নাইম-আফিফে শীর্ষে আবাহনী, ব্রাদার্সকে টপকে গেল খেলাঘর
আবাহনী-শাইনপুকুর, বিকেএসপি-৪
আবাহনী লিমিটেড ১৮৩/৫, ২০ ওভার (নাইম ৭০, আফিফ ৫৪, শান্ত ১৮, তানভির ৪/২৩, মোহর ১/২৭)
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব ১২৩/৫, ১৭(১৭) ওভার (হৃদয় ৩৬, অঙ্কন ৩১, তানজি ২৯, রবি ২২, সাইফউদ্দিন ৩/১২, মোসাদ্দেক ১/১১, স্বাধীন ১/২৩)
আবাহনী ডিএল পদ্ধতিতে ২৫ রানে জয়ী
মিরপুরে রূপগঞ্জের কাছে যখন মোহামেডান ধুঁকছিল, বিকেএসপিতে শাইনপুকুরকে নিয়ে তখন খেলছিল আবাহনী। নাইম শেখ ও আফিফ হোসেনের ওপেনিং জুটিতেই ১১১ রান তোলার পর আবাহনী গিয়েছিল ১৮৩ পর্যন্ত, জবাবে ঠিক রানতাড়ার লড়াইয়েই যেন নামলো না শাইনপুকুর। বৃষ্টি এসে আগেভাগেই ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ার আগে ১৭ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১২৩ রানের বেশি তুলতে পারেনি তারা, পাঁচে নামা মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ১৫ বলে ৩১ রানের অপরাজিত ইনিংস ছাড়া বড় স্কোর তাড়ায় মানানসই কোনো ইনিংসও নেই সেখানে। সকালের ম্যাচে প্রাইম দোলেশ্বরকে টপকে শীর্ষে উঠেছিল প্রাইম ব্যাংক, বিকালের ম্যাচে আবাহনী টপকে গেল প্রাইম ব্যাংককে।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে আবাহনীর শুরুটা দারুণ করেছিলেন নাইম, মোহর শেখকে তিন চার মেরে। তবে পাওয়ারপ্লের বাকি ৫ ওভারে উঠেছিল মাত্র ২৪ রান। প্রথম ২৬ বলে ২৯ রান করা আফিফ এরপর গিয়ার বদলে ফেলেছেন, ৩৭ বলে পূর্ণ করে ফেলেছেন ফিফটিও। অবশ্য ৩ চার ও ৪ ছয়ে ইনিংস শেষ হয়েছে খানিক বাদেই, মোহরের বলে ক্যাচ দিয়ে।
নাইমের ইনিংসের ধরনও ছিল একই, থিতু হয়ে শুরু করেছেন আক্রমণ। প্রথম ২২ বলে এই বাঁহাতি করেছিলেন সমানসংখ্যক রান, সেখান থেকে ফিফটিতে গেছেন ৩৫ বলে। ফিফটির পর অবশ্য শেষ ২০ রান করেছেন ১৫ বলে, ইনিংসে সব মিলিয়ে মেরেছেন ৪টি করে চার ও ছয়। ১৮তম ওভারে গিয়ে আউট হয়েছেন তিনি তানভিরের বলে। এদিন তানভির শেষ ওভারে ২ উইকেটসহ সব মিলিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট, শাইনপুকুরের অন্য বোলাররা যেখানে ৮-এর নিচে রান দেননি, তিনি সেখানে ৪ ওভারে গুণেছেন মাত্র ২৩ রান। আবাহনীর স্কোরটাও আরেকটু বড় হতে দেননি তিনিই।
রানতাড়ায় প্রথম ওভারেই রহমত আলি ফিরেছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে ক্যাচ দিয়ে। সে চাপেই কিনা আরও বেশি খোলসের ভেতর ঢুকে গেছে শাইনপুকুর। পাওয়ারপ্লেতে তারা তুলেছিল ৩১ রান, প্রথম ১০ ওভারে ৬৪, এ সময়ে ফিরেছিলেন ১৭ বলে ২২ করা রবিউল ইসলাম রবিও। তানজিদ হাসান তামিমের সঙ্গে ৩১ ও অঙ্কনের সঙ্গে হৃদয়ের জুটিতে এরপর উঠেছিল ৪৮ রান, যদিও পরেরটিতে হৃদয়ের অবদান ছিল ১৮ রান।
