• আইপিএল
  • " />

     

    রাহুলের রেকর্ড সেঞ্চুরির দিনে ঘরে ফিরেও জয়ে ফেরা হল না মুম্বাইয়ের

    রাহুলের রেকর্ড সেঞ্চুরির দিনে ঘরে ফিরেও জয়ে ফেরা হল না মুম্বাইয়ের    

    লক্ষ্ণৌ-মুম্বাই, ওয়াঙ্খেড়ে (টস-মুম্বাই/বোলিং)
    লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস- ১৬৮/৬, ২০ ওভার (রাহুল ১০৩*, পান্ডে ২২, বাদোনি ১৪, পোলার্ড ২/৮, মেরেডিথ ২/৪০, বুমরাহ ১/৩১)
    মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স- ১৩২/৮, ২০ ওভার (রোহিত ৩৯, তিলক ৩৮, পোলার্ড ১৯, ক্রুনাল ৩/১৯, বাদোনি ১/৬, বিষ্ণোই ১/২৮)
    ফলাফল: লক্ষ্ণৌ ৩৬ রানে জয়ী

     

    ওয়াঙ্খেড়েতে ফিরে মুম্বাই হয়ত জয়ের খাতা খোলার জন্য বেশ আশাবাদী ছিল। তবে ওয়াঙ্খেড়ে যে লক্ষ্ণৌ অধিনায়ক লোকেশ রাহুলেরও বড় প্রিয় মাঠ এবং একইসাথে মুম্বাই যে তার সবচেয়ে প্রিয় প্রতিপক্ষ সেটা তো তারা জানতই। মুম্বাইকে আগের ম্যাচেই বিধ্বস্ত করে অপরাজিত সেঞ্চুরি করার পর এই ম্যাচেও হল তাই! অন্য ব্যাটাররা যেখানে ধুঁকেছেন, সেখানে রাহুল মনে হল খেলছেন ভিন্ন কোনও পিচে। মুম্বাইকে আরও একবার পিষ্ট করে ব্যাট কারি করলেন সেঞ্চুরি। তবুও লক্ষ্ণৌয়ের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্য টপকে যাওয়ার ক্ষীণ আশার পালে হাওয়া লাগিয়েছিলেন ফর্মহীনতায় ভোগা অধিনায়ক রোহিত শর্মাই। রাহুলের দারুণ অধিনায়কত্ব আর জেসন হোল্ডার-দুশমন্থ চামিরা-ক্রুনাল পান্ডিয়াদের দারুণ ডেথ বোলিংয়ে এবারও মুম্বাইয়ের সেই আশায় গুড়ে বালি।

    ‘দ্যা কেএল শো’

