• আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশ সফর
  • " />

     

    নিয়ন্ত্রিত বোলিং, স্টার্লিংয়ের সাঁড়াশি আক্রমণে ওয়াইটওয়াশ এড়াল আয়ারল্যান্ড

    নিয়ন্ত্রিত বোলিং, স্টার্লিংয়ের সাঁড়াশি আক্রমণে ওয়াইটওয়াশ এড়াল আয়ারল্যান্ড    

    ৩য় টি-টোয়েন্টি, চট্টগ্রাম (টস-বাংলাদেশ/ব্যাটিং)
    বাংলাদেশ- ১২৪, ১৯.২ ওভার (শামীম ৫১, রনি ১৪, নাসুম ১৩, অ্যাডেয়ার ৩/২৫, হামফ্রিস ২/১০, ডিলেনি ১/৭)
    আয়ারল্যান্ড- ১২৬/৩, ১৪ ওভার (স্টার্লিং ৭৭, ক্যাম্ফার ১৬*, টেক্টর ১৪*, রিশাদ ১/১৯, তাসকিন ১/২৮, শরিফুল ১/২৫)
    ফলাফল: আয়ারল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী


     

    ওয়াইটওয়াশ এড়িয়ে প্রবল প্রতাপে সিরিজ শেষ করল আয়ারল্যান্ড। শামীম হোসেন পাটওয়ারির একাকী লড়াইয়ের পরেও বাংলাদশকে স্বল্প রানে গুটিয়ে ফেলার পর অধিনায়ক পল স্টার্লিংয়ের দুর্দান্ত ফিফটিতে সহজেই জয় পেয়েছে তারা। বাংলাদেশকে তাই সিরিজ শেষ করতে হল ২-১ ব্যবধানের জয়ের সন্তুষ্টি নিয়ে।

    ১২৫ রানের লক্ষ্যে তৃতীয় ওভারেই রস অ্যাডেয়ারকে হারিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। তাসকিন আহমেদ তার স্টাম্প উপড়ে হুংকার দিলেও অবিচল থেকে আক্রমণের ঝান্ডা বহন করেন স্টার্লিং নিজেই। হাসান মাহমুদের করা পরের ওভারেই একটি করে ছয় চারে নেন ১৪ রান। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে শরিফুল ইসলামের শিকার হয়ে অন্য প্রান্তে থাকা লরকান টাকার ফিরলেও ততক্ষণে আয়ারল্যান্ড তুলে ফেলেছিল ৪৭ রান।

    পাওয়ারপ্লের পর এক প্রান্তে হ্যারি টেক্টর রয়েসয়ে খেললে অন্য প্রান্তে আক্রমণের ধারা অব্যাহত রাখেন স্টার্লিং। ১০ম ওভারে ৩১ বলে ফিফটি পূর্ণ করার পরের ওভারে শরিফুলকে মারেন টানা ১টি ছয় ও ৩টি চার; ওভারে আসে ২০ রান। ম্যাচ সেখানেই কার্যত শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের জন্য। তবে মন্দের ভাল হয়ে ১৩তম ওভারে বাংলাদেশ পেয়েছিল সুসংবাদ। রিশাদ হোসেন অভিষেকেই পেয়ে যান আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় উইকেটটাই। অফ স্টাম্পের ওপর ভাসানো বলে স্টার্লিং সজোরে ব্যাট চালালেও শান্তকে সহজ ক্যাচ দিয়ে থামেন তিনি। রিশাদের আঘাতে তাই শেষ হয় তার ৪১ বলে ৭৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। পরে উইকেটে এসে ৯ বলে ১৬* রান করে ১৪ ওভারেই ম্যাচের ইতি টানেন ক্যাম্ফার।

    এর আগে বল হাতেও শুরুটা দারুণ হয়েছিল আইরিশদের। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা লিটন দাসকে মামুলি এক বলে ডিপ পয়েন্টের ফাঁদে ফেলে মার্ক অ্যাডেয়ার প্রথম আঘাত হানেন দ্বিতীয় ওভারেই। পরের ওভারেই ডিপ মিড উইকেটে সহজ এক ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ওভার ঘুরতে না ঘুরতেই এবার আক্রমণে এসে একই জায়গায় তালুবন্দি করিয়ে রনি তালুকদারকে ফেরান ক্যাম্ফার। বাংলাদেশকে ঘুরে দাঁড়ানোর কোনও সুযোগ না দিয়ে অ্যাডেয়ার পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে পেয়ে যান তার দ্বিতীয় উইকেট। খাটো লেংথের বলে সংযোগ করতে না পারায় সহজ ক্যাচ দিয়ে সাকিব আল হাসান ফিরলে পাওয়ারপ্লেতে বাংলাদেশ তুলতে পারে ৪১ রান।

    পাওয়ারপ্লের পরের ওভারে আরও এক নতুন বোলার এসেই পেয়ে যান উইকেট। বেঞ্জামিন ওয়াইটের আউটসুইংয়ে সজোরে ব্যাট চালিয়েও মিড উইকেটে ক্যাচ অনুশীলনের সুযোগ করে দিয়ে ১২ রানে ফেরেন তাওহিদ হৃদয়। রিশাদ হোসেনকে নিয়ে এরপর শামীম ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করলে দশম ওভারে আসে বাধা। নবম ওভারের প্রথম বলেই রিশাদ হোসেনকে ফেরানোর এক বল পরেই তাসকিন আহমেদকে ফেরান প্রথম বল হাতে নেওয়া ম্যাথিউ হামফ্রিস। নাসুমকে নিয়ে এরপর লড়াইটা চালিয়ে গিয়েছেন শামীম। হামফ্রিসের মত ১৬তম ওভারে প্রথম বল হাতে তুলে নিয়ে প্রথম বলেই উইকেট পেয়ে যান গ্যারেথ ডিলেনি। শিকার এবার ১৩ রানে থাকা নাসুম। পরের ওভারে সজোরে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে অ্যাডেয়ারের তৃতীয় শিকার হয়ে ফেরেন শরিফুল। সেসময়ে ৩২ বলে ৩৩ রানে থাকা শামীম তাই নিঃসঙ্গ লড়াইটার গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন। ১৯তম ওভারে দারুণ এক ছয় মারার পর ফাইন লেগের ওপর দিয়ে বল তুলে দিয়ে অল্পের জন্য রেহাই পান; সেই সাথে সেটা চার হয়ে গেলে ৪০ বলে পেয়ে যান নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ফিফটি। শেষ ওভারে সেই ৫১ রানে থেকেই হ্যান্ডের শিকার হয়ে শামীম ফিরলে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। দিনশেষ বাংলাদেশের স্বল্প সেই পুঁজি অনায়াসে টপকে গিয়েছে আইরিশরা।