ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন খুলনার দাপুটে জয়, ঢাকার জয়ে সাইফের পর নায়ক অপু
জাতীয় ক্রিকেট লিগে ১ম স্তরে জয় দিয়ে মৌসুম শুরু করেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন খুলনা, ঢাকা। খুলনায় স্বাগতিকদের বিপক্ষে ফলো-অনে পড়ে শুধু ইনিংস পরাজয়টা আটকাটে পেরেছে সিলেট। বিকেএসপিতে ১ম ইনিংসের সংগ্রহের পর স্পিন-বিষে রংপুরকে আটকে দিয়েছে ঢাকা।
১ম স্তর, খুলনা (টস- সিলেট/ফিল্ডিং)
খুলনা ৩৭৫ (তুষার ৯৯, ইমরুল ৯০, রাহি ৩/৯৪, এবাদত ৩/৭৯) ও ৭৩/২ (ইমরান ৩৩*, রাজা ১/৫)
সিলেট ১৩৪ (এনামুল জুনিয়র ৩০, মিনহাজ ৪/৩১, টুটুল ৪/৩৪) ও (ফলোয়িং-অন) ৩০৮ (জাকির ১৪০, অমিত ৬৬, হালিম ৪/৬২, সোহেল ৩/৩৬)
খুলনা ৮ উইকেটে জয়ী
খুলনায় টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে স্বাগতিকদের প্রথম ইনিংসে ভাল একটা সংগ্রহ এনে দিয়েছিলেন তুষার ইমরান ও ইমরুল কায়েস। দুজনই পুড়েছেন অবশ্য সেঞ্চুরির আক্ষেপে। ১ রান দূরে থাকতে রান-আউট হয়েছিলেন তুষার, ১০ রান দূরে ইমরুল। সিলেটের পেস আক্রমণ জাতীয় লিগের অন্যতম রোমাঞ্চ এবার, ১ম ইনিংসে তিনজন মিলে নিয়েছিলেন ৭ উইকেট।
এরপর ডানহাতি পেসার মাসুম খান টুটুল ও বাঁহাতি স্পিনার মিনহাজ রহমানের তোপে পড়েছিল সিলেট। আব্দুর রাজ্জাক নেই, কিন্তু খুলনা ঠিকই ফলো-অন করিয়েছে সিলেটকে। অবশ্য ফলো-অনে পড়েও দ্রুত দুই ওপেনারকে হারালেও সিলেটকে এরপর টেনেছেন জাকির হাসান ও অমিত হাসান। জাকির করেছেন ক্যারিয়ারের ৬ষ্ঠ প্রথম শ্রেণির সেঞ্চুরি। ৬৬ রান করে অমিত ফিরলেও জাকির ছিলেন আরও কিছুক্ষণ।
তৃতীয় দিন ১১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি, শেষ পর্যন্ত ১৪০ রানে আউট হওয়ার আগে ইনিংস পরাজয় এড়ানো নিশ্চিত করেছেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিংয়ে খুলনার সেরা পারফরমার এবার পেসার আব্দুল হালিম ও চায়নাম্যান মইনুল ইসলাম সোহেল।
৬৮ রানের লক্ষ্য এরপর খুলনা পেরিয়ে গেছে ৯.৩ ওভারেই, উইকেটকিপার ইমরান উজ জামান অপরাজিত ছিলেন ২৭ বলে ৩৩ রানে।
১ম স্তর, বিকেএসপি (টস- ঢাকা/ব্যাটিং)
ঢাকা ৩৬৫ (সাইফ ১২৭, নাদিফ ৬৯, বাবু ৪/৪৬, মাহমুদুল ২/৭৮) ও ১২৮ (সানি ৪০, নাসির ৪/২১, শুভ ৩/২৬)
রংপুর ২৩০ (নাসির ১১৫, অপু ৪/৮৯,শাকিল ২/১২, সুমন ২/৩১) ও ১৮৩ (নাঈম ৬১, অপু ৬/৬৪, তাইবুর ২/২১)
ঢাকা ৮০ রানে জয়ী
একদিকে নাসির হোসেনের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স, অন্যদিকে সাইফ হাসানের সেঞ্চুরি ও নাজমুল অপুর ১০ উইকেট- বিকেএসপির ম্যাচে শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি হেসেছেন সাইফ-অপুরাই।
সাইফের ২৩৩ বলে ১২৭ রানের সঙ্গে নাদিফ চৌধুরির ফিফটিতে প্রথম ইনিংসে ৩৬৫ রান তুলেছিল ঢাকা, দুজন মিলে ৬ষ্ঠ উইকেটে তুলেছিলেন ১৩৭ রান। আরাফাত সানি জুনিয়র ও সুমন খানের ৯ম উইকেটে তোলা ৬৩ রানের জুটিও ভুগিয়েছে রংপুরকে। ১০৬.৩ ওভারের ইনিংসেই ৯ জন বোলার ব্যবহার করেছিল রংপুর।
জবাবে নাসির হোসেনের ১১৫ রানের ইনিংসের পরও ২৩০ রানেই আটকে গিয়েছে রংপুর, বাকিদের মাঝে ২৭ রানের বেশি করতে পারেননি কেউ। ২৫২ বল খেলে ১১ চার ও ৪ ছয়ের ইনিংস ছিল নাসিরের। ঢাকার দুই পেসার সালাউদ্দিন শাকিল ও সুমন খানের আঁটসাঁট বোলিংয়ের পর অপুর স্পিন-বিষে নীল হয়েছে রংপুর, প্রথম দুজন দুটি করে, পরেরজন নিয়েছেন ৪ উইকেট।
ব্যাটিংয়ের পর এরপর বোলিংয়েও ঝলক দেখিয়েছেন নাসির, সোহরাওয়ার্দি শুভ ও মাহমুদুল হাসান মিলে ৫ উইকেট নেওয়ার পর তার ৪ উইকেটে ১২৮ রানেই গুটিয়ে গেছে ঢাকা। তবে প্রথম ইনিংসের বড় লিডে ২৬৪ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছিল তারা।
ঢাকার প্রায় অল-আউট স্পিন-আক্রমণে এরপর বেসামাল হয়ে পড়া রংপুরকে একটু আশা জুগিয়েছিল নাঈমের পাঁচে নেমে করা ১৯৪ বলে ৬১ রানের ইনিংস। তবে যেটি দরকার ছিল, সে বড় জুটি পায়নি রংপুর। নাঈমকে রেখেই ফিরে গেছেন ৫ জন।
শেষ ২ উইকেট নিয়ে এক সেশন পার করে গ্রেট-এসকেপ মিরাকল করতে হতো রংপুরকে, কিন্তু বিরতির পরপরই সে আশা শেষ হয়ে গেছে তাইবুরের বলে নাঈম আউট হওয়াতে। এরপর রিশাদের উইকেটে ইনিংসে ৬ষ্ঠ শিকার হয়েছে অপুর, হয়েছে ম্যাচে দশ উইকেটও। ক্যারিয়ারে এই প্রথম ম্যাচে দশ উইকেট পেলেন তিনি।