• ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টি ২০২১
  • " />

     

    মুশফিক-মোসাদ্দেকে ম্লান সৌম্য, ব্রাদার্সের নায়ক রাহাতুল, সহজ জয় প্রাইম ব্যাংকের

    মুশফিক-মোসাদ্দেকে ম্লান সৌম্য, ব্রাদার্সের নায়ক রাহাতুল, সহজ জয় প্রাইম ব্যাংকের    

    গাজি গ্রুপ-আবাহনী, মিরপুর
    গাজি গ্রুপ চট্টগ্রাম ১৫০/৮, ২০ ওভার (সৌম্য ৬৭, মাহাদি ৪৩, বিপ্লব ২/১৯, শহিদুল ২/৪১, সাইফউদ্দিন ১/২৪, তানজিম ১/৩৩)
    আবাহনী লিমিটেড ১৫৩/৩, ১৮ ওভার (মুশফিক ৫৩*, মোসাদ্দেক ৫০*, মুনিম ২৮, মাহাদি ১/১২, সনজিত ১/৩২, নাসুম ১/৩২) 
    আবাহনী ৭ উইকেটে জয়ী 


    আগের ম্যাচে আগেভাগেই ফিরেছিলেন মুশফিক, রানতাড়ায় হোঁচট খেয়েছিল আবাহনী। এবার মুশফিক থাকলেন শেষ পর্যন্ত, তার সঙ্গে মোসাদ্দেক হোসেনের জোড়া ফিফটিতে গাজি গ্রুপের ১৫০ আবাহনী পেরিয়ে গেল শেষ পর্যন্ত অনায়াসেই। অবশ্য শুরুতে দারুণ একটা ভিত পাওয়ার পরও গাজি গ্রুপ বেশিদূর এগুতে পারেনি অসময়ে বেশ কিছু উইকেট হারানোর ফলে। 

    টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে গাজির শুরুটা দারুণ করেছিলেন সৌম্য সরকার ও এদিনও ওপেনিংয়ে আসা মাহাদি হাসান। ৯ম ওভারের শেষ বলে আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের প্রথম শিকার হওয়ার আগে ৩২ বলে ৪৩ রান করেছিলেন মাহাদি, ওপেনিং জুটিতেই উঠেছিল ৭৮ রান। মুমিনুল হককে নিয়ে সৌম্য যোগ করেছিলেন ২৪ রান, এরপর ইয়াসির আলি রাব্বির সঙ্গে আরও ২৭, তবে এরপরই খেই হারানো শুরু তাদের। বিপ্লবের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে রাব্বি ভুগেছেন, ৯ রান করেছেন ১৬ বল খেলে। ৬ রানের ব্যবধানে সে সময় ৩ উইকেট হারিয়েছে গাজি। সৌম্য এক বল বাকি থাকতে ফিরেছেন ৫০ বলে ৬৭ করে, ৬টি চারের সঙ্গে যিনি মেরেছিলেন দুটি ছয়।



    রানতাড়ায় প্রথমভাগে আবাহনীর ওপর বেশ ভাল চাপই তৈরি করেছিল গাজি গ্রুপ। তিন স্পিনার মাহাদি, নাসুম আহমেদ, সনজিত সাহা উইকেট পেয়েছেন শুরুতেই, প্রথম ৯ ওভারে আবাহনীর স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ৫৩। তবে মুশফিক নামার পর থেকেই নিয়েছেন নিয়ন্ত্রণ, এবার বোলিংয়েও খেই হারানো শুরু করেছে গাজি। শুরুতে মোসাদ্দেক মুশফিককে সঙ্গ দেওয়ার কাজই করছিলেন, এরপর তিনি খোলস ছেড়ে বেরিয়েছেন। ১৮তম ওভারে সনজিতকে ছয় ও সিঙ্গেলে ফিফটি করেছেন প্রথমে মোসাদ্দেক, এরপর চার মেরে করেছেন মুশফিক। আবাহনীর জয়ও নিশ্চিত হয়েছে সে ওভারেই। 

    ****

    শেখ জামাল-প্রাইম ব্যাংক, বিকেএসপি-৪
    শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ১৩৩/৯, ২০ ওভার (সোহরাওয়ার্দি ৩৪, সৈকত ২৮, আশরাফুল ১৬, রুবেল ২/২৮, মোস্তাফিজুর ২/৩১, অলক ১/১০, শরিফুল ১/১৯, নাঈম ১/২০, নাহিদুল ১/২২)
    প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ১৩৪/৩, ১৯.৩ ওভার (রনি ৪৮, এনামুল ৩৫, তামিম ২৩, মিঠুন ২১*, শাকিল ২/১২, তানভীর ১/১৩)
    প্রাইম ব্যাংক ৭ উইকেটে জয়ী 


