কিক অফের আগে:মরিয়া রিয়ালের সামনে বদলে যাওয়া অ্যাটলেটিকো
কবে কখন
এস্তাদিও আলফ্রেদো ডি স্টেফানো, শনিবার দিবাগত রাত দুইটা।
এক সপ্তাহ আগেই জিনেদিন জিদানের কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছল, ‘রিয়ালের কোচের পদ থেকে কি পদত্যাগ করবেন?’
কয়েক দিন পর সেই জিদানের কাছেই জানতে চাওয়া হলো, ‘স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের মতো রিয়ালে কি থাকার পরিকল্পনা আছে?’
জীবনটা আসলে এমনই। জিদান সেটা বোধ হয় সবচেয়ে ভালোভাবে টের পাচ্ছেন। আজ তাকে রাজার আসনে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে তো কাল নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে মাটিতে। প্রথম দুইটিও প্রশ্নের উত্তরেই জিদান না বলেছেন। তবে আজকের ম্যাচের পর কেউ কেউ প্রথম প্রশ্নটা করেও ফেলতে পারেন। রিয়ালের জন্য আজকের ডার্বির গুরুত্ব অনেকটা যে তেমনই।
ধারে ভারে অ্যাটলেটিকোর সাথে নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের তফাতটা অনেক। রিয়াল যেখানে মাদ্রিদের তো বটেই, ইউরোপেরই সেরা ক্লাবগুলোর একটি; সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাটলেটিকো বরাবরই পাদপ্রদীপের অন্ধকারে। কিন্তু এই মৌসুমে পরিস্থিতিটা একেবারেই অন্যরকম। অ্যাটলেটিকো এবার শুরু করেছে স্বপ্নের মতো, প্রথম ১০ ম্যাচের মধ্যে জিতেছে আটটিতেই। এখন পর্যন্ত লিগে হারেনি কোনো ম্যাচে। ১৯৯৬ সালের পর এটা লিগে তাদের সবচেয়ে ভালো শুরু, সে বছর পর লিগে প্রথম ১০ ম্যাচে এই প্রথম তারা অপরাজিত। এমনকি সর্বশেষ ২০১৪ সালে যেবার বার্সা-রিয়ালের আধিপত্য ভেঙে লিগ জিতেছিল, সেবারও তারা এত ভালো শুরু করেনি।
দল হিসেবে অ্যাটলেটিকো যেভাবে খেলছে, সেটা সিমিওনেকে আরও বেশি তৃপ্তি দেবে। রক্ষণ নিয়ে খুব একটা সমস্যা তাদের কখনোই ছিল না, এবার তারা আক্রমণটা আরও বেশি গুছিয়েছে। মধ্যমাঠে কোকে-সল নিগেজ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, ইয়ানিক কারাসকো দ্বিতীয় দফায় বাঁ প্রান্তে আলো ছড়াচ্ছেন, আর নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করা মার্কোস লরেন্তে তো তুরুপের অন্যতম তাস। আক্রমণে জোয়াও ফেলিক্স এই মৌসুমে লা লিগার সম্ভবত সেরা খেলোয়াড়, আর সঙ্গে আছে লুইস সুয়ারেজের এক্স ফ্যাক্টর। ব্যাক আপ হিসেবে টমাস লেমার, আনহেল কোরেয়াও করছেন ভালো।
রিয়ালের সমস্যা এই ধারাবাহিকতায়। চোট আর কোভিডে জিদান তার ঠিক একাদশটাই পাচ্ছেন না। অধারাবাহিকতার জন্য এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকেই বাদ পড়ার দশা হয়েছিল তাদের। সেখান থেকে ফিরে এসেছে ঠিকই পরের পর্বে উঠেছে রিয়াল। তার আগে সেভিয়াকে তাদের মাটিতেও হারিয়ে এসেছে। তবে লিগে এখনো নিজেদের সেরা ফর্মের ধারেকাছে নেই। এর মধ্যেই এক ম্যাচ বেশি খেলে অ্যাটলেটিকোর চেয়ে পিছিয়ে ছয় পয়েন্ট, আজ হেরে গেলে সেটা হবে নয় পয়েন্ট। শিরোপা সম্ভাবনা তখন বড় একটা ধাক্কা খাবে।
তবে জিদানের দলের সাম্প্রতিক ডার্বি রেকর্ডটা ভালো-খারাপ মিশিয়ে। অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে লিগে সর্বশেষ আট ম্যাচ অপরাজিত রিয়াল। যদিও ঘরের মাঠে অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে সর্বশেষ সাত ম্যাচের একটি জিতেছে রিয়াল।
দলের খবর
জিদানের জন্য স্বস্তির খবর, চোট কাটিয়ে ফিরেছেন অধিনায়ক সার্জিও রামোস, বেনজেমাও আগের ম্যাচে পেয়েছেন জোড়া গোল। আজ নামতে পারেন রাইটব্যাক দানি কারভাহাল, অনুশীলন শুরু করেছেন মিডফিল্ডার ফ্রেদি ভালভের্দেও। ভাজকেজ আগের ম্যাচে দারুণ খেলেছেন, আজ তাকে হয়তো আক্রমণেও নামিয়ে দিতে পারেন জিদান।
সিমিওনের খুব বড় চোট সমস্যা নেই।
সম্ভাব্য একাদশ
রিয়াল: কোর্তোয়া, মেন্ডি, রামস, ভারান, কারভাহাল, মদ্রিচ, ক্রুস, কাসেমিরো, আসেন্সিও, বেনজেমা, ভিনিসিয়াস
অ্যাটলেটিকো: অবলাক, ফেলিপ, সাভিচ, ট্রিপিয়ের, হারমসো, কোকে, সল, কারাস্কো, মার্কোস লরেন্তে, সুয়ারেজ, ফেলিক্স
প্রেডিকশন
রিয়াল ১:১ অ্যাটলেটিকো