• ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টি ২০২১
  • " />

     

    প্রিমিয়ার লিগে ফিরেই ম্যাচসেরা সাকিব, ঝড় তামিমের

    প্রিমিয়ার লিগে ফিরেই ম্যাচসেরা সাকিব, ঝড় তামিমের    

    মোহামেডান-শাইনপুকুর, বিকেএসপি 
    শাইনপুকুর ১২৫/৬, ২০ ওভার (তানজিদ ৩০, রবিউল ২৫, অঙ্কন ২০, সুমন ২৩*, সাকিব ২/২৯, ইয়াসিন ২/২৪, আবু জায়েদ ১/১৬)
    মোহামেডান ১২৯/৭, ১৯.৫ ওভার (ইমন ৩৯, সাকিব ২৯, শামসুর ২৪, সুমন ২/২৭, তানভির ১/২০)
    মোহামেডান ৩ উইকেটে জয়ী 


    প্রিমিয়ার লিগে ফেরার ম্যাচে ব্যাটিং-বোলিংয়ে উজ্জ্বল ছিলেন সাকিব আল হাসান, তবে শেষের আগের বলে ছয় মেরে মোহামেডানের শেষের নায়ক বনে গেছেন আবু হায়দার রনি। ১২৬ রানতাড়ায় শেষ ২৪ বলে মোহামেডানের প্রয়োজন ছিল ৭ উইকেটে ১৪ রান, এরপরই হুট করে ৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল তারা। ১৯তম ওভারে ২ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছিলেন সুমন খান, শেষ ওভারের প্রথম ৪ বলে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরি দিয়েছিলেন ৩ রান। তবে ৫ম বলে রনি মেরেছেন ছয়, জিতেছে মোহামেডান। বোলিংয়ে ২৯ রানে ২ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাটিংয়ে ২২ বলে ২৯ রান করে ম্যাচসেরা হয়েছেন সাকিবই। 

    বিকেএসপিতে আগের দুই ম্যাচ ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে, অন্য মাঠের ম্যাচও শুরু হয়েছিল দেরিতে। তবে মোহামেডান-শাইনপুকুর শুরু হয়েছিল ঠিক সময়েই। সাকিবসহ মোহামেডান বোলাররা সেখানে শাইনপুকুরকে আটকে রেখেছিলেন বেশ ভালভাবেই। সাকিব বোলিং ওপেন করেছেন, শেষ ওভারে ১৫ রান দেওয়ার আগে তার বোলিং ফিগার ছিল এমন- ৩-০-১৪-২।



    অবশ্য সুমন খানের শেষদিকের ১১ বলে ২৩ রানের ক্যামিওতেই ১২৫ পর্যন্ত গিয়েছিল শাইনপুকুর। এছাড়া ওপরের দিকে কেউই সেভাবে খেলতে পারেননি, সমানসংখ্যক বলে ৩০ রান করেছিলেন তানজিদ হাসান তামিম, রবিউল ইসলাম ২১ বলে ২৫ আর ১৭ বলে ২০ করেছিলেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। মোহামেডানের হয়ে আবু জায়েদ ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১৬ রান, নিয়েছেন ১ উইকেট। এছাড়া ২৪ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন ইয়াসিন আরাফাত, ২৩ রানে ১টি নিয়েছেন আসিফ হাসান। 

    রানতাড়ায় প্রথম ওভারেই অভিষেক মিত্রকে হারিয়ে বসে মোহামেডান, দ্বিতীয় উইকেটে পারভেজ হোসেন ইমন ও শামসুর রহমান এরপর যোগ করেছেন ৫৪ রান। ৩৩ বলে ৩৯ রান করে ইমন আউট হলে চারে এসেছিলেন সাকিব, ২৯ রানের ইনিংসে যিনি মেরেছেন ২টি চার ও একটি ছয়। প্রথমে শামসুরের সঙ্গে ২৯ এবং পরে নাদিফ চৌধুরির সঙ্গে ২৮ রানের জুটির অংশ ছিলেন সাকিব। তবে  তানভিরের বলে তানজিদের হাতে ক্যাচ দিয়ে তার ফেরার পরই শুরু হয় বিপত্তি। 

    সাকিবের পর ইরফান শুক্কুর, নাদিফ ও শুভাগত দ্রুত ফিরলে উত্তেজনা ছড়ায় ম্যাচে, তবে শাইনপুকুরের সে উত্তেজনায় জল ঢেলেছেন শেষে গিয়ে রনি। ব্যাটিংয়ের মতো বোলিংয়েও শেষদিকে শাইনপুকুরকে লাইফলাইন দিয়েছিলেন সুমন, শেষ পর্যন্ত কাজে আসেনি যা। 

