• আইপিএল ২০২৩
  • " />

     

    গুজরাট টাইটান্সঃ 'উইলিয়ামসন-দ্বিধা', ভরসা রশিদ-সামি?

    গুজরাট টাইটান্সঃ 'উইলিয়ামসন-দ্বিধা', ভরসা রশিদ-সামি?    

    এলেন কারা, গেলেন কারা

    লকি ফার্গুসন ও রাহমানউল্লাহ গুরবাজকে ট্রেডে নিলামের আগেই ছেড়ে দিয়েছিল গুজরাট। দশ কোটির ফার্গুসনকে ছাড়ার সুবাদে নিলামে নামতে পেরেছিল পকেট বড় করেই। শিভাম মাবির পেছনে ছয় কোটির মতো খরচা গেছে, দেশি আরেক পেসার অভিজ্ঞ মোহিত শর্মাকেও দলে এনেছে গুজরাট। আইরিশ বাঁহাতি পেসার জসুয়া লিটল প্রথম আইপিএলের স্বাদ পেতে যাচ্ছেন গুজরাটের ডাগআউটে বসে। নতুন দুই উইকেটকিপারকে ভিড়িয়েছে এবার তারা- আনকোরা উরভিল প্যাটেল এবং ইতোমধ্যেই দিল্লি ও ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে খেলা স্রীকর ভারত। বিদেশি আরও দুজনও চ্যাম্পিয়ন দলে যোগ দিচ্ছেন- কেন উইলিয়ামসন ও ওডিন স্মিথ। 

    সম্ভাব্য সেরা একাদশ

    কেন উইলিয়ামসনকে একাদশে রাখতে হলে বিদেশি এক পেসার কিংবা অলরাউন্ডারকে বাদ দিতে হবে। অলরাউন্ডার ওডিন স্মিথকে বাদ দিয়ে দেশি ব্যাটার রাখলে হার্দিককে পঞ্চম বোলারের দায়িত্ব নিতে হবে। পুরোদমে বোলিংয়ে ফিরলেও হার্দিকের ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের জন্য এমনটা করার ঝুঁকি পুরো মৌসুমে হয়তো নিবে না গুজরাট। ওডিনকে আবা্র বোলিংয়ে জন্য একাদশে জায়গা দিলে আলজারি জোসেফ কিংবা জস লিটলকে খেলানোর সুযোগ থাকবে না। ভরসা রাখার মতো দেশি পেসাররা যদিও আছেন তাদের ডেরায়। তবে কন্ডিশন বিবেচনায় বাড়তি স্পিনার খেলাতে চাইলে দারুণ অপশন সাই কিশোর। 

    ১. শুভমান গিল

    ২. ঋদ্ধিমান সাহা

    ৩. সাই সুদর্শন

    ৪. হার্দিক পান্ডিয়া

    ৫. ডেভিড মিলার

    ৬. রাহুল তেওয়াতিয়া

    ৭. ওডিন স্মিথ/ম্যাথু ওয়েড

    ৮. রশিদ খান

    ৯. আলজারি জোসেফ/জসুয়া লিটল

    ১০. মোহাম্মদ শামি

    ১১. ইয়াশ দায়াল / শিভাম মাবি

    ব্যাটিং- লোয়ার-মিডল অর্ডার নিয়ে সংশয়, টপ অর্ডারে কোন টোটকা

    পাওয়ারে পরিপুষ্ট মিডল অর্ডার। হার্দিক পান্ডিয়ার পাওয়ারের সাথে আছে পরিস্থিতি বুঝে খেলারও সক্ষমতা, গেল আসরেই যার নজির মিলেছে অনেকবার। ফর্মে ফেরা ডেভিড মিলারকে গুজরাট পেয়েছিল গতবার, এবার তো দারুণ ফর্ম সঙ্গে করেই আসছেন বিধ্বংসী এই ব্যাটার। আরেক বাঁহাতি তেওয়াতিয়ার কাছে গুজরাটের আশা এবার থাকবে বেশি। ফিনিশিংয়ের জন্য তিনি সঙ্গ পাবেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান অলরাউন্ডার ওডিন স্মিথের। ফিনিশিংয়ে আরেক অপশন ম্যাথু ওয়েড। ঘরোয়া ক্রিকেটে পাওয়ার হিটিংয়ে পরিচিত আভিনাব মনোহার, তবে গেল আসরে ৮ ম্যাচে ১০৮ রানই করেছিলেন কেবল। গুজরাটের লোয়ার মিডল-অর্ডার নিয়ে সংশয় থাকছেই। তেওয়াতিয়া-ওডিন-মনোহারদের সেক্ষেত্রে জ্বলে উঠা দরকার। 

    গুজরাটের ব্যাটিং লাইনআপের শেষের দিকের আরেকজন রশিদ খান- নিজের ব্যাটিংটাকেও এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় যিনি। সবমিলিয়ে তবু ব্যাটিং ঠিকঠাক মনে হলেও গুজরাটের মাথা ঘামাতে হতে পারে টপ অর্ডার নিয়ে। যেকোন ফরম্যাটেই ফর্ম বড় ব্যাপার, সেক্ষেত্রে শুভমান গিলকে ঘিরে বড় কিছুর প্রত্যাশায় থাকবে গুজরাট। টি-টোয়েন্টির সুরটাও ধরতে শুরু করেছেন গিল। ওপেনিংয়ে তার সঙ্গী সাহা গেল আসরে খেলেছেন ১২০-এর আশপাশের স্ট্রাইক রেটে। 