১৫ ও ১৬তম ওভার মিলিয়ে শাইনপুকুর তুলেছিল ৩৭ রান, তবে সে মোমেন্টাম হারিয়ে গেছে পরের ওভারেই- সাইফউদ্দিনের সে ওভারে ৫ রানের বিপরীতে পড়েছিল ২ উইকেট। এরপরই নেমেছে বৃষ্টি, যদিও শেষ ৩ ওভারে ৬০ রানের প্রয়োজনীয়তার সমীকরণ তখন তাদের জন্য অলৌকিকই। যা করার ছিল যখন, তখন তো কিছুই করেনি শাইনপুকুর।
****
ব্রাদার্স-খেলাঘর, বিকেএসপি-৩
ব্রাদার্স ইউনিয়ন ১৩৪/৫, ২০ ওভার (মিজানুর ৬৬, রাহাতুল ২৪, আলাউদ্দিন ১৪*, রিশাদ ২/১৪, খালেদ ২/৩৭)
খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতি ১০৯/৩, ১৬.২ (১৬.২) ওভার (মিরাজ ৪০*, ফরহাদ ৩৬*, জহুরুল ২৬, রাহাতুল ১/১৭, সাকলাইন ১/২৬)
খেলাঘর ডিএল পদ্ধতিতে ৫ রানে জয়ী
অবশ্য রানতাড়ায় ততক্ষণে বেশ থিতু হয়ে গেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও ফরহাদ হোসেন, ডি-এল পদ্ধতিতেও শেষ পর্যন্ত ৫ রানের জয় পেয়েছে খেলাঘরই। আগে ব্যাটিং করে মিজানুর রহমানের ৬৬-তে ভর করে ১৩৪ পর্যন্ত যেতে পেরেছিল ব্রাদার্স, তবে খেলাঘরকে থামানোর জন্য যথেষ্ট হয়নি তা।
মিজানুর একপাশে ছিলেন, ৬১ বলে ৬৬ রানের ইনিংসে। তবে প্রায় একই গতিতেই রান তুলে গেছে ব্রাদার্স। মাঝে ৮ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারানোর পর ৪র্থ উইকেটে ২৫ বলে ২৪ রান করা রাহাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে ৫১ রান যোগ করেছিলেন মিজানুর। শেষের আগে বলে আউট হয়েছেন, ইনিংসে মেরেছেন ৪টি চার ও ২টি ছয়। শেষদিকে আলাউদ্দিন বাবু খেলেছিলেন ৭ বলে ১৪ রানের ক্যামিও।
আগের ম্যাচে বোলিং না করা রিশাদ হোসেন এদিন ১৪ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট, তবে এদিনও ৩ ওভারের বেশি করানো হয়নি তাকে দিয়ে। খেলাঘরের হয়ে বাকি দুই উইকেট নিয়েছেন খালেদ আহমেদ, অবশ্য তাকে খরচ করতে হয়েছে ৩৭ রান।
রানতাড়ায় অবশ্য খেলাঘর হোঁচট খেয়েছিল শুরুতেই, সাকলাইন সজিবের করা প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে রাফসান আল মাহমুদ বোল্ড হওয়ার পর সে ওভারেই রান-আউট হয়েছিলেন ইমতিয়াজ হোসেন। তবে জহুরুল ইসলাম ও মিরাজের তৃতীয় উইকেটে ৫৮ রানের জুটি সে চাপ থেকে উদ্ধার করেছে খেলাঘরকে, এরপর তো ফরহাদের সঙ্গে মিরাজের অবিচ্ছিন্ন ৪৬ রানের জুটিতে জয়ই নিশ্চিত হয়েছে তাদের। অবশ্য কম উইকেট হারানোও ডিএল পদ্ধতিতে দারুণ কাজে দিয়েছে তাদের।