• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    কিক অফের আগেঃ সব সম্ভব মনে করছে রিয়াল মাদ্রিদ

    কিক অফের আগেঃ সব সম্ভব মনে করছে রিয়াল মাদ্রিদ    

    ওলফসবার্গের কাছে প্রথম লেগে ২-০ গোলের হারের ধাক্কাটা বেশ ভালো ভাবেই সামলে উঠেছে রিয়াল মাদ্রিদ। অন্তত খেলোয়াড় আর জিদানের কথা শুনে তেমনটা মনে হওয়াই স্বাভাবিক।

    এল ক্লাসিকোতে পিকের গোলের পর ১৩ পয়েন্ট পিছিয়ে গিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। সেই ম্যাচ জিতে অবশ্য  ব্যবধানটা ৭-এ এনেছিল জিদানের রিয়াল মাদ্রিদ। এর সপ্তাহখানেক পর এখন শীর্ষে থাকা বার্সার সাথে রিয়ালের পয়েন্ট ব্যবধান মাত্র ৪। হারিয়ে যেতে বসা লিগ শিরোপাটাও এখন হাতছানি দিচ্ছে রিয়ালের সামনে। ফুটবল তো এমনই! সবই সম্ভব এখানে। আজকের ম্যাচেও দলকে পুনুরুজ্জীবিত করতে জিদানও টেনে আনলেন লা লিগার প্রসঙ্গই। “আমরা ১৩ পয়েন্ট পিছিয়ে ছিলাম, এখন ৪। এখানে সব সম্ভব”। নিজের দলের খেলোয়াড়রা সেরাটা খেললে ২-০ গোলের লিডটা টপকে যেতে খুব বেগ পেতে হবে না বলেই বিশ্বাস রিয়াল ম্যানেজারের।   

    অদ্ভূত এক সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে আজকের এই ম্যাচটি। প্রথম লেগের আগে মনে হচ্ছিল প্রথমবার কোয়ার্টার ফাইনালের মুখ দেখা ওলফসবার্গের  হারানোর ছিল না কিছুই! ১০ বারের চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ীদের বিপক্ষে খেলতে নামাই যেন ভাগ্যের ব্যাপার! প্রথম লেগে বড় ব্যবধানে জিতে সেমিতে এক পা দিয়ে রাখবেন রোনালদো, বেনজেমেরা- এমনটাই ধারণা ছিল সবার। ঘটলো উল্টোটা। মাত্র পঁচিশ মিনিটের মাঝেই দু’গোলে এগিয়ে গেল জার্মান ক্লাবটি। ম্যাচের বাকী সময় রিয়ালের জালে আরও অন্তত দু’টি গোল না দিতে পারার দোষটা শুধু নিজেদের ঘাড়েই চাপাতে পারেন শারলে, রদ্রিগেজরা।

    সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে মাত্র ৭ দিনের ব্যবধানে আরও একবার যখন মুখোমুখি এই দু’দল, তখন পাল্টে গেছে সমীকরণটা। এবার হারানোর ভয় নেই রিয়ালের! জিততে যে হবেই! দলটার নাম যখন রিয়াল মাদ্রিদ তখন ‘অসম্ভব’ শব্দটা একটু বেমানানই।

    নিজেদের ঘরের মাঠটাই সমর্থন যোগাচ্ছে লস ব্লাংকোদের। দু গোলের লিড কাটিয়ে উঠতে সময়টাও মাত্র ৯০ মিনিট। জিততে হলে করতে হবে নূন্যতম ৩ টি গোল। খেলা শুরুর প্রথম দিকেই একটি গোল করতে পারলে রিয়ালের জন্য কাজটা সহজ হয়ে যাবে অনেকটাই। এই মৌসুমে লিগে প্রথম ২০ মিনিটে ২৮টি গোল করেছেন বেল-বেনজেমা-রোনালদোরা। এমন রেকর্ড তো রিয়াল সমর্থকদের জন্য অনুপ্রেরণাদায়কই।  

    মাঠের ১১ জনের সাথে এক হয়ে লড়বে প্রায় আশি হাজার দর্শকও! ওলফসবার্গের জন্য এ ঘটনা তো নতুনই।  প্রথমবার কোয়ার্টার ফাইনালে এসেই রিয়াল মাদ্রিদকে দুই গোলে হারিয়ে স্বপ্নটা এখন সেমিফাইনালের। তাঁদের ঘিরে বাড়ছে প্রত্যাশার চাপটাও। এতো ‘চাপ’ সামলে উঠতে পারবে তো ওলফসবার্গ? ওলফসবার্গের লড়াইটা তাই জীবন-মরণ যুদ্ধ বলাই চলে। শারলে তো বলেই ফেললেন “আজকের ম্যাচটা আমাদের এমন ভাবে খেলতে হবে, যেন আমাদের জীবন নির্ভর করছে এই খেলার ফলের ওপর”।

    চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে প্রথম লেগে দু’গোলে পিছিয়ে থেকে পরের রাউন্ডে যাওয়ার কীর্তি আছে দু’টি। ২০১৩ সালে এসি মিলানকে হারিয়ে বার্সেলোনা উঠেছিল সেমিতে। আর ২০১৪ তে অলিম্পিয়াকোসকে হারিয়ে শেষ আটে পা রেখেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। চ্যাম্পিয়ন লিগে ঘরের মাঠে গত ৩৪ ম্যাচে  হার মাত্র দু’টিতে। একই প্রতিযোগিতায় এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে এসে গোল করতে পারেনি অন্য কোন দল! আজ তার ব্যত্যয় ঘটলে রিয়ালের সেমিফাইনালের আশাটা কষ্টসাধ্য নয়, প্রায় দুরূহই হয়ে যেতে পারে।

    তবে রোনালদো কিন্তু বলছেন অন্য কথা! “ম্যানেজার, দল, সমর্থক- সবাই আত্মবিশ্বাসী। মাদ্রিদ সমর্থকদের জন্য মনে রাখার মতো এক রাতই অপেক্ষা করছে”। দলের মূল ভরসার মুখে এমন আশার বাণী শুনে আশায় বুক বাঁধতেই পারেন রিয়াল সমর্থকেরা।