• বঙ্গবন্ধু বিপিএল ২০২২
  • " />

     

    মিরপুরে কুমিল্লার বড় জয়: 'মার্ভেলাস মঈন', 'আগ্রাসী লিটন' ও 'কিপটে রনি'তে অসহায় খুলনা

    মিরপুরে কুমিল্লার বড় জয়: 'মার্ভেলাস মঈন', 'আগ্রাসী লিটন' ও 'কিপটে রনি'তে অসহায় খুলনা    

    খুলনা টাইগার্স-কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, মিরপুর (টস-খুলনা/বোলিং)
    কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স-১৮৮/৬, ২০ ওভার (মঈন ৭৫, লিটন ৪১, ডু প্লেসি ৩৮, পেরেরা ২/২৮, নাবিল ১/২৪, সৌম্য ১/৩১)
    খুলনা টাইগারস-১২৯, ১৯.৩ ওভার (পেরেরা ২৬, সৌম্য ২২, ইয়াসির ১৮, রনি ৩/১৯, মোস্তাফিজুর ২/১৬, মঈন ২/২০)
    ফলাফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৬৫ রানে জয়ী

     

    খুলনার প্লেঅফের আশায় বড় ধাক্কা দিয়ে হেসেখেলে জিতেছে কুমিল্লা। লিটন দাসের মারকুটে শুরুর পর খুলনা বোলারদের দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছিলেন মঈন আলী। পরে বল হাতেও মঈনের কার্যকর বোলিংয়ের সাথে আবু হায়দার রনির উইকেটে ফেরার দিনে খুলনাকে নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলাই করল কুমিল্লা।

    লিটনের পাওয়ারপ্লে আগ্রাসন

    খালেদ আহমেদ প্রথম ওভারটা যখন ৩ রান দিয়ে শুরু করলেন তখন ঘুণাক্ষরেও মনে হয়নি পরের পাঁচ ওভারে চিত্রটা হবে পুরোই উলটো। দুই চার ও এক ছয়ে নাবিল সামাদের পরের ওভারেই লিটন নেন ১৬ রান। খালেদ আহমেদের পরের ওভারে আসে ১৯ রান! ওই ওভারে একবার কঠিন এক সুযোগ ফেলে দিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। লিটন অবশ্য ছিলেন অবিচল। পাওয়ারপ্লেতে মাহমুদুল হাসান জয় ফিরলেও লিটনের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে কুমিল্লা তোলে ৫৭ রান। পাওয়ারপ্লে শেষ হওয়ার পরের বলেই অবশ্য রানের গতি ধরে রাখতে গিয়ে থিসারা পেরেরার আঘাতে ফেরেন লিটন। এর আগে ৪ চার ও ৩ ছয়ে মাত্র ১৭ বলে ৪১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে যেই শুরুটা করে দিয়ে গিয়েছিলেন সেটার ওপর দাঁড়িয়েই পরে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিলেন মঈন আলী।

    অল রাউন্ড মঈন

    মঈন আলী যখন উইকেটে এলেন তখন ৯.১ ওভারে কুমিল্লার স্কোরবোর্ড বলছে:৭১/২। লিটনের বিদায়ের পর মাঝের দুই ওভারে রানের গতি কিছুটা কমেই এসেছিল। মঈনও এসে কিছুটা সময় নিলেন। ১৩তম ওভারে এরপর মাহেদী হাসানকে তিন ছয় মেরে যে হাত খুললেন, এরপর আর ফিরে তাকাননি। যেই বোলারই সামনে এসেছে তাকেই মাঠছাড়া করেছেন। ফিফটি পূর্ণ করেছেন ২৩ বলে, সৌম্য সরকারের বাউন্সারকে মাঠের বাইরে আছড়ে ফেলে। থিসারাকে বিশাল এক ছয় মারার পর ১৯তম ওভারের শেষ বলে থামেন তিনি। তবে এর আগে মেরেছেন ৯টি ছয়! ৩৫ বলে মঈনের ৭৫ রানের ইনিংসটি যেন মানসিকভাবেই বিধ্বস্ত করে দিয়েছিল খুলনার বোলারদের।

    যেই উচ্চকাঙ্খা নিয়ে কুমিল্লা দলে মঈনকে ভেড়ানো হয়েছিল তারই কিছু ঝলক দেখা গিয়েছিল আগের কয়েকটি ম্যাচে। তবে এদিন মঈন নিজেকে মেলে ধরেছেন সম্পূর্ণরূপে। ৯টি ছয়ের ওই তাণ্ডবলীলার পর বল হাতেও মঈন দেখিয়েছেন নিজের সক্ষমতা। ৭ম ওভারে প্রথমবারের মত বল হাতে নিয়েই ফেরালেন হাত খোলার সুযোগ খুঁজতে থাকা ইয়াসির আলীকে। উইকেটে বেশ কিছু সময় কাটিয়ে সৌম্য সরকার যখন চড়াও হতে যাবেন থিক তখনই এরপর আঘাত হেনেছেন মঈন। ব্যাটে-বলে এদিন মঈন তাই দেখালেন কতটা পটু তিনি।

    মিরপুরের মোস্তাফিজ, অতঃপর রনির আঁটসাঁট বোলিং

    নাহিদুলের প্রথম ওভারে ১৬ রান নিয়ে ‘স্পাইসম্যান’ যখন খুলনাকে এনে দিলেন ‘স্পাইসি’ শুরু তখন মনে হচ্ছিল মিরপুরেও দেখা মিলবে আরেকটি থ্রিলারের। সেসব আশায় পরের ওভারেই জল ঢেলে দিলেন মিরপুরের যম মোস্তাফিজুর রহমান। পরপর দুই বলেই ফেরালেন রনি তালুকদার ও আন্দ্রে ‘স্পাইসম্যান’ ফ্লেচারকে। ওই এক ওভারেই খুলনার ইতিবাচক মানসিকতাকে দুমড়ে মুচড়ে ফেললেন ফিজ।

    এরপর খুলনার মেরুদন্ড পুরোই ভেঙে দিয়েছেন আরেক বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার রনি।  ঘোর বিপদে পড়া খুলনাকে বাঁচাতে পারত যেই মুশফিকুর রহিম তাকেই রনি ফেরালেন নিজের প্রথম ওভারেই, দিলেন উইকেট মেইডেনও! পরের ওভারে রেজাউর রহমান রাজাকেও ফেরালেন তিনি। ফিজ-রনির দারুণ বোলিংয়ের ধারা ধরে রেখেই মাঝে নিয়মিত উইকেট তুলে নিয়েছেন মঈন, নাহিদুল। ১৯তম ওভারে এসে নিজের দুর্দান্ত স্পেলের শেষটাও রনির হয়েছে যথার্থ; তুলির শেষ আঁচড় দিয়েছেন থিসারা পেরেরাকে ফিরিয়ে যেখানে তার বোলিং ফিগার ছিল: ৪-১-১৯-৩। কুমিল্লার বোলিংয়ের এদিন তাই কোনও জবাবই জানা ছিল না খুলনার ব্যাটারদের।