• ২০২৩ এশিয়া কাপ
  • " />

     

    কে হবেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক: সাকিব, লিটন না কি অন্য কেউ?

    কে হবেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক: সাকিব, লিটন না কি অন্য কেউ?    

    পিঠের ইনজুরিটা ভোগাচ্ছিল বেশ কিছুদিন ধরেই; আকস্মিক অবসরের সিদ্ধান্তে হয়ত ছিল সেটার প্রভাবটাও। অবসর ভেঙে তামিম ইকবাল ঠিকই ফিরলেন। তবে সেই পিঠের ইনজুরির কারণে ছেড়ে দিলেন বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্ব। সেই সাথে খেলবেন না এশিয়া কাপেও। বিশ্বকাপ যখন দুয়ারে কড়া নাড়ছে তখন অধিনায়কের অভাব কীভাবে পুরণ করা হবে তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই জেগেছে প্রশ্ন। সহ-অধিনায়ক লিটন দাসকেই হয়তবা দেওয়া হত অধিনায়কত্ব। তবে তার অভিজ্ঞতার অভাবের কারণেই অন্য কেও দায়িত্ব পাবেন কি না সেটা নিয়ে রয়েছে জল্পনাকল্পনা। আর অভিজ্ঞতার কথা বললে স্বাভাবিকভাবেই আসে সাকিব আল হাসানের নাম। বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হয়ত ওয়ানডে বিশ্বকাপেও হতে পারেন অধিনায়ক।

    অভিজ্ঞতার কথা ভাবলে ওয়ানডে দলে আছেন আর একজন -মুশফিকুর রহিম। তবে দীর্ঘ দিন ধরেই অধিনায়কত্ব থেকে দূরে থাকা মুশফিক তাই হয়ত এই দৌড়ে নেই বললেই চলে। দৌড়ে তাই রয়েছেন লিটন ও সাকিব। ২০১১ বিশ্বকাপেও মাশরাফি বিন মুর্তজার অভাবে, এবারও অনেকটা একই ভঙ্গিমায় পেয়ে যেতে পারেন বিশ্বকাপে দলের দায়িত্ব।

    এমনকি আজ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও স্বীকার করেছেন যে সাকিবকে অধিনায়কত্ব দেওয়াটাই সবচেয়ে সহজ সিদ্ধান্ত এই মুহূর্তে। তবে তিনি যে সমস্যার কথা বলেছেন, সাকিবকে নিয়ে চিন্তাটাও একই জায়গায়। সাকিব কি নিজে এই দায়িত্ব নিতে রাজি? কেন্দ্রীয় চুক্তি নিয়ে তো এর আগে কম জলঘোলা করেননি তিনি। তার চেয়ে বড় কথা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ, বয়স ও সর্বোপরি দলে তার অলরাউন্ডারের ভুমিকার কথাটাও মাথায় রাখতে হবে। দশ ওভার বোলিং, চার নম্বরে ব্যাটিং, গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ফিল্ডিং - সব মিলিয়ে তার কাজের ভার সামলে আবার দলের অধিনায়কত্ব সামলানোর মত গুরুদায়িত্ব নিতে তিনি রাজি হবেন কি না সেটাই চিন্তার বিষয়।

    চিন্তা লাঘব করার জন্য তাই দলের সহ-অধিনায়ক লিটনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়াটাই হয়ত সবচেয়ে সহজ পন্থা। তবে লিটন কি আদৌতে বিশ্বকাপের দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার মত পরিপক্ব একজন অধিনায়ক? ঘরোয়াতেও লিটন সচরাচর অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন না। তবে লিটনের অধীনেই ঘরের মাঠে বাংলাদেশ পেয়েছে ভারতের বিপক্ষে দারুণ এক সিরিজ জয়। অধিনায়ক হিসেবে অভিজ্ঞ না হলেও তাই নিজেকে প্রমাণ করেছেন। আবার সেখানেও তর্ক থেকেই যায়। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে তার অধীনেই সিরিজ খুইয়ে বসল বাংলাদেশ।


    এক নজরে অধিনায়ক হিসেবে সাকিব ও লিটনের পারফরম্যান্স:

    অধিনায়ক হিসেবে সাকিব আল হাসান

    ম্যাচ: ৫০
    জয়: ২৩
    হার: ২৬
    নো রেজাল্ট: ১

    রান: ১৫৪৭
    ব্যাটিং গড়: ৩৫.৯৭
    সর্বোচ্চ রানের ইনিংস: ১০৩
    উইকেট: ৬৮
    বোলিং গড়: ২৯.২৩
    সেরা বোলিং ফিগার: ৪/৩৩

    অধিনায়ক হিসেবে লিটন দাস

    ম্যাচ: ৫
    জয়: ৩
    হার: ২
    নো রেজাল্ট: ০

    রান: ১৪৩
    ব্যাটিং গড়: ৩৫.৭৫
    সর্বোচ্চ রানের ইনিংস: ৫৩


     

    ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজটার কথা ভেবেই হয়ত সাকিবকেই শেষমেশ অধিনায়ক হিসেবে বেঁছে নেওয়া হতে পারে। সাকিব তরুণ অধিনায়ক হিসেবে অনেক সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিলেন, অধিনায়কত্ব ছাড়তেও হয়েছিল শত প্রশ্নের বাণে। তবে খেলোয়াড় ও অধিনায়ক হিসেবে যে তিনি এখন ঘাঘু,বিচক্ষণ ও সর্বোপরি অভিজ্ঞ তার প্রমাণ মিলেছে টি-টোয়েন্টিতে ভুগতে থাকা বাংলাদেশের পরিবর্তনের মাঝেই, এই বছরেই দেখুন দেশের মাটিতে ৭টি টি-টোয়েন্টি জয়ের বিপক্ষে রয়েছে কেবল ১টি হার। এই আফগানিস্তান সিরিজেই ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলের মানসিকতার বিস্তর ফারাকটাও সাকিবের হয়েই কথা বলে। এমনকি গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও যে আহামরি খারাপ করেনি বাংলাদেশ, সেটা পরিসংখ্যান ঘাটলেই বোঝা যায়। মূল পর্বে তো বাংলাদেশ জয় পেল, ২০০৭ বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর পর এই প্রথম। এরকম এক পরিবর্তন যে ওয়ানডে বিশ্বকাপেও দেখা যেতে পারে সাকিবের বদৌলতে সেই আশা রাখাই যেতে পারে। তবে দিনশেষে প্রশ্ন একটাই - সাকিব নিজে রাজি তো?