• আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশ সফর
  • " />

     

    লিটন-রনির দমকা হাওয়ার পর তাসকিনের তান্ডবে বাংলাদেশের জয়

    লিটন-রনির দমকা হাওয়ার পর তাসকিনের তান্ডবে বাংলাদেশের জয়    

    ১ম টি-টোয়েন্টি, চট্টগ্রাম (টস-আয়ারল্যান্ড/বোলিং)
    বাংলাদেশ- ২০৭/৫, ১৯.২ ওভার (রনি ৬৭, লিটন ৪৭, শামীম ৩০, ইয়াং ২/৪৫, টেক্টর ১/১৬, হিউম ১/৩৫)
    আয়ারল্যান্ড- ৮১/৫, ৮ ওভার (ডিলেনি ২১*, টাকার ১৯, স্টার্লিং ১৭, তাসকিন ৪/১৬, হাসান ১/২০)
    ফলাফল: বাংলাদেশ ২২ রানে জয়ী (ডি/এল মেথডে)


     

    বৃষ্টি বাগড়া দিলেও জয়ের হাসি নিয়েই সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ। লিটন দাস-রনি তালুকদারের বিস্ফোরক ওপেনিং জুটির পর শামীম হোসেন পাটওয়ারি, সাকিব আল হাসানদের ক্যামিওতে চট্টগ্রামে প্রথমবারের মত ২০০+ সংগ্রহ পেয়েছিল বাংলাদেশ। বৃষ্টিতে আয়ারল্যান্ডের লক্ষ্য ছোট হয়ে এলে তাসকিন আহমেদের ৪ উইকেটের বিধ্বংসী স্পেলে শুরুর ধাক্কা সামলে পরে সহজ জয়ই পেয়েছে টাইগাররা।

    ৮ ওভারে ১০৪ রানের লক্ষ্য নিয়ে ঝড়ো শুরু করেছিল আয়ারল্যান্ড। নাসুম আহমেদের করা প্রথম ওভার থেকে পল স্টার্লিং-রস অ্যাডেয়ার জুটি নিলেন ১৬ রান। মোস্তাফিজুর রহমানের করা পরের ওভার থেকেও সমান সংখ্যক রান এলে বাংলাদেশ শিবিরে জাগে শঙ্কা। সেই শঙ্কা পরের ওভারে এসেই লাঘব করেন হাসান মাহমুদ। টানা তিনটি ডট দেওয়ার পর দারুণ এক ইয়র্কারে উপড়ে ফেললেন ১৩ রানে থাকা অ্যাডেয়ারের স্টাম্প; ওভারে দিলেন মোটে ৫ রান। পরের ওভারে তাসকিন আহমেদ এসে যেন নিজেকে আরও ওপরে নিয়ে গেলেন। লরকান টাকারের স্টাম্প উপড়ে ওভার শুরু করে পরে টানা দুই বলে ফেরালেন স্টার্লিং ও জর্জ ডকরেলকে। হ্যাটট্রিক না হলেও ৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ওই ওভারেই যেন আয়ারল্যান্ডের আশায় জল ঢেলে দিলেন।

    হাসানের দ্বিতীয় ওভারে অবশ্য ১৬ রান নিয়ে টাকার জিইয়ে রেখেছিলেন আইরিশদের আশা। তবে এরপর সাকিব আল হাসান এসে দেন মাত্র ৫ রান; সাথে মোস্তাফিজও ৬ষ্ঠ ওভারে ৭ রান দিলে আইরিশদের সম্ভাবনা কার্যত শেষ হয়ে যায়। তাদের যন্ত্রণা আরও বাড়িয়ে শেষ ওভারের প্রথম বলেই মেহেদী হাসান মিরাজের দুর্দান্ত ক্যাচে ১৯ রানে থাকা টেক্টরকে ফিরিয়েছিলেন তাসকিন। অন্য প্রান্তে ২১* রানে গ্যারেথ ডিলেনি টিকে থাকলেও বাংলাদেশ তাই ছিনিয়ে নিয়েছে জয়।

    এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা দারুণ করেছিল বাংলাদেশ। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারের প্রথম বলে ৩৯ রানে থাকার সময় এক্সট্রা কাভারে কঠিন এক সুযোগ দিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন লিটন। তবে তাতে বিচলিত না হয়ে ধরে রাখেন আক্রমণের ধারা। ওই ওভারে অন্য প্রান্তে থাকা রনি পরে ১তি চার ও ৩টি ছয় মারলে মার্ক অ্যাডেয়ার গুনেন ২০ রান। আর বাংলাদেশ পেয়ে যায় নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বোচ্চ পাওয়ারপ্লে সংগ্রহ (৮১ রান)।

    তবে ৭ম ওভারে এসে ক্রেইগ ইয়াং ভাঙেন ৯১ রানের দুর্ধর্ষ জুটি। স্লোয়ারের সমাধা করতে না পেরে মিড অফে ক্যাচ তুলে দিয়ে লিটন থামেন ২৩ বলে ৪৭ রানে। রনি তবে থামেননি; পরের ওভারে টানা দুই চার মেরে পেয়ে যান নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ফিফটির দেখা, সেটাও মাত্র ২৪ বলে। ম্যাচের ধারার বিপরীতে ১১তম ওভারে ১৪ রানে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন হ্যারি টেক্টর। সেটাকে পাত্তা না দিয়ে ঠিক পরের ওভারেই রনির সাথে জুটি বেঁধে উইকেটে নবাগত শামীম হোসেন পাটওয়ারি ওভার থেকে নেন ১৮ রান। ১৪তম ওভারে এসে অবশ্য দারুণ বোলিং করে গ্র্যাহাম হিউম থামিয়ে দেন রনিকে। কিছুটা ধীরগতির বলে স্টাম্প উপড়ে ফেললে শেষ হয় ৩৮ বলে খেলা রনির ৬৭ রানের দারুণ ইনিংস। ভালো শুরু করা শামীমও এরপর পথ হারিয়ে ফেরেন অ্যাডেয়ারের শিকার হয়ে, ২০ বলে ৩০ রান করে।

    উইকেটে নতুনদের পেয়ে চেপে ধরার চেষ্টা করে এরপর আয়ারল্যান্ড। সেই সুত্রে তাওহিদ হৃদয়কে ১৯তম ওভারের শেষ বলে ফেরান ইয়াং। তবে ততক্ষণে হৃদয়ের ১৩ রানের সাথে সাকিবের প্রচেষ্টায় চট্টগ্রামে প্রথমবারের মত দুইশো পেরিয়ে যায় বাংলাদেশ। বৃষ্টির কারণে শেষ ওভারে ২ বল খেলার পর থামতে হলে বাংলাদেশকে সন্তুষ্ট থাকতে হয় নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের ৩য় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ নিয়ে। বৃষ্টির কারণে পরে লক্ষ্য সংশোধিত হলে সেটাও আইরিশদের নাগালের বাইরে নিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ।