• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    কিক অফের আগেঃ দুই ফাইন্যালিস্টের ভিন্ন দৃশ্যপট

    কিক অফের আগেঃ দুই ফাইন্যালিস্টের ভিন্ন দৃশ্যপট    


    চ্যাম্পিয়নস লিগে শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগ খেলতে নামার আগে গত মৌসুমের দুই ফাইনালিস্টের সামনের দৃশ্যপটটা ভিন্ন। বার্সেলোনা যখন কোয়ার্টারে প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে নিজেদের জায়গায়টা, জুভেন্টাসের সামনে তখন বাদ পড়ার শঙ্কা।


    কাতালুনিয়ায় কথার ঝাঁঝ

    “অসম্ভবকে সম্ভব করতে চাই আমরা, আমরা জানি তারা কঠিন প্রতিপক্ষ। ওদের বিপক্ষে মনোসংযোগ ধরে রেখে ভাল জবাব দেয়াটা খুব জরুরী”                                      

    ওয়েঙ্গারের কথা শুনে মনে হতেই পারে এমিরেটসে বার্সেলোনার কাছে দুই গোলের হারও দমাতে পারছে না গানারদের। ওয়েঙ্গার যতই বলুক, গত ৩৭ ম্যাচে না হারা বার্সেলোনাকে ন্যু ক্যাম্পে হারাতে আর্সেনালকে একরকম অসাধ্য সাধনই করতে হবে। ন্যু ক্যাম্পে বার্সেলোনাকে কখনই হারাতে পারেনি আর্সেনাল, শেষ দু'দেখায় হজম করেছিল ৭ গোল। বার্সেলোনাকে শুধু হারালেই চলবে না, হারাতে হবে নূন্যতম দুই গোল বা এর বেশি ব্যবধানে।

     

    সপ্তাহের শুরুতে এফএ কাপ থেকে বাদ পড়ে ওয়েঙ্গার বলেছিলেন, মৌসুম শেষে আর্সেনালকে বিচার করতে। লেস্টার সিটি, টটেনহ্যামের ছায়ায় ঢাকা পড়ে লিগ শিরোপার দৌড়েও বেশ পিছিয়েই গেছে আর্সেনাল। তবে কি চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপাতেই ওয়েঙ্গারের চোখ?


    প্রথম লেগে মেসির দুই গোলে বার্সেলোনার জয়ের পর অনেকেই দেখে ফেলেছেন ম্যাচের ভাগ্য। এই খেলা নিয়ে তাই তেমন উন্মাদনা না থাকলেও প্রেস কনফারেন্সে উত্তাপ ছড়াচ্ছেন ওয়েঙ্গার একাই!  

    চ্যাম্পিয়নস লিগের নক আউট পর্বে গত ৩ অ্যাওয়ে ম্যাচে অবশ্য অপরাজিত আর্সেনাল। বার্সেলোনা বধ করতে ওয়েঙ্গারকে ভরসা রাখতে হচ্ছে ন্যু ক্যাম্পের সাবেক এক খেলোয়াড়ের ওপরেই। চ্যাম্পিয়নস লিগে এই মৌসুমে আর্সেনালের ভরসার প্রতীক হয়ে আছেন সানচেজ। চ্যাম্পিয়নস লিগে আর্সেনালের করা গোলের ৫৮% গোলেই অবদান আছে সাবেক এই বার্সেলোনা খেলোয়াড়ের; ৩ গোলের পাশাপাশি ৪টি অ্যাসিস্টও আছে চিলির এই উইঙ্গারের।

    আর্সেনালকে কোয়ার্টারে তোলার দায়িত্ব তো আছেই, সেই সাথে নিজের পুরোনো ঘরে আরও একবার নিজেকে প্রমাণ করার একটা চাপও কি অনুভব করছেন না সানচেজ? “সানচেজ বিশ্বমানের খেলোয়াড়, কিন্তু বার্সেলোনার খেলার ধাঁচের সাথে ও ঠিক মানানসই ছিল না”- দানি আলভেজের এমন মন্তব্যের পর তো নু ক্যাম্পে গোল করতে মুখিয়েই থাকার কথা সানচেজের!       

