"জিদানের অধীনেই সঠিক মূল্যায়ন পায় দল"
রিয়াল মাদ্রিদকে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতিয়েও পরের মৌসুমে শিরোপাশুন্য থাকার দায়ে ম্যানেজারের পদ ছেড়ে যেতে হয়েছিল কার্লো আনচেলত্তিকে। এরপর রাফা বেনিটেজ আসলে রিয়াল দুর্দশা শুধু বাড়তেই থাকে। রোনালদো সহ সিনিয়র অনেক খেলোয়াড়ের অসন্তোষের কারণে বেনিটেজকেও ছাঁটাই করা হলে রিয়ালের ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় জিনেদিন জিদানকে।
আর জিদানের অধীনেই রিয়াল ফিরে পায় তাঁদের পুরনো ফর্ম। কয়েকমাস আগেও শিরোপাবিহীন আরও এক মৌসুম কাটানোর শঙ্কায় ভুগছিলেন যারা, তাঁরাই এখন লিগ আর চ্যাম্পিয়নস লিগ- দু শিরোপার জন্য লড়ছেন! আর এইসবই নাকি ‘জিদান ইফেক্ট’। হাব ভাব এমন কথাই বোঝাতে চাইলেন রোনালদো।
উয়েফা ডট কমকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে কথাগুলো বলেছেন রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা। জিদানের অধীনে দল ভালো করায়, পাকাপাকি ভাবে এই ফ্রেঞ্চকেই রিয়াল মাদ্রিদের ম্যানেজার হিসেবেও দেখতে চান রোনালদো। “খেলোয়াড় জিদানের মতো কোচ জিদানেরও ভক্ত আমি, কারণ জিদানের কোচিং দর্শন। আমরা এখনও একটা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আমার মনে হয় জিদানের অধীনে আমরা আমাদের গুণের যথাযথ মূল্যায়নও পাই। আমি চাই জিদান রিয়ালেই থেকে যাক”।
জিদানই স্থায়ীভাবে রিয়াল মাদ্রিদের ম্যানেজার হচ্ছেন কী না তা অবশ্য এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে এর সাথে যে চ্যাম্পিয়নস লিগ অথবা লা লিগার শিরোপা পাওয়া না পাওয়াও জড়িত- তা বলার অপেক্ষা রাখে না। গুরুকে সাহায্য করতে রোনালদোর চেয়ে ভালো আর কেই বা পারেন! মিলানের ফাইনালে ট্রফিটা উঁচিয়ে ধরতে হলে আগে জিততে হবে ম্যানচেস্টার সিটির সাথে; সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে। রিয়ালের হয়ে গত ৩ ম্যাচ খেলতে না পারা রোনালদো পরের ম্যাচে দলে ফিরবেন কি না তা নিয়েও চলছে গুঞ্জন। অনেকের মতেই রোনালদো থাকলে প্রথম লেগেই সিটিকে ‘খতম’ করে দেয়া যেত! তবে রোনালদো বললেন অন্যকথা- “ম্যানচেস্টার সিটি নিজেদের প্রমাণ করেই সেমিফাইনালে উঠেছে। পিএসজিকে হারান সহজ নয়। ওদের বিপক্ষে জয়টাও সহজ হবে না।“।
রোনালদো থাকলে কী হত বা হত না তা বলা মুশকিল। তবে রোনালদো দলে থাকলে কি হতে পারে তাঁর একটা নমুনা তো মাত্র ক’দিন আগেই পেয়েছে বিশ্ব। ওলফসবার্গের বিপক্ষের ম্যাচে রোনালদোর হ্যাট্রিকেই তো সেমিতে পা রাখল রিয়াল। ওই ম্যাচটাকে রোনালদো মানছেন নিজের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ম্যাচ হিসেবে। “ওটা ছিল আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা আর মনে রাখার মতো রাত।“ কেন মনে রাখার মতো তাও ব্যাখ্যা করলেন পরে- “আমাদের ৩ গোল দরকার ছিল আর সবগুলোই আমি করলাম। শুধু আমার গোলের জন্যই না, পুরো দল অসাধারণ খেলেছে সাথে সমর্থকেরাও পাশে ছিলেন”।
সাথে আরও যোগ করলেন, “চ্যাম্পিয়নস লিগ সবসময়ই আলাদা। প্রতি ম্যাচেই মনে হয় এটা আমার প্রথম! নিজের ঘরের মাঠ লিসবনে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতাটা আরও বেশি অদ্ভুত ছিল।” চ্যাম্পিয়নস লিগই যে ৩১ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডের সবচেয়ে প্রিয় টুর্নামেন্ট তা বোধ হয় বলার অপেক্ষা রাখে না। দু’বছর আগের লিসবনের স্মৃতিটা তো তরতাজাই থাকার কথা। ওই অনুপ্রেরণা কাজে লাগিয়ে মিলানেও আরও একটি চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতবেন কি না রোনালদো তা সময়ই বলে দেবে।