    *****

    গাজী গ্রুপ ৯১/৫, ১২ (১২) ওভার
    প্রাইম ব্যাংক ৯২/৩, ৯.২ (১২) ওভার
    প্রাইম ব্যাংক ডিএল পদ্ধতিতে ৭ উইকেটে জয়ী 


    মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসানের পর ম্যাচজয়ী পারফরম্যান্স এসেছে তামিম ইকবালের কাছ থেকেও। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে অধিনায়ক তামিমের ২২ বলে ৪৬ রানের ঝড়ো ইনিংসে গাজী গ্রুপকে সহজেই হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংক। 

    বিকেএসপিতে অন্য মাঠে খেলা নির্ধারিত সময়ে শুরু হলেও তিন নম্বর মাঠে শুরু হয়েছে বেশ দেরিতে। ১২ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে গাজী গ্রুপ তুলেছিল ৯১ রান। ওপেনিংয়ে নেমে ১২ বলে ১৬ করেছিলেন মাহাদি হাসান, সর্বোচ্চ ২২ বলে ২৬ জাকির হাসানের। শেষদিকে ৪ বলে ১৩ রানের ক্যামিও খেলেছিলেন মুমিনুল হক। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ করেছেন ৭ বলে ৫ রান। প্রাইম ব্যাংকের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান ও নাঈম হাসান, একটি নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম।

    রানতাড়ায় প্রথম ওভারের শেষ বলে নাসুম আহমেদকে ছয়ে শুরু করেছিলেন তামিম, অন্যদিকে এনামুল হক বিজয় ফিরলেও থামেননি তিনি। ১৯ বলে ২৫ করা রনি তালুকদারের সঙ্গে ৬৩ রানের জুটি গড়েছেন ৪৬ রানের ইনিংসে ২টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ৫টি ছয়, মানে ৪২ রানই তিনি করেছেন বাউন্ডারি থেকে। মাহাদির বলে ক্যাচ দিয়ে তিনি ফিরলেও ১৬ বল বাকি থাকতেই জিতেছে প্রাইম ব্যাংক। 

    *****

    শেখ জামাল ১৬৬/৬, ২০ ওভার 
    খেলাঘর ১৪৪/৮, ২০ ওভার
    শেখ জামাল ২২ রানে জয়ী


    ব্যাটসম্যানদের সমন্বিত পারফরম্যান্সের পর ইলিয়াস সানির কিপটে বোলিংয়ে খেলাঘরকে আটকে দিয়েছে শেখ জামাল। সৈকত আলি ও মোহাম্মদ আশরাফুলের ৭৩ রানের ওপেনিং জুটির পর মিডল অর্ডারের অবদান, আর শেষে মোহাম্মদ এনামুলের ৫ বলে ২০ রানের ঝড়ে ১৬৬ পর্যন্ত গিয়েছিল শেখ জামাল। খেলাঘর থেমেছে ১৪৪ রানেই। 

    সৈকত ও আশরাফুল- দুজনই করেছেন ৩৮ রান, অবশ্য সৈকতের ২৬ বলের বিপরীতে আশরাফুল খেলেছেন ৩২ বল। এরপর দ্রুত দুই উইকেট হারালেও অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের ১৭ বলে ২২, জিয়াউর রহমানের ১৩ বলে ১৫, তানভীর হায়দারের ১৬ বলে ১৭, সোহরাওয়ার্দি শুভর ৮ বলে ১২-এর সঙ্গে এনামুলের ওই ক্যামিও টেনেছিল শেখ জামালকে। খেলাঘরের ইরফান হোসেন ৪ ওভারে গুণেছেন ৫৩ রান, তবে খালেদ আহমেদ ২০ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট, রিশাদ হোসেন ১টি নিয়েছেন ২৫ রানে। 

    রানতাড়ায় ইমতিয়াজ হোসেন ও সাদিকুর রহমান শুরুটা মোটামুটি করেছিলেন, তবে মাঝের ওভারগুলিতে খেই হারিয়েছে খেলাঘর। পাঁচে নেমে মেহেদি হাসান মিরাজের ২০ বলে ১৪ রানের ইনিংস সহায়তা করেনি তাদের মোটেও। মাসুম এরপর ১২ বলে ২২, আর ইরফান ৪ বলে ১০ করেছিলেন, তবে যথেষ্ট হয়নি সেসব। 

    ৭ম ওভারে বোলিং করতে এসেই জোড়া উইকেট নিয়েছিলেন সানি, এরপর নিয়েছেন আরও একটি। শেষ পর্যন্ত ৪ ওভার বোলিং করে দিয়েছেন মাত্র ১৮ রান, যে পারফরম্যান্স ম্যাচসেরাও করেছে তাকে। এছাড়া দুটি করে উইকেট নিয়েছেন আব্দুল হালিম ও সালাউদ্দিন শাকিল।