• আইপিএল ২০২৩
  • " />

     

    বুমরাহীন বোলিংয়ের ভরসা আর্চার? সুরিয়ার সুরে ফিরবে মুম্বাই?

    বুমরাহীন বোলিংয়ের ভরসা আর্চার? সুরিয়ার সুরে ফিরবে মুম্বাই?    

    এলেন কারা, গেলেন কারা

    পোলার্ড নেই মুম্বাই দলে, অবসর নিয়ে আইপিএলেও আর নেই। সম্ভাবনায় অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিনকে দলে ভিড়িয়েছে মুম্বাই। গেলবারের স্কোয়াড থেকে ছাঁটাই করেছে দুই পেসার মিলনে ও মেরেডিথকে, দেশি দুই পেসার বাসিল থাম্পি ও জায়দেব উনাদকেতকেও। ট্রেডে বেঙ্গালুরু থেকে এনেছে বেহরেনডরফকে, আরেক অজি বাঁহাতি পেসার ঝাই রিচার্ডসনকে কিনলেও পাচ্ছে না ইনজুরির কারণে। ধরে রাখেনি অলরাউন্ডার ড্যানিয়েল স্যামস ও ফ্যাবিয়ান অ্যালেনকে। গ্রিনের সঙ্গে যুক্ত করেছে অলরাউন্ডার ডোয়ান ইয়ানসেনকে। দেশি দুই লেগি মুরুগান অশ্বিন ও মায়াঙ্ক মার্কেন্ডেকে বিদায় করে এনেছে পিয়ুস চাওলাকে। সব বিভাগেই যুক্ত করেছে দেশি আরও কয়েক আনকোরা ক্রিকেটার। 

    সম্ভাব্য সেরা একাদশ

    বিদেশি দুই পেসার রাখলে ব্রেভিস ও স্টাবসকে সুযোগের অপেক্ষায়ই থাকতে হবে। 

    ১। রোহিত

    ২। কিষাণ

    ৩। সুরিয়া

    ৪। তিলক

    ৫। ডেভিড

    ৬। গ্রিন

    ৭। রামানদিপ

    ৮। হৃতিক / চাওলা

    ৯। আর্চার

    ১০। কার্তিকেয়া

    ১১। বেহরেনডরফ 

    ব্যাটিং: সুরিয়ার সুরে তাল মেলাতে পারবেন বাকিরা?

    গেলবারের মুম্বাইয়ের ব্যাটিংয়ের সঙ্গে এবার বড় পার্থক্য, পোলার্ডের অনুপস্থিতি। ডেভিডের নিয়মিত উপস্থিতিও তো! ২১৬ স্ট্রাইক রেটে ৮ ম্যাচেই গেলবার করেছিলেন ১৮৬ রান, সেই ডেভিডেরই পুরো মৌসুমে খেলার সুযোগ হয়নি। দুর্বিষহ সময় ছিল পোলার্ডের, ১০৭ স্ট্রাইক রেটে ১১ ম্যাচে ১৪৪ রান, ভাবা যায়! মুম্বাইয়ের মিডল অর্ডারে পোলার্ডেরই ভূমিকায় এবার থাকবেন পাওয়ারফুল ডেভিড। 

    মুম্বাই ডাগআউটে নবীন সদস্য ক্যামেরন গ্রিন। টি-টোয়েন্টির দুনিয়ায় ওপেনিংয়ের সাফল্যই যার দিকে চোখ নিতে বাধ্য করেছিল। মুম্বাই তাকে খেলাবে কোথায়? ওপেনিংয়ে গেলবার রোহিত করেছেন ১২০ স্ট্রাইক রেটে ২৬৮ রান, রানের হিসেবে তার সবচেয়ে খারাপ আসর। ২০ এর কম গড়ও তার থাকেনি কোন মৌসুমেই। একটাও ফিফটি পাননি, সেটিও আইপিএলে প্রথম। ইশান কিষাণ চার শর মতো রান করলেও তার স্ট্রাইক রেট ১২০ এর উপরে যায়নি। রোহিত-কিষাণেই ভরসা রাখবে এবারও মুম্বাই, নাকি ওপেনিংয়ে মিলবে জায়গা গ্রিনের? যদিও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আগে টি-টোয়েন্টিতে মিডল অর্ডারেই ছিলেন গ্রিন।

    গেল আসরে মুম্বাইয়ের ব্যর্থতার আকাশেও উজ্জ্বল তারা হয়ে ছিলেন তিলক। আরও দুই প্রোটিয়া তরুণ ব্যাটার, ব্রেভিস ও স্টাবস সময়ের সাথে আরও পরিণত হয়েছেন নিশ্চয়ই। দেশিদের মধ্যে রামানদীপের হিটিংয়ের সুনাম আছে ঘরোয়া ক্রিকেটে। মুম্বাইয়ের ব্যাটিংয়ে সামর্থ্যের ঘাটতি নেই খুব একটা। তবে মুম্বাইয়ের মূল শক্তি সেই সুরিয়াই, গেল কয়েক আসর ধরেই রানের ফোয়ারা ছুটিয়েছেন, কিন্ত একটা ওরেঞ্জ ক্যাপের মালিক হওয়ারও বুঝি সময় এলো! 

