নাহিদুলের জাদু, ডু প্লেসি-ডেলপোর্টের ঝড়
চট্টগ্রাম-কুমিল্লা (টস-চট্টগ্রাম/বোলিং)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স- ১৮৩/৩, ২০ ওভার (ডু প্লেসি ৮৩*, ডেলপোর্ট ৫১*, লিটন ৪৭, নাসুম ২৩/২)
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স- ১৩১, ১৭.৩ ওভার (জ্যাকস ৬৯, মৃত্যুঞ্জয় ১৩, নাহিদুল ১৭/৩, তানভীর ৩৩/২, মোস্তাফিজ ২৬/২)
ফলাফল: কুমিল্লা ৫২ রানে জয়ী
মেহেদী হাসান মিরাজের ইস্যুতে টালমাটাল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স শিবির। মাঠেও খানিকটা দেখা গেল এর প্রভাব। ছন্নছাড়া বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়েও এলোমেলো। কুমিল্লার দেয়া বিশাল লক্ষ্য টপকাতে গিয়ে চট্টগ্রামের ব্যাটসম্যানরা তাড়াহুড়োই করেছেন। সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছেন কুমিল্লার বোলাররা। নেতৃত্ব দিয়েছেন স্পিনার নাহিদুল ইসলাম। চট্টগ্রামের টপ অর্ডারকে একাই গুড়িয়ে দিয়েছেন ডানহাতি এই স্পিনার। এর আগে দুই আফ্রিকান, ফাফ ডু প্লেসি ও ক্যামেরন ডেলপোর্ট মিলে দলকে এনে দিয়েছেন বড় সংগ্রহ।
দৃঢ় ডু প্লেসি, শেষে ডেলপোর্ট ঝড়
৪, ৪, ৪, ৬, ৪, ১। চট্টগ্রামের বিপক্ষে কুমিল্লার শেষ ওভারের প্রতি বলের রান সংখ্যা। শরীফুল ইসলামকে পাত্তাই দেননি ডেলপোর্ট। ২২ বলে হাঁকিয়েছেন দুরন্ত এক ফিফটি। শেষ ওভারে এই বাঁহাতির ঝড়েই ১৮০ পেরোনো সংগ্রহ পেয়েছে কুমিল্লা। সেই এক ওভারই বেঁধে দিয়েছে ম্যাচের সুর।
অবশ্য কুমিল্লার ব্যাটিং অর্ডারের নায়ক আজ ডু প্লেসি। প্রথম দুই ম্যাচে রান না পেলেও, এই ম্যাচে ঠিকই জ্বলে উঠেছেন এই প্রোটিয়া। শরীফুল-মৃত্যুঞ্জয়দের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে খেলেছেন ৫৫ বলে ৮৩ রানের এক বিস্ফোরক ইনিংস। অথচ ঢাকার উইকেটে অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার হিমশিম খাচ্ছিলেন ব্যাট হাতে। কিন্তু ভেন্যু বদলাতেই যেন ভোজবাজির মতো বদলে গেল সব।
এই ইনিংস খেলার পথে লিটনের সাথে গড়েছেন ৮০ রানের জুটি। দুজন মিলে পাওয়ার প্লেতে তুলেছেন ৫২। দশ ওভার শেষে সেটা দাঁড়িয়েছে ৮২’তে।
নাহিদুলের জাদু চলছেই
নাহিদুলকে কেউ যেন খেলতেই পারছেন না। বিশেষ করে পাওয়ার প্লেতে। নতুন বলে যেভাবে স্পিন, টার্ন আদায় করে নিচ্ছেন, প্রতি ম্যাচেই কুমিল্লা বসছে চালকের আসনে। চট্টগ্রামের বিপক্ষে টানা একই লাইন-লেংথ মেনে বল করে রানের চাকা আটকে রেখেছেন। ডট বলের চাপে পড়ে তাড়াহুড়ো করে আউটও হয়েছেন টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান।
ইনিংসের প্রথম বলেই নাহিদুলকে চার মেরেছেন কেনার লুইস। পরের বলটাও ছিল একই জায়গায়, গতির হেরেফেরে লুইসকে দ্বিধায় ফেলে উইকেটও আদায় করেছেন। আগের দুই ম্যাচেও বুদ্ধিদ্বীপ্ত, আঁটসাঁট বোলিং করেছেন নাহিদুল। তিন ম্যাচ শেষে এই অফ স্পিনারের সংগ্রহ আট উইকেট।
দারুণ বল করেছেন কুমিল্লার বাকি বোলাররাও। তানভীর, মোস্তাফিজ, শহীদুল; তিনজনই নিয়েছেন দুটি করে উইকেট।
পাওয়ার প্লে-ডেথ ওভারই ম্যাচের প্রভাবক
১৮৪ রানের বিশাল লক্ষ্য টপকাতে একটা উড়ন্ত সূচনার দরকার ছিল চট্টগ্রামের। ইনিংসের প্রথম বলে চার মেরে সেই ইঙ্গিতই দিতে চেয়েছেন কেনার লুইস। কিন্তু পরের বলেই আউট এই ডানহাতি। আফিফ, সাব্বির, মিরাজ, নাঈমের ক্ষেত্রেও একই চিত্র। চটজলদি আউট হয়েছেন বাউন্ডারির সন্ধানে। সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছেন কুমিল্লার বোলাররা।
পাওয়ার প্লেতে ৫০ রান তুললেও নেই তিন উইকেট। দশ ওভার শেষে ৭২ রানে ছয় উইকেট। বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান এসেছে ঠিকই। কিন্তু ওপেনার উইল জ্যাকস ছাড়া কেউ সুবিধা করতে পারেননি। টানা দুই ফিফটি পেয়েছেন এই ইংলিশ। তানভীরের বলে আউট হওয়ার আগে খেলছেন ৬৯ রানের ইনিংস।
পাওয়ার প্লে আর ডেথ ওভারে দুই দলের ব্যাটিং-বোলিং ছিল দুই মেরুর। চট্টগ্রামও ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে এই দুই জায়গাতেই। ডেথ ওভারে উইকেটে ছিলেন না চট্টগ্রামের কোনো স্বীকৃত ব্যাটসম্যান। নাসুম-রাজাদের ব্যাটিং কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে।