ্ণামূর্তি ২৯, খাকা ২/২৭)
ভেলোসিটি ৫ উইকেটে জয়ী
একটা পর্যায়ে মনে হচ্ছিল রানতাড়ায় ‘ভেলোসিটি’টা হারিয়ে ফেলেছে ভেলোসিটি, শেষ ৩০ বলে ৫০ রান প্রয়োজন ছিল তাদের, ততক্ষণে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল তারা। শারজার এ উইকেটে নেমেই শট খেলা খুব একটা সহজ ছিল না ব্যাটারদের জন্য, তবে সুনে লুস ও সুষ্মা ভার্মা একটু থিতু হতে পারলেন, পুনম যাদবের ১৬তম ওভারে তাদের দুই ছয় দারুণভাবে মোমেন্টাম ফিরিয়ে আনলো ভেলোসিটি। ১৯তম ওভারে বড় শটের চেষ্টায় ভার্মা ধরা পড়লেন লং-অনে, ওই পুনমের বলেই। তবে ছিলেন লুস, শেষ ওভারে তার দুই চারে উইমেনস টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জে থ্রিলারে পরিণত হওয়া প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছেন জাহানারারা, গতবারের চ্যাম্পিয়ন সুপারনোভাকে ৫ উইকেটে হারিয়ে।
টসে জিতে বোলিং নিয়েছিলেন ভেলোসিটি অধিনায়ক মিথালি রাজ, সেখানে জাহানারা নিয়েছিলেন গুরুত্বপূর্ণ দুই উইকেট। সুপারনোভার সর্বোচ্চ দুই স্কোরার-- ৩৯ বলে ৪৪ রান করা চামারি আতাপাত্তু ও ২৭ বলে ৩১ করা অধিনায়ক হারমানপ্রিত কৌর-- দুজনই জাহানারার বলে বড় শটের চেষ্টায় ক্যাচ দিয়েছেন, যথাক্রমে লং-অন ও ফাইন লেগে। ৪ ওভার করেছেন জাহানারা ভিন্ন ভিন্ন স্পেলে-- পাওয়ারপ্লে, মিডল ওভার, ডেথ-- সবখানেই আসতে হয়েছে তাকে। অধিনায়ককে হতাশ করেননি তিনি, তার এনে দেওয়া ব্রেকথ্রুতে ভেঙেছে গুরুত্বপূর্ণ দুই জুটিও। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আর প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক ক্রিকেট খেলেননি, দীর্ঘদিনের বিরতির পর তার ফেরাটা হলো তাই দারুণই।
লুস-সুষ্মার জুটিতে থ্রিলার জিতেছে ভেলোসিটি/আইপিএল
জাহানারার আগে পরে দারুন বোলিং করেছেন দুই স্পিনার-- লেই কাসপেরেক ও একতা বিশত। এ দুজন মিলে নিয়েছেন আরও ৫ উইকেট, তাদের সঙ্গে শিখা পান্ডে মিলে করেছেন আঁটসাঁট বোলিং, সুপারনোভাকে ঠিক হাত খুলে খেলতে দেননি তারা। টপ অর্ডারে প্রিয়া পুনিয়া বা গতবারের টুর্নামেন্টসেরা জেমিমা রদ্রিগজ দ্রুতই ফিরেছেন শুরুতে, লোয়ার অর্ডারকেও তেমন দাঁড়াতে দেননি ভেলোসিটির বোলাররা। শেষ ৩ ওভারে কাসপেরেক, বিশত ও পান্ডে মিলে দিয়েছেন মাত্র ১০ রান। সুপারনোভা আটকে গেছে ১২৬ রানেই, প্রথম ইনিংসশেষে যেটিকে ঠিক দৃঢ় বলে মনে হচ্ছিল না।
অবশ্য প্রথম ওভারে সুপারনোভাকে দারুণ শুরু এনে দিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার আয়াবোঙ্গা খাকা, ৪ বল ডট দেওয়ার পর ৫ম বলে তাকে কাট করতে গিয়ে স্টাম্পের ওপরে থাকা উইকেটকিপার তানিয়া ভাটিয়ার দারুণ ক্যাচে পরিণত হয়েছিলেন ড্যান ওয়েট, ভেলোসিটির ‘বিগ-গান’। শাফালি ভার্মাকে অবশ্য সেসব চাপ ঠিক ছুঁয়ে গেল না শুরুতে, খাকার পরের ওভারে মারলেন টানা তিন চার। তবে শেষ বলে গিয়ে খাকা প্রতিশোধ নিলেন, তার ফুলটসে মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন খাকা।
এরপর বেশ খানিকটা সময় ধরে রান তুলতে হিমশিম খেয়েছে ভেলোসিটি। ১৯ বলে ৭ রান করে ফিরেছেন অধিনায়ক মিথালি, পাওয়ারপ্লেতে ২৬ রানের পর প্রথম অর্ধে ৪৪ রান তুলেছিলেন তারা। ভেদা কৃষ্ণামূর্তি ট্র্যাকে রাখার চেষ্টা করেছেন তাদের, তবে যখনই মনে হচ্ছিল ছন্দ পেয়েছেন, তখনই পুনমের বলে এক্সট্রা-কাভারের ইনফিল্ড ক্লিয়ার করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন তিনি।
এরপরই সব গিয়ে ঠেকেছে সুষ্মা ও লুসের ওপর। ৩৫ বলে ৫১ রানের জুটি গড়েছেন তারা, সুপারনোভার বোলাররাও ধীরে ধীরে চাপে পড়েছেন। শেষ ওভারের ৫ম বলে পুনমের বলে লুসের এজ গেছে বাউন্ডারিতে, উল্লাসে মেতেছে ভেলোসিটি।
বৃহস্পতিবার নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে স্মৃতি মান্ধানার ট্রেইলব্লেজারসের মুখোমুখি হবে ভেলোসিটি। সেটি হবে জাহানারার সঙ্গে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সালমা খাতুনেরও লড়াই।