• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    রোমাঞ্চকর রাতে বহু বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে যেভাবে কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সা-আর্সেনাল

    রোমাঞ্চকর রাতে বহু বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে যেভাবে কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সা-আর্সেনাল    

    ফুলটাইম স্কোর:

    বার্সেলোনা ৩-১ নাপোলি

    আর্সেনাল ১-০ পোর্তো (৪-২)


    চ্যাম্পিয়নস লিগে মনে রাখার মত এক রাত কাটিয়েছে বার্সেলোনা ও আর্সেনাল। চার বছর পর কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছিয়েছে বার্সা। অন্যদিকে আর্সেনালের অপেক্ষাটা ছিল ১৪ বছরের! ম্যাচের আগে বার্সা কোচ জাভি বলেছিলেন, মৌসুমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ তাদের জন্য এটাই। অন্যদিকে প্রথম লেগে হেরে বসা আর্সেনাল কোণঠাসা হয়েছিল আগে থেকেই। তবে দুই দলই নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ রেখে পরের রাউন্ডের টিকিট কেটে ফেলেছে।

    বার্সেলোনার মাঠ থেকে সাফল্য নিয়ে ফেরার জন্য ম্যাচের আগে নাপোলি সভাপতি ডি লরেন্তিস তার খেলোয়াড়দের জন্য বিশাল অঙ্কের পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে সেই ঘোষণা যেন উল্টো চাপ হয়ে দাঁড়ায় নাপোলির খেলোয়াড়দের জন্য। ঘরের মাঠে ঝড়ের গতিতে নাপোলিকে এলোমেলো করে দিয়ে শুরুতেই আধিপত্য বিস্তার করে বার্সা। ১৫ মিনিট থেকে ১৭ মিনিটের মধ্যেই দুই গোল দিয়ে নাপোলিকে নাড়িয়ে দিয়ে সেখানেই যেন ম্যাচের ভাগ্যের পাল্লাটা নিজেদের দিকে ঘুরিয়ে নিয়েছিলেন তারা। কিছুক্ষণ আগেই একটা সুযোগ মিস করা ফার্মিন লোপেজ পরের বার ঠান্ডা মাথায় বল জালে জড়ান, পাউ কুবারাসির বক্সে বাড়ানো দুর্দান্ত লম্বা বল থেকে। দুই মিনিটের মধ্যেই নাপোলির রক্ষণ কাঁপিয়ে দিয়ে ডান প্রান্ত থেকে প্রতি-আক্রমণে রাফিনিয়া ভেতরে ঢুকে জোরালো শটে ফার পোস্টে বল লাগালে ফিরতি সুযোগে বল জালে জড়ান ক্যানসেলো।

    স্রোতের বিপরীতেই অবশ্য ৩০ মিনিটের মাথায় সেই ক্যানসেলোকেই ধোঁকা দিয়ে পলিটানো ভেতরে ঢুকে উঠে আসে রাহমানির উদ্দেশ্যে পাস বাড়ালে জায়গা বানিয়ে নিয়ে লক্ষ্যভেদ করতে তিনি ভুল করেননি। ম্যাচে ফিরে নাপোলি এরপর বেশ কয়েকবার আক্রমণ করেও বার্সার রক্ষণে চিড় ধরাতে পারেনি।

    দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য বার্সার আক্রমণ আরও ক্ষুরধার হয়ে ওঠে। আরও একবার ৬৭ মিনিটের মাথায় মেরেতের পরীক্ষা নেন রাফিনিয়া। সেবার তিনি পাস করলে পরের মিনিটেই তার জালে বল জড়িয়েছিল। ওই সেইভ থেকেই কর্নার হওয়ার পর ক্ষিপ্রতার সাথে আবারও তিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন লেভানডফস্কিকে। ফিরতি সুযোগে হুমড়ি খেয়ে পড়ে বেশ কয়েকবার কাড়াকাড়ির পর ইয়ামাল জাল খুঁজে পেলেও অফসাইডের কারণে বাতিল হয় তার গোল। তবে পোলিশ স্ট্রাইকারকে পরে আর থামাতে পারেননি মেরেত। নিজের শেষ ১৩ নকআউট ম্যাচে ১৩তম গোল ঠিকই বের করে ফেলেন তিনি। ৮৩ মিনিটের মাথায় বাঁ প্রান্ত থেকে জায়গা বানিয়ে বদলি রবার্তো ভেতরে ঢুকে, গুন্দোয়ানের সাথে ওয়ান-টু খেলে বক্সে ঢুকে পড়েও নিঃস্বার্থভাবে পাশে থাকা লেভানডফস্কির কাছে বল পাঠালে তিনি দুই গোলের ব্যবধান তৈরি করে ফেলেন। নাপোলির কফিনে ওখানেই শেষ পেরেক ঠুকে জয়ের নিশান ওড়ায় বার্সা।

    অন্যদিকে আর্সেনালের জন্য কাজটা ছিল আরও কঠিন। প্রথম লেগে হেরে বসা আর্সেনাল এদিনও প্রথম থেকে গেরো খুলতে পারছিল না। তবে ৪৪ মিনিটের মাথায় ওডেগার্ডের বাড়ানো দুর্দান্ত থ্রু বল থেকে বক্সে ভেতরে ঢুকে ট্রসার্ড বল জালে জড়ান। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কিছু সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি তারা। পেপের জার্সি টেনে ধরায় হ্যাভার্টজের গোল বাতিল হওয়ার পর পোর্তোও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। ৮৩ থেকে ৮৫ মিনিটে তো জেসুস, সাকারা তিন বার গোলের কাছাকাছি এসেও গেরো খুলতে পারেননি। খেলা পরে টাইব্রেকারে গড়ালে নায়ক বনে যান রায়া। পুরো ম্যাচেই দারুণ খেলা রায়া দারুণ দুটো পেনাল্টি ঠেকান। বিশেষ করে গালেনোর শেষ পেনাল্টিটা যেভাবে পুরো শরীর মেলে ঝাঁপিয়ে সেভ করেছেন তাই তাকে ম্যাচ সেরা বানানোয় যথেষ্ট ছিল।