    মুম্বাইকে পেলেই রাহুলের ব্যাট যে জ্বলে ওঠে সেই ইতিহাস মুম্বাইয়েরও জানা থাকার কথা। ইতিহাসের ধারা বদলে দেবার চেষ্টা মুম্বাই করবেই ভেবেই হয়ত শুরুতে কিছুটা সাবধানী ছিলেন রাহুল। তবে আগের ম্যাচে রাহুলের সাথে যে ভুল কৌশলে এগিয়ে খাদে পড়েছিল মুম্বাই, আবারও সেই একই খাদে পা দিয়েছে মুম্বাই। বাউন্সারে রাহুল বোধহয় উপমহাদেশের সবচেয়ে ভালো ব্যাটারদেরই একজন; পরিসংখ্যানও তার পক্ষে কথা বলে। অথচ জাসপ্রিত বুমরাহ বাদে বাকি তিন পেসারই উইকেটের আশায় তাকে দিয়েছেন বেশ কিছু বাউন্সার; যোগ্য জবাব দিতেও দেরি করেননি রাহুল। যেই রাহুল ২৫ বলে ছিলেন ২৫ রানে, তিনি পরের ১২ বলেই ২৫ রান নিয়ে পূর্ণ করেন ফিফটি। বিশেষ করে ড্যানিয়েল স্যামস, রাইলি মেরেডিথদের বাউন্সারের সকল প্রচেষ্টা ভেস্তে দিয়েছেন প্রতিবার। কাইরন পোলার্ড অন্য প্রান্তে দুই ওভার হাত ঘুরিয়েই মানিশ পান্ডে ও ক্রুনাল পান্ডিয়াকে ফেরালে প্রায় একাই লড়ে যান রাহুল। ১৮তম ওভারে জয়দেব উনাদকাটকে টানা তিন চার মেরে সেঞ্চুরির খুব কাছে চলে গেলেও পরের ওভারে বুমরাহ এসে গোনেন মোটে ৪ রান। শেষ ওভারের প্রথম বলেই মেরেডিথ আবারও বাউন্সার দিলে সেটাকে মাঠছাড়া করে ৬১ বলে আসরে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লক্ষ্ণৌ অধিনায়ক, যা একইসাথে মুম্বাইয়ের বিপক্ষে এবারে তার ২য় ও সব মিলিয়ে মুম্বাইয়ের বিপক্ষে ৩য়। এর আগে দীপক হুডাকে ফেরানো মেরেডিথ শেষ ওভারে আয়ুশ বাদোনিকেও ফেরালে রাহুল অপরাজিত থাকেন ৬২ বলে ১০৩* রানে। অথচ অতিরিক্ত ৮ রানের পাশাপাশি বাকি সবাই মিলে ৫৮ বলে করেছে মোটে ৫৭ রান! এটুকুই বলে দিচ্ছে রাহুলের লড়াইয়ের গল্প, যা ইনিংসটাকে দিয়েছে বাড়তি আরেক মাত্রা।

    রোহিতের ঝড়ো শুরু ভেস্তে ক্রুনাল-হোল্ডার-চামিরাদের ডেথ বোলিংয়ের ঝলক

    হোল্ডার-চামিরা জুটি দারুণ শুরু করে এক প্রান্তে ঈশান কিষানকে বেঁধে ফেললেও অন্য প্রান্তে রোহিত এদিন ছিলেন সপ্রতিভ। পাওয়ারপ্লেতে মুম্বাই যখন ৪৩ রান পূর্ণ করল তখন রোহিতের রান ছিল ১৯ বলে ৩১ যেখানে কিষান করেছিলেন ১৭ বলে ৬! আক্রমণে এসে প্রথম বলেই রবি বিষ্ণোই কিষানের দুর্ভোগের অবসান ঘটালে চাপে পড়ে যান রোহিতও। ডেওয়াল্ড ব্রেভিসও উইকেটে এসেই প্রথম ওভারেই ফিরে গেলে তার পরে সেই চাপেই ক্রুনালকে মাঠছাড়া করতে গিয়ে শেষ হয় রোহিতের ৩১ বলে ৩৯ রানের ইনিংস। এরপরে তিলক ভার্মা যা একটু চেষ্টা করেছিলেন। স্পিনারদের কোণঠাসা হয়ে থাকার পর বিষ্ণোইকে ১৪তম ওভারে দুই ছয় মেরে শিকল ছেড়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছিলেন তিলক। ১৮তম ওভারে হোল্ডার এসে ২৭ বলে ৩৮ রানে থাকা তিলককে ফিরিয়ে ওভারে দেন মোটে ৬ রান। অন্য প্রান্তে একেবারে বিবর্ণ পোলার্ড ঝড় তুলতে পারেননি শেষেও। ১৯তম ওভারে চামিরাও গোনেন মোটে ৫ রান। শেষ ওভারে সবাইকে ছাড়িয়ে মাত্র ২ রান গুনে ক্রুনাল ফেরান পোলার্ড ও স্যামসকে, সাথে রান আউটের শিকার হন উনাদকাট। সেই সাথে মুম্বাই ডোবে টানা আট পরাজয়ের লজ্জায়।