• ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
  • " />

     

    স্টয়নিসের পেশির জোরে পিষ্ট শ্রীলঙ্কা

    স্টয়নিসের পেশির জোরে পিষ্ট শ্রীলঙ্কা    

    সুপার ১২, পার্থ (টস-অস্ট্রেলিয়া/বোলিং)
    শ্রীলঙ্কা- ১৫৮/৬, ২০ ওভার (নিসাঙ্কা ৪০, আসালাঙ্কা ৩৮*, ধনঞ্জয়া ২৬, স্টার্ক ১/২৩, অ্যাগার ১/২৫, হেজলউড ১/২৬)
    অস্ট্রেলিয়া-১৫৮/৩, ১৬.৩ ওভার (স্টয়নিস ৫৯*, ফিঞ্চ ৩১*, ম্যাক্সওয়েল ২৩, ধনঞ্জয়া ১/১৮, করুনারত্নে ১/২০, থিকশানা ১/২৩)
    ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৭ উইকেটে জয়ী

     

    নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বড় পরাজয়ে আসর শুরু করার পর সেমির আশা টিকিয়ে রাখতে অস্ট্রেলিয়ার জন্য জয়টা ছিল বড্ড জরুরী। শ্রীলঙ্কাকে বেশ কিছু সময় বেঁধে রাখার পরেও শেষ ২ ওভারে ৩১ রান গুনে অজিরা তাদের সুযোগ করে দিয়েছিল লড়াকু সংগ্রহ আনার। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে শ্লথ শুরুর পর জয়টাই যখন দূর আকাশের তারা মনে হচ্ছিল তখন উইকেটে এসে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল দেখালেন স্পিনারদের আক্রমণের টোটকা। আর তারই ধারাবাহিকতায় পার্থের বুকে ঝড় বইয়ে এনে মার্কাস স্টয়নিস অস্ট্রেলিয়াকে জয় এনে দিলেন ২১ বল বাকি থাকতে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসের যৌথ ২য় দ্রুততম ফিফটি তুলে নিয়ে স্টয়নিস প্রায় একাই অস্ট্রেলিয়ার রান রেট বাড়িয়ে নেওয়ার লক্ষ্য পূরণ করলেন।

    যেই লক্ষ্য পাওয়ারপ্লের পর প্রায় অসম্ভব মনে হচ্ছিল। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে প্রথমবারের মত পাওয়ারপ্লেতে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাট থেকে আসেনি কোনও বাউন্ডারি। তার ওপর মাহিশ থিকশানার শিকার হয়ে ১১ রানে ডেভিড ওয়ার্নার ফিরেছিলেন; ২ রানে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বল আকাশে ভাসিয়েও বেঁচে গিয়েছিলেন মিচেল মার্শ। পাওয়ারপ্লেতে তাও অজিরা তুলতে পেরেছিল ৩৩ রান।

    পাওয়ারপ্লের পর অবশ্য ওই ধনঞ্জয়ার বলেই বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়ে ১৮ রানে ফেরেন মার্শ। প্রের ওভারেই অবশ্য উইকেটে নবাগত ম্যাক্সওয়েল ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন শ্রীলঙ্কার সেরা বোলার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে ২টি ছয় ও ১টি চার মেরে ১৯ রান তুলে। ১৩তম ওভারে উইকেটের অন্য প্রান্তে ধুঁকতে থাকা অ্যারন ফিঞ্চের ক্যাচ পড়ার পরের বলে ম্যাক্সওয়েলকে ফেরানোর উল্লাসে মাতেন চামিকা করুনারত্নে। ১২ বলে ২১ রান করে ম্যাক্সওয়েল ফিরলেও তার দেখানো পথেই হাঁটেন স্টয়নিস। ব্যাটে-বলে যে হচ্ছে না ফিঞ্চ ততক্ষণে বুঝে নিয়ে কেবল প্রান্ত বদলে মনোযোগ দেন।

    আর সেখান থেকেই নিজের খেলাটা খেলা শুরু করেন স্টয়নিস। দাসুন শানাকার ওভারে উইকেটের পেছনে সৌভাগ্যজনক দুটি বাউন্ডারি পেলেও পরের ওভারে হাসারাঙ্গাকে সপাটে পিটিয়ে নিলেন ১৯ রান। পাওয়ারপ্লেতে দুই ওভারে মোটে ৩ রান দেওয়া থিকশানার সাথেও একই আচরণ করলেন ‘হাল্ক’। ৩ ছয়ে ওভারে নিলেন ২০ রান; ওভারের শেষ বলে ছয় মেরে ১৭ বলে ফিফটি পূর্ণ করে অস্ট্রেলিয়ার দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডও গড়লেন। পরের ওভারে লাহিড়ু কুমারাকেও মাঠছাড়া করলেন। অন্য প্রান্তে ৪২ বলে ৩১* রানে ফিঞ্চ টিকে থাকলে ১৮ বলে ৫৯* রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে বিগ স্টয়ন অস্ট্রেলিয়াকে এনে দিলেন অনায়াস জয়।

    এর আগে যেই জয়ের স্বপ্ন দেখছিল শ্রীলঙ্কা। সেই স্বপ্ন তারা দেখতে পেরেছিল চারিথ আসালাঙ্কা আর করুনারত্নের জন্য। ভাল শুরু করেও অ্যাগার, হেজলউড, স্টার্কদের দক্ষতায় উইকেটে একেবারে কোণঠাসা হয়ে গিয়েছিলেন পাথুম নিসাঙ্কা ও ধনঞ্জয়া। ৪৫ বলে ৪০ রান করে রান আউট হয়ে নিসাঙ্কার দুঃসহ ইনিংস শেষ হলে ২৩ বলে ২৬ রান ধনঞ্জয়া ফেরেন অ্যাগারের শিকার হয়ে। উইকেটে আসা আসালাঙ্কাও শুরুর দিকে খুব একটা সুবিধা করতে পারছিলেন না। তবে ডেথ ওভারে করুনারত্নেকে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাউন্ডারি বের করার পাশাপাশি কামিন্সের করা শেষ ওভারে নেন ২০ রান। ২৫ বলে ৩৮* রান করে আসালাঙ্কা ও  ৭ বলে ১৪* রান করে করুনারত্নে লড়াইয়ের যে উপলক্ষ লঙ্কানদের এনে দিয়েছিলেন সেটা ভন্ডুল করে পেশির শক্তি দেখিয়ে স্টয়নিস ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছেন চোখের পলকে।