মুগ্ধতে সহজ জয় রংপুরের, ড্রয়ে দুই টেবিলের শীর্ষে ঢাকা ও মেট্রো
প্রথম স্তর, দ্বিতীয় রাউন্ড, রংপুর (টস- খুলনা/ব্যাটিং)
খুলনা ২২১ (তুষার ১১৬, মুগ্ধ ৬/৬৪) ও ২৫৯ (অমিত ৮৯, জিয়াউর ৬৪, মুগ্ধ ৬/৬৭)
রংপুর ৩৬৪ (আরিফুল ৯৭, নাসির ৬৬, মাসুম ৪/৭৮) ও ১২০/৩ (নাসির ৪৮*, জাহিদ ৩৭)
রংপুর ৭ উইকেটে জয়ী
মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধর ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ের পর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন খুলনাকে হারিয়েছে রংপুর। ১৩১ রানে ১২ উইকেট নিয়েছেন মুগ্ধ, বাংলাদেশের মাটিতে প্রথম শ্রেণিতে যা কোনো পেসারের তৃতীয় সেরা ম্যাচ ফিগার।
রংপুরে টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়া খুলনার হয়ে আরও একটি সেঞ্চুরি করেছেন তুষার ইমরান, বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের কিংবদন্তীর এটি ৩২তম সেঞ্চুরি। তবে তুষারকে সে অর্থে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউ। তুষারসহ প্রথম চারজনের পর খুলনার শেষ দুজনকে ফিরিয়েছেন মুগ্ধ।
১ম ইনিংসে ২৩০ রানেই ৬ উইকেট হারিয়েছিল রংপুর, তবে ৭ম উইকেটে আরিফুল হকের সঙ্গে ধীমান ঘোষের ৮৩ রানের জুটি অনেকখানি এগিয়ে দিয়েছিল তাদের। আরিফুল সেঞ্চুরি মিস করেছেন ৩ রানের জন্য, ধীমান করেছেন ৪৩। এর আগে নাসির করেছিলেন ৬৬ রান।
১৪৩ রানের লিডের বোঝা নিয়ে নামা খুলনা প্রথম ইনিংসের মতোই এবারও প্রথম বলেই হারিয়েছে উইকেট- ম্যাচে রবিউল ইসলাম রবিকে দ্বিতীয় গোল্ডেন ডাক উপহার দিয়েছেন মুগ্ধ। আরেক ওপেনার অমিত মজুমদার আউট হয়েছেন ৭ম ব্যাটসম্যান হিসেবে, ৮৯ রান করে। এরপর সাতে নামা জিয়াউর রহমান করেছেন ৭০ বলে ৬৪, তবে টপ অর্ডারের অনেকখানির পর মিডল অর্ডার ধরে দিয়ে মুগ্ধ বেশিদূর এগুতে দেননি তাদের।
১১৭ রানের বিলো-পারের লক্ষ্য দিয়েছিল তারা রংপুরকে, শেষদিনে ১০ উইকেট নিয়ে ১০১ রান প্রয়োজন ছিল তাদের। নাসির হোসেনের অপরাজিত ৪৮ রানে ভর করে সে লক্ষ্য সহজেই পেরিয়েছে তারা।
১ম স্তর, কক্সবাজার (টস- ঢাকা/ফিল্ডিং)
সিলেট ৩৭০ (জাকির ১৫৯, জাকের ৬৭, আসাদুল্লা ৬৭, শুভাগত ৪/৮৬) ও ২১৯ (আসাদুল্লা ৮২, জাকির ৩৩, সুমন ২/৩৬, শুভাগত ২/৩৯)
ঢাকা ২৮০ (শুভাগত ১১৪, সাইফ ৪২, রাহাতুল ফেরদৌস ৭/৭৫) ও ১৪৭/৫ (সাইফ ৬৪, এনামুল ৩/৩১)
ম্যাচ ড্র
জাকির হোসেনের বড় সেঞ্চুরি, রাহাতুল ফেরদৌসের ইনিংসে ৭ উইকেটের পারফরম্যান্সের পর ঢাকাকে বেশ চাপে ফেলেছিল সিলেট, তবে অলরাউন্ডার শুভাগত হোমকে টপকাতে পারেনি তারা শেষ পর্যন্ত। সেঞ্চুরির সংগে ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়েছেন শুভাগত, দ্বিতীয় ইনিংসেও খেলেছেন গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। কক্সবাজারে ড্র হয়েছে ম্যাচ।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা সিলেট ৩৭০ পর্যন্ত গিয়েছিল জাকিরের টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির সঙ্গে আসাদুল্লা আল গালিব ও জাকের আলির জোড়া ফিফটিতে। ২২৮ বলে ১৭ চার ও ২ ছয়ে জাকির করেছেন ১৫৯। তার সঙ্গে জাকের, এরপর আরও দুই উইকেট নিয়েছিলেন শুভাগত।