    বিকেএসপিতে শেখ জামালকে হারানোর মূল কাজটা করে রেখেছিলেন প্রাইম ব্যাংক বোলাররাই, বাকিটা সেরেছেন রনি তালুকদার, মোহাম্মদ মিঠুনরা। ছয় বোলারের কেউই ৮-এর ওপর রান দেননি ওভারপ্রতি, উইকেট পেয়েছেন সবাই, শেখ জামালও আটকে গিয়েছিল ১৩৩ রানেই। এরপর রনির ৩৪ বলে ৪৮ রানের পর অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় ও মোহাম্মদ মিঠুনের যথাক্রমে ৩৫ ও ২১ রানের ইনিংসে সহজ জয় নিশ্চিত হয়েছে প্রাইম ব্যাংকের। 

    আগে ব্যাটিং করা জামালকে মোটামুটি একটা শুরু এনে দিয়েছিলেন সৈকত আলি ও মোহাম্মদ আশরাফুল। তবে মাঝের ওভারগুলিতে দ্রুত উইকেট হারানোর পর স্কোর আর বড় হয়নি তাদের। সাতে নামা সোহরাওয়ার্দি শুভর ৩০ বলে ৩৪ রানের ইনিংস না হলে আরও আগেই বরং গুটিয়ে যেতে পারত তারা। 

    লক্ষ্য তেমন বড় নয়, যেটিও ছিল, সেটিকেও নাগালের মধ্য সহজেই এনেছে প্রাইম ব্যাংকের ওপেনিং জুটি। ১০ম ওভারে গিয়ে প্রথম ব্রেকথ্রু পেয়েছে শেখ জামাল, যখন তামিম ফিরেছেন ২৭ বলে ২৩ রান করে সালাউদ্দিন শাকিলের বলে ক্যাচ দিয়ে। একটু পর শাকিলের দ্বিতীয় শিকার হয়েছেন রনিও। তবে এনামুলের সঙ্গে মিঠুনের ৫৩ রানের জুটি বিপদ ঘটতে দেয়নি কোনও। 

    এ জয়ের পর আবাহনীর মতো প্রাইম ব্যাংকেরও এখন ৮ পয়েন্ট, রানরেটের ব্যবধানে যেখানে আবাহনী দুইয়ে, প্রাইম ব্যাংক ঠিক তার পরে। আর দিনের প্রথম ভাগের খেলায় আরেকটি জয়ে টেবিলের শীর্ষেই আছে প্রাইম দোলেশ্বর। 

    ****

    ব্রাদার্স-পারটেক্স, বিকেএসপি-৩
    ব্রাদার্স ইউনিয়ন ১৪৭/৮, ২০ ওভার (রাহাতুল ৫৪, নাইম জুনিয়র ৩৪, তাসামুল ২/১৮, শাহাদাত ২/২৬, জয়নুল ২/৩২)
    পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব ১১৪ অল-আউট, ১৯.৫ ওভার (ধীমান ৪৪, রাহাতুল ৪/৩৪, সাকলাইন ২/১৩, সুজন ২/১৭, হাবিবুর ১/৭, আলাউদ্দিন ১/১৭)
    ব্রাদার্স ৩৩ রানে জয়ী 


    প্রতিপক্ষ বদলাচ্ছে, শুধু বদলাচ্ছে না পারটেক্সের ভাগ্য। এ নিয়ে টানা ৫ ম্যাচ হারের পর লিগে এখন পর্যন্ত জয়শূন্যই থাকলো তারা। এবার রাহাতুল ফেরদৌসের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে আরেকটি বড় পরাজয়ের সামনে পড়েছে তারা। প্রথম ফিফটি করেছেন রাহাতুল, এরপর নিয়েছেন ৪ উইকেট। 

    রাহাতুলের পারফরম্যান্সের তাৎপর্য আসলে আরও বড়। ১১ ওভারে আগে ব্যাটিং করা পারটেক্স একসময় বনে গিয়েছিল ৫৭ রানে ৬ উইকেটের স্কোরে, সেখান থেকেই তাদেরকে টেনে তুলেছেন তিনি নাইম জুনিয়রের সঙ্গে ৭ম উইকেটে ৭৮ রানের জুটিতে। ২১ বলে ৩৫ করে ফিরেছেন নাইম, ইনিংসের শেষের আগে বলে রান-আউট হওয়ার আগে রাহাতুল ৫৪ রান করেছেন ৪৪ বলে, ৩ চার ও ২ ছয়ে। 

    পরের ইনিংসে পারটেক্সের অবস্থাও ছিল ব্রাদার্সের মতোই, ১১ ওভার শেষে তাদের স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ৫৫ রান। এরপর ধীমান ঘোষ খেলেছেন ৩৭ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৪৪ রানের ইনিংস, তবে সে অর্থে তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি আর কেউ। ধীমানের পর পারটেক্স ইনিংসের সর্বোচ্চ রান রাজিবুলের- ১৪। 

    রাহাতুল ৪ উইকেট নিয়েছেন ৩৪ রানে, সাকলাইন সজিব ২ উইকেট নিয়েছেন মাত্র ১৩ রানে। ১৭ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন ব্রাদার্সের আগের ম্যাচে শেষ বলের নায়ক সুজন হাওলাদারও।