    বোলিং: চোটে জর্জরিত বোলিংয়ে থাকছে কোন চমক? 

    বুমরাহ ও আর্চার, একেকটা দলেরই মূল অস্ত্র একেকজন। সেই দুজনই একই দলে, ভাবুন তো! এখনও ব্যাপারটা ভাবতেই হচ্ছে, বুমরাহ-আর্চার জুটি বাস্তবে দৃশ্যায়নের পথে এবারও যে বাধা হয়ে দাঁড়াল ইনজুরি। আর্চার খেলতে পারবেন না, তা জেনেও ২০২২ আইপিএলের নিলামে তার পেছনে চড়া মূল্য ঢেলেছিল মুম্বাই। ২০২৩ এ চোখ ছিল তাদের! কিন্ত এবার নেই বুমরাহ। 

    বুমরাহর রেখে যাওয়া ফাঁকা স্থান পূরণ করবে কীভাবে মুম্বাই, সে দুশ্চিন্তায় আরও ঘি ঢেলেছে ঝাই রিচার্ডসনের ছিটকে যাওয়া। আর্চারের সঙ্গে আরেক বিদেশি অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি পেসার জেসন বেহরেনডরফকে খেলাতে পারে। বিদেশি বিকল্প আর আছেন বাঁহাতি পেস অলরাউন্ডার ডোয়ান ইয়ানসেন। মার্কো ইয়ানসেনের পর এবার তার যমজ ভাইও পা রাখছেন আইপিএলে। ক্যামেরন গ্রিনের সঙ্গে দেশি রামানদিপেরও বোলিং থাকবে হাতে। তবে আইপিএলের মঞ্চে এবারই প্রথম নামবেন, এমন দেশি কয়েক পেসারই কেবল আছেন মুম্বাইয়ের ডেরায়। একেবারে আনকোরা দেশি পেস আক্রমণে আছেন দুই বাঁহাতি পেসার আরশাদ খান ও অর্জুন টেন্ডুলকার এবং ডানহাতি আকাশ মাধওয়াল। বুমরাহর বদলি সান্দীপ ওয়ারিয়ের, ডানহাতি যে পেসারের ৫ ম্যাচে ২ উইকেটের আইপিএল অভিজ্ঞতা। 

    স্পিন বিভাগও ততটা শক্তিশালী নয়। অফ স্পিনার হৃতিক শখিন গেল মৌসুমে ৫ ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন, সাড়ে আট ইকোনমিতে নিয়েছেন মাত্র ২ উইকেট। বাঁহাতি ‘বহুজাত’ স্পিনার কার্তিকেয়া ৪ ম্যাচেই অবশ্য মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন, ২০ গড়ে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। শখিন-কার্তিকেয়া, অভিজ্ঞতায় দুজনই সমৃদ্ধ না হলেও দেখিয়েছেন, ভরসা করা যেতে পারে তাদের উপর। কার্তিকেয়ার এবছর বড় কিছু করার সুযোগ! স্পিন বিভাগে যুক্ত হয়েছেন পিয়ুস চাওলা, অভিজ্ঞ এই লেগি ক্যারিয়ারের শেষবেলায় এসে কতটুকু করতে পারবেন, সে সংশয় থাকেই। 

    ঘরের মাঠে সাত ম্যাচ খেলবে, ওয়াঙ্কেড়েতে তো মূল ভুমিকা থাকবে পেসারদেরই। পেসে তাহলে কী করবে মুম্বাই? নতুন কোচ মার্ক বাউচার বলেছেন, মুম্বাইয়ের বোলিংয়ে থাকছে 'সারপ্রাইজ'। সে চমকেরই অপেক্ষায় থাকতে হয়!

    কুঁড়ি থেকে ফুল হওয়ার পালা

    তিলক ভার্মা আর নতুন কেউ নন। নিজের প্রথম আইপিএল মৌসুমেই চার শর কাছাকাছি রান করলে নজরে পড়তে বাধ্য। গেল আসরে তার ব্যাট থেকে ৩৯৭ রান এসেছিল ১৩১ স্ট্রাইক রেটে। বাঁহাতি এই ব্যাটারের মুম্বাইয়ের মন জয় করা সারা, এবার বড় কিছু করে দেখানোর পালা। 

    গেলবারের অবস্থান

    সবার নিচে, দশম। হ্যাঁ, মাত্র চার জয়ে টেবিলের তলানিতে থাকা দলটির নাম ছিল মুম্বাই।