ঢাকা এরপর ৯৩ রানেই হারিয়েছিল ৫ উইকেট, সেখান থেকে নাদিফ চৌধুরি, আরাফাত সানি জুনিয়রের সঙ্গে যথাক্রমে ৭৭ ও ১০০ রানের জুটি গড়েছেন শুভাগত, ১৩৩ বলে ১৩ চার ও ২ ছয়ে নিজে করেছেন ১১৪ রান। ঢাকাকে শুরুতে চাপে ফেলেছিলেন সিলেটের দুই পেসার রুয়েল মিয়া ও তানজিম হাসান সাকিব, এরপর বাঁঁহাতি অর্থোডক্স রাহাতুল নিয়েছেন ৭ উইকেট।
৯০ রানের লিড পাওয়া সিলেট এরপর যোগ করেছেন আরও ২১৯ রান, প্রথম ইনিংসের মতো এবারও ফিফটি করা আসাদুল্লার ৮২ রানের সঙ্গে টেইল-এন্ডে সাকিবের ৩৩ রানে ভর করে। এরপর লাঞ্চের আগেই ঢাকার এক উইকেট পেয়েছিল তারা, তবে পরের দুই সেশনে মিলেছে আর ৪টি। শেষ সেশনে প্রয়োজন ছিল ৬ উইকেট, তবে এবারও শুভাগত-সানিতে আটকে গেছে সিলেট, দুজনের জুটি টিকে ছিল ২০ ওভারেরও বেশি।
এ ড্রয়ের পর দুই রাউন্ড শেষে ১ম স্তরের শীর্ষে ঢাকা।
২য় স্তর, কক্সবাজার (টস- ঢাকা মেট্রো/ফিল্ডিং)
চট্টগ্রাম ৪০২/৮ ডিক্লে. (পিনাক ১৫৯, শাহাদাত ৫৩, ইয়াসির ৪৯, সানি ৩/১২০, শহিদুল ২/৭৮) ও ২৩৪/৬ ডিক্লে. (জয় ৭৮, সাদিকুর ৪৭, শরিফুল্লাহ ২/৯৪)
ঢাকা মেট্রো ২৬৭ (জাহিদুজ্জামান ৭১, শামসুর ৬৮, মুরাদ ৫/৭২, রানা ২/৭৪) ও ১৪৮/২ (জাহিদুজ্জামান ৬১*, আজমির ৪৭)
ম্যাচ ড্র
ড্র হয়েছে কক্সবাজারের আরেক ম্যাচও। প্রথম ইনিংসে চট্টগ্রামের চেয়ে বেশ পিছিয়ে থাকলেও ঢাকা মেট্রো ঘুরে দাঁড়িয়েছে ঠিকই। শেষদিন দ্বিতীয় ইনিংস লাঞ্চের আগে ডিক্লেয়ার করেনি চট্টগ্রাম, শেষ দুই সেশনে অঘটন ঘটতে দেয়নি মেট্রো। এ ড্রয়ের পর দ্বিতীয় স্তরের শীর্ষে মেট্রো, চট্টগ্রাম দুইয়ে।
টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়া মেট্রো প্রথম ইনিংসে চাপা পড়েছিল পিনাক ঘোষের বড় সেঞ্চুরিতে, ৩০২ বলে এই বাঁহাতি করেছেন ১৫৯ রান। সঙ্গে শাহাদাত হোসেন দিপুর সেঞ্চুরি, ইয়াসির রাব্বির ৪৯ রানে ৪০০ পার করে ইনিংস ঘোষণা করেছিল চট্টগ্রাম। জবাবে জাহিদুজ্জামান ও শামসুর রহমানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি ভাল ভিত এনে দিলেও হাসান মুরাদের তোপে মেট্রো গুটিয়ে গিয়েছিল ২৬৭ রানেই। ৭২ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন এই বাঁহাতি স্পিনার।
চট্টগ্রামের পরের ইনিংসে ফিফটি পেয়েছেন মাহমুদুল হাসান জয়, সঙ্গে সাদিকুরের ৪৭ রানে ভর করে নিরাপদে ৩৬৯ রানের লিড নেওয়ার পর ইনিংস ঘোষণা করেছে তারা। শেষদিকে অবশ্য বেশ দ্রুত রান তুলেছিল চট্টগ্রাম, শেষ ১৫ ওভারে এসেছে ১২২ রান।
তবে জাহিদুজ্জামানের ম্যাচে দ্বিতীয় ফিফটি, সঙ্গে আজমির আহমেদের ৪৭ রানে ভর করে ড্র নিশ্চিত করেছে চট্টগ্রাম।
২য় স্তরের অন্য ম্যাচে চার সেশনেই জিতেছে রাজশাহী, যেখানে রেকর্ড গড়ে হেরেছে বরিশাল।