• লা লিগা
  • " />

     

    গ্রানাদাকে উড়িয়ে ছুটছে রিয়াল

    গ্রানাদাকে উড়িয়ে ছুটছে রিয়াল    

    পয়েন্ট টেবিলের শেষের দিকে থাকা গ্রানাদার বিপক্ষে রীতিমতো ছেলেখেলাই করলো আনচেলোত্তির রিয়াল। আক্রমণাত্মক সুন্দর ফুটবলে চারজনের চারগোলে তারা ম্যাচটা জিতে নিয়েছে ৪-১ গোলে। আসেনসিও ও নাচোর গোলের পর সুয়ারেজের গোলে প্রথমার্ধে গ্রানাদা ম্যাচে কিছুটা সময় খেলায় ফিরলেও বাকি সময়টুকুতে রিয়ালের আক্রমণের কোন জবাব ছিল না তাদের কাছে। দ্বিতীয়ার্ধে ভিনিসিয়াসের পর মেন্ডির গোলে ব্যবধানটাই বেড়েছে শুধু। 

    রিয়াল বল নিজেদের দখলে রেখে শুরুটা করে ভালোভাবেই। প্রথম গোলের দেখাও পেয়ে যায় ১৯ মিনিটে। সেন্টার লাইনের সামনে থেকে ক্রুসের থেকে বল পেয়ে এগিয়ে যান আসেনসিও, এরপর গ্রানাদা গোলকিপার ম্যাক্সিয়ানোর সামনে গিয়ে দারুণ ফিনিংশিংয়ে বল জড়িয়ে দেন জালে। আরও একবারও এভাবেই আসেনসিও গোল পেয়েই গিয়েছিলেন প্রায়। গোললাইন পাড়ি দেবার আগেই গ্রানাদা ডিফেন্ডার তাঁর গোল ফিরিয়ে দেন। অবশ্য এর আগেই নাচোর গোলে ব্যবধান বাড়িয়েছিলো রিয়াল। ক্রুস বাঁ দিক থেকে শর্ট কর্নারে ডিবক্সের কিনারায় থাকা মদরিচের দিকে বল বাড়ান, মদরিচ আবার বল দেন ক্রুসকে। এরপর ক্রুসের ক্রসে সিক্স ইয়ার্ড বক্সে ফাঁকা অবস্থায় থাকা নাচো দারুণ টাচে বল পাঠিয়ে দেন জালে। 

    দুই গোলের ব্যবধানটা আরও বাড়াতে পারতো রিয়াল। ভিনিসিয়াস সোজা ম্যাক্সিমিয়ানোর দিকে বল মারলে তা হয়না, আর বেনজেমার শটটা ডানদিকে ঝাপিয়ে পড়ে রুখে দেন গ্রানাদা গোলরক্ষক। যার ফলে প্রথমার্ধে আর কোন গোল হজম করতে হয় না তাদের। আর ৩৪ মিনিটে সুয়ারেজের গোলে তারা ম্যাচেও ফিরে আসে। নাচোর দুর্ভাগ্য, সুয়ারেজের লং রেঞ্জ থেকে নেওয়া বাঁ পায়ের শট তাঁর পায়ে লেগে দিক বদলে পৌঁছে যায় জালে। সেই গোলের পর গ্রানাদার খেলায় কিছুটা আত্মবিশ্বাস ফুটে উঠে। সমতায় ফেরারও সুযোগ ছিল গ্রানাদার। সুয়ারেজ আরেকবার বাঁ প্রান্তে বল পেয়েছিলেন, কিন্ত শটটা ঠিকঠাক নিতে পারেননি। কর্তোয়া সহজেই তা সেভ দিয়ে দিলে দুদল প্রথমার্ধ শেষে বিরতিতে যায় ২-১ স্কোরলাইনেই। 

    প্রথমার্ধে ভিনিসিয়াস তাঁর স্কিলের প্রদর্শনীতে গ্রানাদা ডিফেন্ডারদের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। শেষমেশ দ্বিতীয়ার্ধে এসে কাঙ্খিত গোলের দেখাও পেয়ে যান এই ব্রাজিলিয়ান। গ্রানাদা আক্রমণে উঠার পর রিয়ালের ডিবক্স থেকে বল ক্লিয়ার হয়ে বেনজেমার কাছে আসে। বেনজেমা ব্যাক পাস দেন কাসেমিরোকে, কাসেমিরো দারুণভাবে ফিরতি পাস বাড়িয়ে দেন ডানপ্রান্তে বেনজেমার উদ্দেশ্য। বেনজেমা ড্রিবল করে এগিয়ে গিয়ে এরপর গ্রানাদার দুই ডিফেন্ডারদের ফাঁক দিয়ে বল বাড়ান, ততক্ষণে দৌড়ে এসে হাজির হওয়া মদরিচ তা আবার নিঃস্বার্থভাবে বাড়ান ভিনিসিয়াসের দিকে। ফাঁকা জালে বল জড়াতে ভিনিসিয়াসের কোনই সমস্যা হয় না। ৫৬ মিনিটে সে গোলের পর রিয়াল মাদ্রিদ আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে। 

    ৬৭ মিনিটে ভিনিসিয়াসকে ফাউল করে মনচু লাল কার্ড দেখলে দশজনের গ্রানাদার জন্য বাকি সময়টুকু পার করাটাই হয়ে উঠে বেশ কষ্টকর। সে ফাউলের পর রেফারির সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে গ্রানাদার কোচ মরেনোকেও দেখতে হয় লালকার্ড। ৭৬ মিনিটে কাসেমিরো অসাধারণ এক থ্রু বল বাড়ান, ব্রাজিলিয়ান এই মিডফিল্ডারের সেই ডিফেন্সচেরা পাস মেন্ডি রিসিভ করে বাঁ প্রান্ত থেকে ভালো শটে বল জালে পাঠিয়ে দিলে এক হালি পূর্ণ করে ফেলে আনচেলোত্তির শিষ্যরা। একবার বাঁ পাশ থেকে হেডে ফাঁকা অবস্থায় বল দিয়েছিলেন ভিনিসিয়াসকে, কিন্ত ভিনিসিয়াস পারেননি ফিনিশিং করতে। বেনজেমা গোল না পেলেও খেলেছেন দুর্দান্ত। শেষমেশ গ্রানাদাকে আর কোন গোল হজম করতে হয়নি। তাদের মাঠে এসে রিয়াল এই জয়ে ১৩ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে এখন অবস্থান করছে টেবিলের শীর্ষস্থানে।