• বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড
  • " />

     

    বৃষ্টিস্নাত থ্রিলারে শান্তর সাবলীল সেঞ্চুরি, হৃদয়ের ফিফটি, মুশফিকের নাটকীয় শেষে বাংলাদেশের জয়

    বৃষ্টিস্নাত থ্রিলারে শান্তর সাবলীল সেঞ্চুরি, হৃদয়ের ফিফটি, মুশফিকের নাটকীয় শেষে বাংলাদেশের জয়    

    ২য় ওয়ানডে, চেমসফোর্ড (টস-বাংলাদেশ/বোলিং)
    আয়ারল্যান্ড- ৩১৯/৬, ৪৫(৪৫) ওভার (টেক্টর ১৪০, ডকরেল ৭৪, বালবির্নি ৪২, হাসান ২/৪৮, শরিফুল ২/৮৩, এবাদত ১/৫৬)
    বাংলাদেশ- ৩২০/৭, ৪৪.৩(৪৫) ওভার (শান্ত ১১৭, হৃদয় ৬৮, মুশফিক ৩৬*, ক্যাম্ফার ২/৩৭, ডকরেল ২/৫৮, অ্যাডেয়ার ১/৫২ )
    ফলাফল: বাংলাদেশ ৩ উইকেটে জয়ী


     

    শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচে স্নায়ু ধরে রেখে জয় তুলে নিল বাংলাদেশ। হ্যারি টেক্টরের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির সাথে জর্জ ডকরেলের ঝড়ো ইনিংস আয়ারল্যান্ডের পাওয়া বড় সংগ্রহের বিপরীতে বাংলাদেশকে শক্ত জবাবই দিতে হত। সেই কাজতাই করে দেখালেন নাজমুল হোসেন শান্ত; দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করে দলকে পথ দেখালেন। সেখানে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে দারুণ এক ফিফটি করলেন তাওহিদ হৃদয়। এই দুজনের গড়্র দেওয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে তুলির শেষ আঁচড়টা টানলেন মুশফিকুর রহিম।

    বৃষ্টির কারণে খেলা ৪৫ ওভারে গড়ালে ৩২০ রানের লক্ষ্যে শুরুতেই তামিমকে হারায় বাংলাদেশ। মার্ক অ্যাডেয়ারের শিকার মাত্র ৭ রানেই তামিম ফেরার পর গ্র্যাহাম হিউমের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ২১ রানে ফিরে যান লিটন। সাকিব আল হাসানকে নিয়ে এরপর ইনিংস মেরামত শুরু করেছিলেন শান্ত। দুজনের জুটিটা জমতে না জমতেই পয়েন্টে সরাসরি ক্যাচ দিয়ে ক্যাম্ফারের শিকার হয়ে ২৬ রানে ফিরে যান সাকিব। তবে সেটা যেন শাপেবর হয়ে এলো বাংলাদেশের জন্য।

    হৃদয়কে নিয়ে এরপর অসামান্য এক জুটি গড়েন শান্ত। ২০ ওভারের মাথায় ৪৯ বলে শান্ত পেয়ে যান নিজের ৪র্থ ওয়ানডে ফিফটির দেখা। দুজনেই দারুণভাবে প্রান্ত বদল তো করছিলেন বটেই; ফিফটির পর শান্ত হয়ে উঠলেন অশান্ত। বিশেষ করে লিটলকে একহাত নিয়েছিলেন তিনি। শান্ত যখন সেঞ্চুরির খুব কাছে তখন ৪৯ বলে হৃদয় পেয়ে যান দ্বিতীয় ওয়ানডে ফিফটি। হিউমের সেই ওভার থেকে দুজনে মিলে ১২ রান নেওয়ার পর সেই হিউমের পরে ওভারেই আবারও দুজন মিলে নে ১৩ রান। ঠিক পরের বলে শান্ত পেয়ে যান নিজের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরির দেখা, ৮৩ বলে। তবে ওই ওভারের শেষ বলেই হৃদয়কে ৬৮ রানে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালান ডকরেল।

    ডকরেলের সেই চেষ্টাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে শান্তকে এরপর থামান ক্যাম্ফার। ক্যাম্ফারের খাটো লেংথের বলে ডিপ স্কয়্যার লেগে সরাসরি ক্যাচ তুলে দিয়ে ১১৭ রানে থামেন শান্ত। এরপরই ম্যাচে নাটকের অবতারণা। মুশফিকের সাথে জুটি গড়ে ম্যাচ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করলেও প্রশ্নবিদ্ধ এক সিদ্ধান্তে ১২ বলে ১৯ রান শেষে ফিরে যান মিরাজ। উইকেটে এসে তাইজুল এরপর জীবন পেলেন স্টার্লিংয়ের সুবাদে। ৪২-তম সেই ওভারের প্রথম বলে এমনকি রান আউট হতে হতেও বেঁচে গিয়েছিলেন খোদ মুশফিক। তাইজুল অবশ্য ফিরেছিলেন, সেটাও লিটলের শিকার হয়ে ৪৪-তম ওভারে। তবে উইকেটে এসেই এরপরের বলেই শরিফুল ইসলাম যেই চার মারলেন তাতে চাপ অনেকটাই কমে গিয়েছিল। পরের ওভারে অবশ্য আরও বড় নাটকের দেখা মিলল। ওভারের তৃতীয় বলে অ্যাডেয়ারের শিকার হয়ে মুশফিক ফিরলেন বলেই মনে হল। তবে কোমরের ওপরের নো বলে সেই যাত্রায় বেঁচে গেলেন মুশফিক; আর পরের বলেই চার মেরে ম্যাচটাও নিজেদের করে নিলেন ২৮ বলে ৩৬* রানের ঠান্ডা মাথার ইনিংসে।

    এর আগে হাসান মাহমুদের দুর্দান্ত ওপেনিং স্পেলে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল মনমত। তবে অ্যান্ডি বালবির্নির সাথে জুটি গড়ে এরপর এক অর্থে অদম্য হয়ে উঠেছিলেন টেক্টর। আইরিশ অধিনায়ক ৪২ রানে ফিরলেন টেক্টর মাথা ঠান্ডা রেখে পরিস্থিতি বুঝে তুলে নিয়েছিলেন ৪র্থ ওয়ানডে সেঞ্চুরি। ৬ষ্ঠ উইকেটে অবশ্য ডকরেলের সাথে মারাত্মক এক জুটি গড়ে বাংলাদেশের বোলারদের লাইন এলোমেলো করে দিয়েছিলেন। বিশেষ করে শরিফুলের ওপর দুজনেই চওড়া হয়েছিলেন। ১১৩ বলে ১৪০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস শেষে এবাদতের বলে স্টাম্প খুইয়ে টেক্টর ফিরলেও থামেননি ডকরেল। ৪৭ বলে ৭৪* রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে ৩১৯ রানের সংগ্রহ এনে দিয়েছিলেন আয়ারল্যান্ডকে। দিন শেষে শান্তর দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে যেই লক্ষ্য টপকিয়ে দারুণ এক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।