অপু-সোহাগদের ঘূর্ণির পর বিজয়ের দৃঢ়তায় সিলেটের প্রথম জয়
ঢাকা-সিলেট (টস- সিলেট/বোলিং
মিনিস্টার ঢাকা ১০০, ১৮.৪ ওভার ( মাহমুদউল্লাহ ৩৩, শুভাগত ২১, অপু ১৮/৪, তাসকিন ২২/৩, সোজাগ গাজী ২২/২)
সিলেট সানরাইজার্স ১০১/৩, ১৭ ওভার ( বিজয় ৪৫, ইনগ্রাম ২১, সিমন্স ১৬, মাশরাফি ২১/২, মুরাদ ৩১/১)
সিলেট সানরাইজার্স সাত উইকেট জয়ী
ভাগ্যের শিকে ছিঁড়ল সিলেট সানরাইজার্সের। মিরপুরের স্লো উইকেটে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকাকে সাত উইকেটে হারিয়ে প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছে দলটি।
এই ম্যাচ দিয়ে দীর্ঘদিন পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরেছেন মাশরাফি। কিন্তু তার প্রত্যাবর্তন ম্লান করে দিলেন সিলেটের বোলরারা। তাদের দারুণ পারফর্ম্যান্সে মাত্র ১০০ রানে থামে ঢাকা। জবাবে আনামুল হক বিজয়ের দৃঢ় ব্যাটিংয়ে তিন ওভার হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করেছে সিলেট।
টস আর স্পিনাররাই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারক
ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণের অন্যতম নিয়ামক হয়ে দাঁড়িয়েছে টস। মিরপুরের ধীরগতির উইকেটে টস জিতে আগে ফিল্ডিং করা দলই বেশিরভাগ ম্যাচ জিতেছে। সিলেট অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের মাথাতেও সেই ভাবনাই ছিল। টস ভাগ্য সহায় হওয়ায়, উইকেটের আদ্রতা কাজে লাগাতে ঢাকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠান সৈকত।
ঢাকার টপ অর্ডারের দৈন্যদশা কাটেনি এই ম্যাচেও। সোহাগ গাজীর টার্ন আর আচমকা বাউন্সে, বলের লাইন মিস করে স্টাম্পিং হন মোহাম্মদ শাহজাদ। তার দ্বিতীয় শিকার জহুরল ইসলাম অমি।
তামিমের ব্যাট হাসেনি আজও। বাঁহাতি এই ওপেনার ফিরেছেন সৈকতের ভেতরে ঢোকা এক ডেলিভারিতে।
টপ অর্ডারে ধ্বস নামার পর টেনে তোলার চেষ্টা করেছিলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু যোগ্য সঙ্গীর অভাব আর অপু-সোহাগদের ঘূর্ণি জাদুতে বেশি সুবিধা করতে পারেননি তিনিও। বাঁহাতি স্পিনার অপুকে সুইপ করতে গিয়ে ফাইন লেগে ক্যাচ দেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। শেষ চেষ্টা করেছিলেন শুভাগত হোম। তিনিও অপুর স্পিন জালে ধরাশায়ী।
মিরপুরের স্লো উইকেটে অপু-সোহাগ-সৈকতদের স্পিন জাদুর পর বল হাতে তোপ দাগিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। ঢাকার তিন টেলএন্ডারই ফিরেছেন তার বলে।
ডিআরএসহীন বিপিএল, নাঈম-রাসেলের বিতর্কিত আউট
এবারের বিপিএলে নেই ডিআরএস। তাই এলবিডব্লিউয়ের সিদ্ধান্তের জন্য ভরসা ফিল্ড আম্পায়াররাই। স্বচ্ছতার প্রশ্নটাও থেকেই যাচ্ছে। এই ম্যাচেই দুটো বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন ফিল্ড আম্পায়াররা।
ঢাকার হয়ে তখন ব্যাট করছিলেন নাইম শেখ। অপুকে সুইপ করতে গিয়ে ঠিকঠাক ব্যাটে লাগাতে পারেননি তিনি। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বল গিয়ে আঘাত হেনেছে তার গ্লাভসে। জোরালো আবেদনের মুখে তাকে আউট দেন আম্পায়ার।
একই চিত্র দেখা গেছে ঢাকাকে আগের ম্যাচ জেতানো আন্দ্রে রাসেলের ক্ষেত্রেও। বোলিং প্রান্তে তখনও ছিলেন অপু। তার ভেতরে ঢোকা বলে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেন রাসেল। খালি চোখে দেখা যায় বল গিয়ে লেগেছে তার প্যাডে। কিন্তু টিভি রিপ্লে বলছে আগে ব্যাটের কানা ছুঁয়েছে বল। আম্পায়ার জোরালো আবেদনে সাড়া দিলে মাঠ ছাড়েন রাসেল।
মাশরাফির প্রত্যাবর্তন ও নাঈম-বিজয়ের দুই মেরুর ব্যাটিং
দীর্ঘদিন পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরেছেন মাশরাফি। আজকের ম্যাচে ঢাকার সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিও তিনিই। বলে গতি না থাকলেও সুইং আর ছোট ছোট মুভমেন্টে শুরুতে বেশ ভালোই ভুগিয়েছেন সিলেটের ওপেনারদের।
চার ওভারের স্পেলে ২১ রান দিয়ে নিয়েছেন দুই উইকেট। তার বলে লেন্ডল সিমন্স ফিরেছেন রুবেল হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে। মাশরাফির দ্বিতীয় শিকার বিজয়। তামিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান করেছেন ৪৫ রান।
উইকেটের বিচারে বিজয় যেভাবে খেলেছেন, এক ইনিংস আগে তার উল্টোটা দেখা গেছে নাঈমের ব্যাটে। একটু রয়েসয়ে খেললেও সিংগেলস-ডাবলসে রানের চাকা ঠিকই সচল রেখেছেন বিজয়। কিন্তু নাঈম দিয়ে গেছেন একের পর এক ডট। ৩০ বলে ১৫ রান করে আউট হয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। তার এই ধীরগতির ব্যাটিংয়ে সিলেটের স্পিনাররা আরো চেপে ধরে ঢাকাকে।