বৃষ্টি শঙ্কা উৎরিয়ে রোহিত-গিল জুটিতে সহজ জয়ে সুপার ফোরে ভারত
এশিয়া কাপ ২০২৩, গ্রুপ পর্ব, পাল্লেকেলে (টস-ভারত/বোলিং)
নেপাল - ২৩০, ৪৮.২ ওভার (আসিফ ৫৮, কামি ৪৮, ভুরটেল ৩৮, জাদেজা ৩/৪০, সিরাজ ৩/৬১, ঠাকুর ১/২৬)
ভারত - ১৪৫/০, ২০.২ ওভার (রোহিত ৭৪*, গিল ৬৭*, মাল্লা ০/১১)
ফলাফল: ভারত ১০ উইকেটে জয়ী
পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০৪ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর ভারতের বিপক্ষে আজ ব্যাটিংয়ে লড়াই করেছিল নেপাল, লড়াইটা অবশ্য ভারতের বিপক্ষে যথেষ্ট হয়নি। বৃষ্টিতে ম্যাচ পণ্ড হওয়ার শঙ্কা জাগলেও শেষমেশ ভারত পেয়েছিল ২৩ ওভারের একটা সুযোগ। আর তাতেই নেপালকে উড়িয়ে দিয়ে সুপার ফোর নিশ্চিত করল ভারত, সেই সাথে পাকিস্তানের সুপার ফোরের জায়গাও হল নিশ্চিত।
২৩ ওভারে ভারতের পরিবর্তিত লক্ষ্য হয়েছিল ১৪৫ রান। তৃতীয় ওভারে বৃষ্টি নামার পর লম্বা একটা সময় ধরে মনে হচ্ছিল খেলা আর মাঠেই গড়াবে না। মাঠে নেমে তাই ভারত যেন বৃষ্টি নিয়ে নিজেদের ক্ষোভটাই উগড়ে দিল। ষষ্ঠ ওভারেও ভারত খেলছিল পরিস্থিতি বুঝে। সপ্তম ওভারে সন্দ্বীপ লামিছানে আক্রমণে এলে তাকেই দুজন মিলে আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নেন। ডিপ স্কয়্যার লেগে অবশ্য ওই ওভারে ক্যাচ তুলে দিয়েও গুশান ঝা ক্যাচ ফেলে দিলে ১৬ রানে থাকার সময় জীবন পান রোহিত। এরপর আর ফিরে তাকাননি। ৩৯ বলে রোহিত ফিফটি করলে অন্যদিকে থাকা শুবমান গিল ফিফটি পেয়ে যান ৪৭ বলে। ৫৯ বলে ৭৪* রানে রোহিত ও ৬২ বলে ৬৭* রান করে গিল তাই দলকে জয়ের বন্দরে ভেড়ান অনায়াসেই।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বুক চিতিয়ে লড়েছিল নেপাল। লড়াকু সেই রসদ সংগ্রহে ভারতের কাছ থেকে অবশ্য উপহার কম পায়নি নেপাল। প্রথম ওভার থেকেই মিসফিল্ডিংয়ের সমারোহ! স্লিপে শ্রেয়াস আইয়ারের ক্যাচ মিসে জীবন পেলেন ১ রানে থাকা ভুরটেল, পরের ওভারের প্রথম বলেই আসিফকে জীবন দিলেন কোহলি, পঞ্চম ওভারে ভুরটেল আবার জীবন ফিরে পান কিষানের বদৌলতে। সুযোগ পেয়ে ভুরটেল রীতিমত প্রতি-আক্রমণ শুরু করেছিলেন। তবে প্রথম পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে শার্দুল ঠাকুরের আঘাতে শেষ হয় ভুরটেলের ২৫ বলে ৩৮ রানের ইনিংস। অবশ্য প্রথম পাওয়ারপ্লেতেই নেপাল তুলে ফেলে ৬৫ রান।
ভুরটেলের বিদায়ের পর ভারত ম্যাচে নিজেদের কর্তৃত্ব ফলাতে শুরু করে। চাপ তৈরি করে নিজেই সেটার ফল ভোগ করে পরের দশ ওভারের মধ্যেই রবীন্দ্র জাদেজা ফেরান ভিম শারকি ও অধিনায়ক রোহিত পৌডেলকে, আর পরের ওভারে কুশল মাল্লাকে। সঙ্গ না পেয়ে আসিফ আরও খোলসের ভেতরে ঢুকে যান। উইকেটে এসে গুলশান ঝা বোঝা বইয়ে আসিফের কাজটা সহজ করার চেষ্টা করেও না পারলে অন্য প্রান্তে ফিফটি পেতে আসিফের লাগে ৮৮ বল। ওই ওভারেই আসিফকে দুই চার মেরে ঝা হাত খোলার চেষ্টা করলে পরের ওভারে সিরাজ ঝাল মেটান আসিফকে ফিরিয়ে। এর আগে কাভারে তার ক্যাচ ফেল কোহলি সেই জায়গায়ই ক্যাচটা লুফে নিলে শেষ হয় আসিফের ৯৭ বলে ৫৮ রানের লড়াই।
ঝাকেও শেষমেশ সিরাজই ফেরান, ৩৫ বলে ২৩ রান শেষে। বৃষ্টি এর মাঝে বাগড়া বাঁধালেও শক্তি সঞ্চয় করে আক্রমণের চেষ্টা করেন দীপেন্দ্র সিং আইরি ও কামি। ৪১-তম ওভারের দিকে কামি একবার সুযোগ পেলে পরের ওভারেই অবশ্য আইরি থামেন ২৫ বলে ২৯ রান শেষে। সুযোগ কাজে লাগিয়ে কামি অন্য প্রান্তে এগিয়ে গেলেও আক্রমণের তাগিদ থেকেই খেলতে গিয়ে ৪৮-তম ওভারে মোহাম্মদ শামির শিকার হয়ে কামি থামেন ৫৬ বলে ৪৮ রানে। এবার অবশ্য নিজেকে সামলে নিয়ে দারুণ এক ক্যাচ নিয়েছিলেন কিষান। ওই ওভারেই এরপর একটি রান আউট ও পরের ওভারে সিরাজের তৃতীয় শিকার হয়ে রাজবানশি ফিরলে নেপাল থামে ২৩০ রানে। পরে সংশোধিত লক্ষ্য নিমেষেই উৎরিয়ে গিয়ে নেপালের এশিয়া কাপ যাত্রার ইতি টেনেছে ভারত।