    তবে বাস্তবতা হল এই মৌসুম মেসি-সুয়ারেজ-নেইমারের যে দৌরাত্ম্য, তাতে এই বার্সেলোনার বিপক্ষে কতোখানি প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে আর্সেনাল সেটাই বরং এই ম্যাচে হার-জিতের চেয়ে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে।  


     

    জুভেন্টাসের বাধা পাহাড় সমান

    তুরিনে প্রথম লেগে ৫৫ মিনিটে দুই গোল হজম করে অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল জুভেন্টাসের বাদ পড়াটা। পরের ২০ মিনিটে দুই গোল শোধ দিয়ে অবশ্য জুভেন্টাস নিজেদের দিকে ম্যাচটা কিছুটা ঘুরিয়ে নেয়। তবু ঘরের মাঠে ওই দুই গোল খাওয়ার ক্ষতটা কাটিয়ে ওঠা যায়নি।

    ওই ম্যাচে জুভেন্টাসের হয়ে প্রথম গোলটি শোধ দেন দিবালা। মৌসুম শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে জুভেন্টাসের ফিরে আসার গল্পটা পুরোনো হয়ে গেছে এরই মধ্যে। জুভেন্টাসের সেই প্রত্যাবর্তনের সবচেয়ে বড় নায়কও দিবালাই। অ্যালেয়াঞ্জ অ্যারিনায় বায়ার্নের বিপক্ষে দ্বিতীয় লেগে জুভেন্টাস আবার দলে পাচ্ছে না আর্জেন্টাইন এই স্ট্রাইকারকে। শুধু দিবালাই নন, বায়ার্নের বিপক্ষের বাঁচা-মরার লড়াইয়ে জুভেন্টাস দলে পাচ্ছে না ক্লদিও মার্কিসিওকেও।


    অ্যালেগ্রির কপালে যখন চিন্তার ভাঁজ, ঠিক বিপরীত চিত্র মিউনিখে। দলে তেমন কোন ইনজুরির সমস্যা নেই। সাথে মুলার, লেভান্ডফস্কিরা আছেন দারুন ছন্দে। রেকর্ডও কথা বলছে বায়ার্ন মিউনিখের হয়েই। চ্যাম্পিয়নস লিগে শেষ ৯ ম্যাচে ঘরের মাঠে বায়ার্নকে হারাতে পারেনি কেউই। ঐ নয় ম্যাচে ৩৬ গোল করার পাশাপাশি বায়ার্নের জালে বল গেছে মাত্র ৪ বার। ঘরের মাঠে বায়ার্নের শক্তিমত্তা প্রমাণের জন্য পরিসংখ্যান গুলোই যথেষ্ট।  

    বায়ার্ন স্বস্তিতে থাকলেও পেপ গার্দিওলা কিন্তু ঠিকই চাপটা টের পাচ্ছেন! বায়ার্নের হয়ে গার্দিওলার শেষ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফিটা যেন বায়ার্ন মিউনিখ সমর্থকদের দাবি হয়েই দাঁড়িয়েছে। মাত্র ক’দিন আগেই ম্যানচেস্টার সিটির সাথে নতুন চুক্তি করা এই ম্যানেজারের অধীনে গত দু’বারই বায়ার্নের শিরোপা স্বপ্ন সমাধি দিতে হয়েছে সেমিফাইনালে। গার্দিওলা বায়ার্নে আসার আগে ইয়ুপ হেইঙ্কেস তাঁর শেষ মৌসুমে বায়ার্নকে জিতিয়ে গিয়েছিলেন চ্যাম্পিয়নস লিগ। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করা গার্দিওলার জন্য এক কঠিন চ্যালেঞ্জই। তবে আজকের পরীক্ষায় সহজে উতরে যাবার সম্ভাবনাই বেশি।