• ইউরো ২০২০
  • " />

     

    'ওয়ান্ডারফুল ওয়েম্বলিতে' জার্মান-জুজু কাটিয়ে স্বপ্নের জয় ইংল্যান্ডের

    'ওয়ান্ডারফুল ওয়েম্বলিতে' জার্মান-জুজু কাটিয়ে স্বপ্নের জয় ইংল্যান্ডের    

    ৫৫ বছর ধরে জুজুটা ভর করেছিল ইংল্যান্ডের ওপর। নকআউতে জার্মানির সঙ্গে দেখা মানেই ইংল্যান্ডের হার। সেই ইতিহাস বদলে গেল ২০২১ সালে এসে, সেই ওয়েম্বলিতে। যেখানে নিজেদের একমাত্র বিশ্বকাপ জয়ের গৌরব লিখেছে ইংল্যান্ড এই জার্মানিকে হারিয়েই,। রাহিম স্টার্লিং আর হ্যারি কেনের গোলে জার্মানিকে হারিয়ে শাপমুক্ত হলো ইংল্যান্ড। ওয়েম্বলিতে শোনা গেল ইটস কামিং হোম। শেষ আটে উঠে এখন ইংল্যান্ড শিরোপার স্বপ্ন দেখতেই পারে। 

    দুদলই শুরুটা করেছিল সাবধানেই। প্রথম দশ মিনিটে খেলা জার্মানির নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পরে তা চলে গেছে ইংল্যান্ডের হাতেই। এ পর্যন্ত ইংল্যান্ড খেলে এসেছে চারজনের ব্যাকলাইন নিয়েই। তবে জার্মানির ৩-৪-৩ ফর্মেশনে আক্রমণের ইংল্যান্ডও থ্রি ম্যান ব্যাকলাইন খেলিয়েছে। অবশ্য ডিফেন্স চিরে কাউকেই এগিয়ে যেতে দেখা যায়নি প্রথম আধা ঘন্টায়। এরপর একবারই শুধু হ্যাভার্জের দারুণ থ্রু পাসে ইংল্যান্ড ডিফেন্স ভেঙ্গে যেতে পেরেছিলেন ভের্নার, যদিও পিকফোর্ডের দারুণ সেভে বল জালে জড়াতে পারেননি তিনি। এর আগে জার্মানিকেও দারুণ এক সেভে বাঁচিয়েছিলেন নয়্যার। 



    বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া স্টার্লিং ডান পায়ের দুর্দান্ত শট বাঁদিকে ঝাপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে দেন নয়্যার। হ্যারি ম্যাগুয়ের হেডে গোল করার সুযোগ পেয়েছিলেন দুবার। একবার বাইরে, আরেকবার সোজা মেরে সেটা কাজে লাগাতে পারেননি। গোলশূন্য অবস্থায় যখন প্রথমার্ধ শেষের দোরগোড়ায় তখনই গোলের খুব কাছে চলে যায় ইংল্যান্ড। স্টার্লিংকে বক্সের সামনে জার্মান ডিফেন্স জটলা রুখবার পরে বল ডিফ্লেক্টেড হয়, তারপর একেবারেই একা নয়্যারের সামনে বল পেয়ে গিয়েছিলেন হ্যারি কেইন। গোল হওয়ার জন্য শটটাই ছিল শুধু বাকি। মুহুর্তেই হাজির হামেলস, স্লাইড করে বল ক্লিয়ার করে নিশ্চিত গোল থেকে বাঁচিয়ে দেন জার্মানিকে। 

    দ্বিতীয়ার্ধেও গোলের খুব ভালো সুযোগ তৈরি করতে পারছিলো না কেউই। এরপর ৭৫ মিনিটে স্টার্লিং বল জালে জড়ালে ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম যেন প্রাণ ফিরে পায়। বদলি হিসেবে গ্রিলিশ নামার পরে স্টার্লিং প্রান্ত বদলে বাঁ প্রান্ত থেকে ডান প্রান্তে এসেছেন। তারপর ডান প্রান্ত থেকে ড্রিবল করে ভিতরে ঢুকে কেইনের পায়ে বল দিলে তিনি আবার বল বাড়ান লুক শর দিকে। বাঁ প্রান্ত থেকে শয়ের বাড়ানো বলে এরপর মোলায়েম ফিনিংশিংয়ে স্টার্লিং বল পাঠিয়ে দেন জালে। 
     

    হাজার চল্লিশেক দর্শকের সমর্থনে উজ্জীবিত ইংল্যান্ড, গোলের নেশায় মাতোয়ারা জার্মানি। খেলায় উত্তেজনা বেড়ে যায় বহুগুণ। স্টার্লিং গোল করেছেন, আর ইংল্যান্ড হেরেছে, এমন কোনও নজির নেই। সেটা অবশ্য হতেও পারত, হয়নি  মুখে তুলে দেয়া খাবার থমাস মুলার ফেলে দিলে। জার্মানির বিদায় ঠেকানোর পথে একমাত্র বাধা ছিলেন পিকফোর্ড। সেই পিকফোর্ডের কিছুই করার প্রয়োজন হয়নি, তাকে একা পেয়েও মুলার শট নিলে বল চলে যায় বাইরে দিয়ে। পরমুহুর্তেই হাটু গেড়ে বসে থাকা মুলারের মাথায় উঠে যায় হাত। জার্মানির জার্সি গায়ে ৩৯টি গোল করলেও তার একটিও আসেনি ইউরোতে। আজ ইউরোর মুলারের বিদায়ে চূড়ান্ত হলো, তা আর কখনো হওয়ারও নয়।

    এরপর হ্যারি কেইনের গোলে ইংল্যান্ড ব্যবধান বাড়িয়ে জয় নিশ্চিত করেছে।এবারও শর অবদান, তার উইন করা বল থেকে গ্রিলিশের পাসে গোল পেয়েছেন কেইন। গোলহজম বিহীন এ ম্যাচও পার করে এবারের ইউরোতে এখনো সব ম্যাচে ক্লিনশিট রেখেছে ইংল্যান্ড। গ্রুপ অফ ডেথের বাকি সবাই বিদায় নিয়েছে আগেই। মেজর টুর্নামেন্টে ওয়েম্বলিতে কখনো না হারা ইংল্যান্ডের কাছে আজ জার্মানিরও মরণ ঘটলো। ‘গ্রুপ অফ ডেথ’ নাম পাওয়া এফ গ্রুপের কেউই আর কারো ডেথের কারণ হতে পারলো না তাই।