• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    ইন্টার পাস করেই সিটির ট্রেবল

    ইন্টার পাস করেই সিটির ট্রেবল    

    ম্যান সিটি ১:০ ইন্টার মিলান 


    অবশেষে ম্যান সিটির নীলাকাশে সেই শুভদিন আসল। একে একে সব বাঁধা পেরোনো সিটিজেনদের জন্য মৌসুমের শেষ পরীক্ষা ছিল ইন্টার মিলান। ইস্তাম্বুলের আতার্তুক স্টেডিয়ামে গত তিন বছরের মতো রক্ষণশীল ফাইনাল হলেও ইতালিয়ান ক্লাবটির বিপক্ষে পাল্লা দিলে লড়াই করেই জয়ে তুলেছে পেপ গার্দিওলার দল। স্মরণীয় এই জয়ে সিটির একমাত্র গোলটি করেছেন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার রদ্রি। 

    ফাইনাল ঠিক ঘটনাবহুল না হলেও নিঃসন্দেহে এই রাত সিটির ১৪৩ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে স্মরণীয় রাত। ইস্তাম্বুলে ক্লাব ইতিহাসের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপার দেখা পেয়েছে সিটি। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের (১৯৯৯) পর একমাত্র ইংলিশ দল হিসেবে ট্রেবল সম্পন্ন করেছে পেপ গার্দিওলার দল। এক কথায়, এই রাতের মধ্য দিয়ে অমরত্ব লাভ করেছে সিটির বর্তমান দল। 

    ম্যাচের আগে পেপ গার্দিওলা বলেছিলেন, তার দলের স্বভাব হচ্ছে গোলশূন্য থাকা অবস্থায় ভাবা 'আমরা ম্যাচ হারছি'। অপরদিকে ইতালিয়ান দলগুলো ম্যাচ গোলশূন্য রাখাকে জয় হিসেবেই ধরে নেয়। এই বক্তব্যকে মাইন্ড গেম হিসেবে দেখেছিল অনেকে, কিন্তু ম্যাচ শুরু হওয়ার পরই বুঝা যায় গার্দিওলা সেই কথাকে মাথায় রেখেই পরিকল্পনা সাজিয়েছেন। 

    সাধারণ ম্যাচে যেমন শুরুর বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে গোল দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে ডি ব্রুইনারা, ইস্তাম্বুলে তা হয়নি। তুলনামূলকভাবে ধীরলয়ে শুরু করে সিটি। ইন্টার শুরু করে আন্ডারডগের মতোই। পাঁচজনের রক্ষণাত্মক ব্লক ধরে রেখে মাঝে মাঝে কাউন্টারে যাওয়ার চেষ্টা করে সিমন ইনজাঘির দল। দুই দলই সতর্কতা নিয়ে খেলায় প্রথমার্ধ একেবারেই ঘটনাবহুল হয়নি। বিনা গোলের এই অর্ধে সবচেয়ে বড় ঘটনা ছিল কেভিন ডি ব্রুইনার আকস্মিক চোট ও মাঠ ছাড়া। প্রথমার্ধের শেষদিকে তার বদলি নামেন ফিল ফোডেন। 

    দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই একটু ঝুঁকি নিয়ে খেলতে শুরু করে। এরকম ঝুঁকি নিতে গিয়েই বড়সড় একটি ভুল করে বসেছিল ম্যানুয়েল আকানজি। ৫৯ মিনিটে এই সিটি ডিফেন্ডার গোলরক্ষককে ব্যাকপাস দেন, কিন্তু দৌড়ে এসে সেই পাস ধরে ফেলেন লাউতারো মার্টিনেজ। বাইলাইনের কাছে বল পাওয়ার পর বক্সে দৌড়ে আসা লুকাকু ও ব্রজোভিচের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেই শট নিয়ে নেন মার্টিনেজ, যেটি ফেরাতে সক্ষম হন এডারসন। এতবড় একটি সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যেই কপাল পুড়ে ইন্টারের। 

    ৬৮ মিনিটে ডানদিক দিয়ে আক্রমণে উঠে সিটি। আকানজির কাছ থেকে বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করেন সিলভা। তিনি বক্সের মাঝখানে ক্রস করার চেষ্টা করলে তা ডিফ্লেক্টেড হয়ে পিছনে চলে যায়। দৌড়ে বক্সে প্রবেশ করা রদ্রির নেওয়া শট দুজন ডিফেন্ডারের গা ঘেঁষে গিয়ে জালে জড়ায়। উল্লাসে ফেটে পরে আকাশী নীলরা। 

    এই গোলের দুই মিনিটের মধ্যেই অবশ্য সমতা ফেরানোর সুযোগ পায় ইন্টার। বক্সে পাঠানো এক বলে হেড করে তা ডিমার্কোর দিকে পাঠান ডামফ্রিজ। ফুলব্যাক ডিমার্কো হেড করেন, তার হেড এডারসনকে পরাস্ত করলেও ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বল আবার আসে ডিমার্কোর কাছে। এবার তার হেড গোললাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লুকাকুর পায়ে লেগে ফিরে আসে।

    ম্যাচের শেষদিকে ইন্টার পুরোপুরি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। ৮৮ মিনিটে লুকাকু নিজে একটি সুযোগ হাতছাড়া করেন। যোগ করা সময়েও ইন্টার আক্রমণ ধরে রাখে। কিন্তু এডারসনকে এ রাতে পরাস্ত করতে পারেনি কেউই।