    বড় প্রশ্ন, নাম্বার থ্রি কে? গেল আসরেও যে প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়িয়েছে গুজরাট। দেশিদের মধ্যে কেএস ভারত, সাই সুদর্শনকে বাজিয়ে দেখা যেতে পারে, বিদেশিদের মধ্যে আছেন কেন উইলিয়ামসন৷ কিন্ত ধীরগতির ব্যাটার উইলিয়ামসনকে খেলালে পাওয়ারপ্লেতে ঝড়ো শুরুটা কীভাবে পাবে গুজরাট, সে প্রশ্ন চলেই আসে। সাহা-গিল ওপেনিংয়ে থাকলে প্রথম চার ব্যাটারই আবার ডানহাতি হয়ে যাওয়াটা এড়াতে চাইলে নাম্বার থ্রিতে প্রয়োজন এক বাঁহাতির। দেশিদের মধ্যে পরিক্ষিত টপ অর্ডার ব্যাটারদের অভাব আছে। এই নাম্বার থ্রি তাই গুজরাটকে টপ অর্ডার নিয়ে অন্তত নিশ্চিন্তে থাকতে দিচ্ছে না। নেহরা-হার্দিক ম্যানেজমেন্ট কোন টোটকা কাজে লাগাতে চলেছেন তাহলে?

    বোলিং- স্পিন আর পাওয়ারপ্লের পেসে প্রস্তত, ডেথ নিয়ে দুর্ভাবনা

    পাওয়ারপ্লে বোলিংয়ে বিকল্পের ছড়াছড়ি গুজরাটের বোলিং লাইনআপে। নতুন বলের উস্তাদ মোহাম্মদ শামি আছেন। সুইংয়ে ভালোই মুন্সিয়ানা দেখাতে পারেন হার্দিক পান্ডিয়াও। বাঁহাতি অপশনের মধ্যে ইয়াশ দায়ালও শুরুতে বোলিংয়ে ভালোই দক্ষ। নতুন সংযোজন জসুয়া লিটলও মুভমেন্ট পেলে বেশ কার্যকর।

    কিন্ত ডেথ বোলিংয়ের জন্য খুব প্রসিদ্ধ কেউ নেই গুজরাটে। নতুন আগত শিভাম মাবিকেও এখনও ডেথের পরীক্ষায় ঠিকঠাক উতরাতে দেখা যায়নি। গত তিন আসরে শেষ চার ওভারে তার ইকোনমি দশের উপরে, শামিরও তাই। জোসেফ-শামিদের গেল আসরে ডেথে ইকোনমি ছিল দশের কাছাকাছি। আলজারি জোসেফ, মোহাম্মদ শামিদেরই সেক্ষেত্রে নিজেদের ডেথ বোলিংয়ে উন্নতির ছাপ রাখতে হবে। লম্বা টুর্নামেন্টে ইনজুরির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারা গুরুত্বপুর্ণ, গুজরাট অবশ্য ভালোই বিকল্প রেখেছে বোলিং আক্রমণে। তাদের প্লাস পয়েন্ট, ব্যাটিং অর্ডারের টপ সাতের দুজনের থেকে কয়েকটি ওভার পাওয়া। হার্দিক পান্ডিয়া তো পুরোদস্তর বোলারই বলা চলে, তেওয়াতিয়াও দিতে পারেন এক-দুই ওভার।

    স্পিন বিভাগে রশিদ খানই বড় শক্তি, তার সাথে আছেন সাই কিশোর। গেল আসরে যিনি নিজের সক্ষমতার ভালোই জানান দিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনে। কন্ডিশন-প্রতিপক্ষ বিবেচনায় খেলাতে ডানহাতি স্পিনার জায়ান্ত যাদবও আছেন গুজরাট ডাগআউটে। ডেথ বোলিংয়ের দুশ্চিন্তা কিছুটা সরিয়ে রাখতে পারলেই শিরোপা ধরে রাখার মিশনে গুজরাটের বোলিং প্রস্ততই মনে হচ্ছে। 

    কুঁড়ি থেকে ফুল হওয়ার পালা

    সাই সুদর্শন। বাঁহাতি এই ব্যাটারকে গেল আসরের নিলামের আগে ছয় ছয়টি ফ্র্যাঞ্চাইজি ট্রায়ালের জন্য ডেকেছিল। গুজরাট তাকে কেনার পর বাইশ বছরের প্রতিভাবান এই তরুণ গত আসরে কিছুটা ঝলক দেখিয়েছেন। ৫টি ম্যাচে সুযোগ পেয়ে করেছিলেন ১৪৫ রান। গুজরাটের টপ অর্ডারে যে অনিশ্চিয়তা, তা মেটাতে যদি সাই সুদর্শনকে ভাবা হয়, তবে সেটি হবে তার জন্য বড় সুযোগ। 

    গেলবারের অবস্থান

    প্রথমবার আইপিএলের মঞ্চে আগমনেই শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিল হার্দিক বাহিনী।