• বাংলাদেশের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর
  • " />

     

    ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর: শঙ্কা নাকি সম্ভাবনা?

    ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর: শঙ্কা নাকি সম্ভাবনা?    

    চার বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টিম বাংলাদেশ। আগামী ১৬ জুন নর্থ সাউন্ড টেস্ট দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের মিশন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নব নিযুক্ত টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের সর্বশেষ সফরেও টেস্ট অধিনায়ক ছিলেন সাকিব। 

     

    সেবারের টেস্ট সিরিজটা একেবারেই ভালো কাটেনি সাকিবদের। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ৪৩ রানে। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। সিরিজের দুটো টেস্টই বাংলাদেশ হেরেছিল বিশাল ব্যবধানে। যদিও এরপর ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সর্বপ্রথম ক্যারিবিয়ান সফরে গিয়েছিল ২০০৪ সালে । সেবার প্রথম টেস্টে ড্র করলেও দ্বিতীয়টিতে হেরেছিল ইনিংস ব্যবধানে। ২০১৪ সালের তৃতীয় সফরেও দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শেষ হয়েছিল বিশাল ব্যবধানের হারে।

    উইন্ডিজের মাটিতে সাদা জার্সিতে বাংলাদেশের একমাত্র সুখস্মৃতি ২০০৯ সালের সফর। সেবার তুলনামূলক দূর্বল এক উইন্ডিজ দলকে সিরিজ হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সেটাই ছিল দেশের বাইরে প্রথম কোনো টেস্ট সিরিজ জয়। সব মিলিয়ে উইন্ডিজের মাটিতে ৮ টেস্ট খেলে ২টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। বাকি ৬ ম্যাচের একটি ড্র হলেও, ৫টিই জিতেছে ক্যারিবিয়ানরা। 

    ২০০৯ সালের সেই সিরিজে দারুণ ছন্দে ছিলেন মাশরাফির স্থলাভিষিক্ত ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ব্যাটে-বলে অনবদ্য পারফর্ম্যান্স করে সিরিজ সেরা হয়েছিলেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। ১৫৯ রান ও ১৩ উইকেট নিয়ে জিতেছিলেন সিরিজ সেরার পুরস্কার। 

    সাকিবদের গত উইন্ডিজ মিশন শুরু হয়েছিল নর্থ সাউন্ড টেস্ট দিয়েই। অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়াম সাক্ষী হয়ে আছে বাংলাদেশের ‘৪৩’ রানে গুটিয়ে যাওয়ার। এবারও সফর শুরু হচ্ছে একই মাঠে। ২০০৮ সাল থেকে এই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হয়েছে মোট ১১টি টেস্ট। পরিসংখ্যান বলছে ম্যাচের প্রথম ইনিংসে বল করা দলের জয়ের পাল্লাই ভারী। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা দল জিতেছে ২ ম্যাচ। আগে বল করা দল জিতেছে ৩ ম্যাচ। এই মাঠে প্রথম ইনিংসের গড় রান ২৮৭। তবে সবচেয়ে বেশি রান উঠে ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে; ৩২৬ রান। 

     

    এই ভেন্যুর সর্বশেষ টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডের পেসাররা মিলে নিয়েছিলেন ২৩ উইকেট। ব্যাটাররাও পিছিয়ে ছিলেন না দৌড়ে। নর্থ সাউন্ড দেখেছিল মোট ৪ সেঞ্চুরি। যদিও সেই টেস্ট ড্র হয়েছিল। তাই বাংলাদেশের মোস্তাফিজ-এবাদতের মতো পেসাররা তাই আশাবাদী হতেই পারেন। আর ওদিকে কেমার রোচদের সামলাতে পারলে তামিম ইকবাল-লিটন দাসদের  জন্যও বড় রান অপেক্ষা করছে।

     

    সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে গ্রস আইলেটের ড্যারেন স্যামি ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। এই মাঠেও হারের দুঃস্মৃতি আছে বাংলাদেশের। দুই টেস্টের একটিতে ড্র করলেও ২০১৪ সালে হেরেছিল ইনিংস ব্যবধানে। মোট ৯ টেস্ট আয়োজন করা এই ভেন্যুতে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা দল জিতেছে চার টেস্ট। বিপরীতে প্রথম ইনিংসে বল করা দল জিতেছে মাত্র একটি। তাই ইনিংস প্রতি গড় রানের গ্রাফটাও নিম্নমুখী। এর নেপথ্যে আছে পেসারদের দাপুটে পারফর্ম্যান্স। এই মাঠের সর্বশেষ টেস্টে দুই দলের পেসাররাই নিয়েছিলেন ৩১ উইকেট। সেই ম্যাচের দুই প্রতিপক্ষ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। 

     

    উইন্ডিজের মাটিতে সাদা পোশাকে বাংলাদেশের সফলতম ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। মোট ৪ টেস্ট খেলে ২৫৭ রান করার সাথে উইকেটও নিয়েছেন ২১টি। এই অলরাউন্ডার এবারও চাইবেন সেই ছন্দ ধরে রাখতে। বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে শীর্ষে আছেন তামিম ইকবাল। ৬ টেস্টে তার সংগ্রহ ৪২৭ রান। তবে দুই দলের বোলারদের মধ্যে সবাইকে ছাপিয়ে গেছেন কেমার রোচ। ৫ ম্যাচে নিয়েছেন ২৯ উইকেট। তবে আসন্ন এই টেস্ট সিরিজে ইনজুরির কারণে ডানহাতি এই পেসার অনিশ্চিত। বিশ্রাম চাওয়ায় অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার জেসন হোল্ডারকেও দেখা যাবে না এই সিরিজে। 

     

    ব্যাট হাতে দুর্দান্ত সময় কাটছে লিটন কুমার দাসের। কদিন আগেই উঠেছেন টেস্ট র‍্যাংকিংয়ের ১২তম অবস্থানে। পেয়েছেন টেস্ট দলের সহ-অধিনায়কত্বও। ঘরের সর্বশেষ শ্রীলংকা সিরিজে করেছে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। সর্বশেষ ৫ ইনিংসে তার রান যথাক্রমে ১১, ২৭, ৮৮, ৫২ ও ১৪১। দারুণ এই ফর্ম ক্যারিবিয়ান দ্বীপেও ধরে রাখতে চাইবেন এই ব্যাটার। 

    দুই দলের সর্বশেষ ৫ দেখাতে এগিয়ে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজই। বাংলাদেশ জিতেছে ২টি, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩টি। নিজেদের শেষ ৫ টেস্টের একটিতে ড্র করলেও চারটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। এদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুই হার ও দুই ড্রয়ের সাথে পেয়েছে একটি জয়ও