মাহমুদউল্লাহর দৃঢ়তা, শামসুর-শুভাগতর ক্যামিওতে বেঁচে রইল ঢাকার প্লে অফের আশা
ঢাকা-খুলনা (টস-খুলনা/ব্যাটিং)
খুলনা টাইগার্স- ১২৯/৮, ২০ ওভার (সিকান্দার রাজা ৬৪, মাহেদী ১৭, সানি ১৫/২, আজমতউল্লাহ ২৫/২, কাইস ১২/১)
মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা- ১৩১/৫, ১৯.২ ওভার (মাহমুদউল্লাহ ৩৪, জহুরুল ৩০, শুভ ২৫, শুভাগত ১৮*, পেরেরা ৩৯/২,নাবিল ১০/১)
ফলাফল: মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা পাঁচ উইকেটে জয়ী
লক্ষ্য ছিল ১৩০ রানের। সেটা টপকাতে গিয়েই গলদঘর্ম ঢাকার ব্যাটসম্যানরা। আজ ব্যর্থ আগের ম্যাচের পারফর্মার তামিম ইকবাল। খুলনার বোলাররাও পেয়ে বসে ঢাকাকে। তবে জহুরুল ইসলামকে নিয়ে সেই ধাক্কা সামলান মাহমুদউল্লাহ। খুলনার বোলারদের তোপে ম্যাচটা বেরিয়েই যাচ্ছিল ঢাকার হাত থেকে। কিন্তু শামসুর রহমান ও শুভাগত হোমের দুটো দুরন্ত ক্যামিওতে হারের শঙ্কা উড়ে যায় ঢাকার। টানা দুই ছক্কা মেরে দলকে জিতিয়েছেন শুভাগত। এই ম্যাচ জিতে প্লে অফের দৌড়ে টিকে রইল ঢাকা।
শামসুর-শুভাগতর ম্যাচ জেতানো ক্যামিও
শেষ দুই ওভারে জিততে ঢাকার প্রয়োজন ছিল ১৫ রান। খুলনার খালেদ আহমেদ ১৯তম ওভারে এসে দেন মাত্র চার রান। পেরেরার করা শেষ ওভারে স্ট্রাইকে ছিলেন শুভাগত। ডানহাতি পেসারের ফুল লেংথের স্লোয়ারটা ধরতে পেরে উইকেট ছেড়ে এগিয়ে এসে তুলে মারেন তার মাথার ওপর দিয়ে। পরের বলটা পেরেরা করেছেন ব্যাকহ্যান্ড স্লোয়ার। গতির তারতম্য বুঝতে পেরে জায়গা বানিয়ে কভারের ওপর দিয়ে ম্যাচ জেতানো দ্বিতীয় ছক্কাটি মারেন শুভাগত। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান অপরাজিত থাকেন ৯ বলে ১৮ রান করে।
এর আগে দারুণ একটা ক্যামিও এসেছে এবারের টুর্নামেন্টে প্রথমবার খেলতে নামা শামসুরের ব্যাট থেকে। জহুরুলের বিদায়ের পর উইকেটে যান ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। খালেদকে মারেন দুই ছক্কা। ১৪ বলে ২৫ রান করে ইয়াসির আলীর হাতে ক্যাচ দিয়েছেন পেরেরার বলে। এক ওভার আগে একইভাবে আউট হন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
ম্যাচ জয়ের কারিগর মাহমুদউল্লাহ-জহুরুল
১২ রানেই নেই দুই উইকেট। ঢাকার দুই ওপেনার তামিম ও ইমরানউজ্জামান; দুজনের ব্যাট থেকেই এসেছে সমান ছয় রান করে। সেই সুযোগে খুলনার বোলাররাও চড়ে বসতে চায় ঢাকার ওপর। যদিও তাদের ভালোভাবেই সামলেছেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ ও জহুরুল। দেখেশুনে খেলে চতুর্থ উইকেটে দুজন গড়েছেন ৫৭ রানের জুটি। বাউন্ডারির চেয়ে স্ট্রাইক রোটেটেই মনোযোগ ছিল তাদের বেশি। অবশ্য পেসার রুয়েলকে মারতে গিয়ে বোল্ড হন জহুরুল। এর আগে অবশ্য দুটি করে ছক্কা ও চার মেরেছেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
মাহমুদউল্লাহও আঁকড়ে ছিলেন একপ্রান্ত। তবে বাউন্ডারির সন্ধানে শট খেলতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন পেরেরার বলে।দুজনের ৫৭ রানের জুটিতেই ম্যাচে ফিরেছিল ঢাকা। দুজনের গড়ে দেওয়া ভিতে ভর করেই শামসুর-শুভাগত খেলেন ম্যাচজয়ী ক্যামিও।
সিকান্দার রাজার নিঃসঙ্গ লড়াই
৩২ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে তখন ব্যাকফুটে খুলনা। ত্রাতা হয়ে এলেন সিকান্দার রাজা। একপ্রান্ত আগলে দাঁড়িয়ে খেলেছেন ঢাকার বোলারদের। উইকেটে যান ইনিংসের অষ্টম ওভারে। আউট হয়েছেন ইনিংসের শেষ বলে। এর আগে ছুঁয়েছেন ফিফটি। ৫০ বলে করেছেন দলীয় সর্বোচ্চ ৬৪ রান। তার ব্যাট থেকে এসেছে পাঁচটি চার ও চারটি ছক্কা। এই জিম্বাবুইয়ানের ব্যাটে চড়েই ১২৯ রানের পুঁজি পায় খুলনা। মাঝের ওভারগুলোতে রাজার সঙ্গী বদলেছে তিনবার। থিসারা পেরেরা-মাহেদী হাসানরা তার সাথে বড় জুটি গড়তে পারেননি। শেষদিকে রুয়েল অবশ্য রাজাকে ভালোই সঙ্গ দিয়েছেন।
এর আগে ঢাকার বোলারদের তোপে ১২ রানেই লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় খুলনার টপ অর্ডার। শুরুর চার ব্যাটসম্যানই আউট হয়েছেন সিংগেল ডিজিটে। আগের ম্যাচে ৮২ করা সৌম্যর দিকে নজর ছিল সবার। বাঁহাতি এ ওপেনার আউট হয়েছেন সবার আগে। মাহেদীকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন মুশফিক। তবে খুলনার অধিনায়কও সুবিধা করতে পারেননি, বোল্ড হয়েছেন বিপিএল অভিষিক্ত আজমতউল্লাহর বলে।