• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    হুয়ানফ্রানের পাশেই অ্যাটলেটিকো সমর্থকেরা

    হুয়ানফ্রানের পাশেই অ্যাটলেটিকো সমর্থকেরা    

    দু’বছর আগে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে হাতছাড়া হয়েছিল চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা। রামোসের হেডে করা সেই গোলের পর অতিরিক্ত সময়ে খেই হারিয়ে ফেলে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। আরও ৩ গোল হজম করে ৪-১ এ হেরে বিষাদে শেষ হয়েছিল অ্যাটলেটিকোর চ্যম্পিয়নস লিগ স্বপ্ন।

    মাঝখানে কেবল এক মৌসুম। কোয়ার্টার আর সেমিফাইনালে বার্সেলোনা ও বায়ার্নের মতো দলকে হারিয়ে আরও একবার ফাইনালে মাদ্রিদের তুলনামূলক অখ্যাত দলটি। প্রতিপক্ষ আবারও সেই রিয়াল মাদ্রিদ। অনেকেই ভেবেছিলেন এবার হয়ত অপেক্ষার পালা ঘুচবে অ্যাটলেটি  সমর্থকদের!

    আগেরবারের মতো এবারও ১-১ এ শেষ হল নব্বই মিনিটের খেলা। এবার আর অতিরিক্ত সময়ে ভাঙা গেল না কোন দলের রক্ষণই। টাইব্রেকারেই নির্ধারিত হল ম্যাচের ভাগ্য। পেনাল্টি শুটআউটে  ৫-৩ হেরে দু’বছর আগের পরিণতিই বরণ করতে হলে অ্যাটলেটিকোকে।

    প্রথম তিনটি পেনাল্টি কিকে গোল করে দু’ দলই। রামোসের নেয়া কিকটি অ্যাটলেটি গোলরক্ষক অবলাককে ফাকি দিয়ে জালে ঢোকাবার পর অ্যাটলেটিকোর হয়ে চতুর্থ কিকটি নিতে আসেন হুয়ানফ্রান। স্প্যানিশ রাইট ব্যাকের নেয়া কিকটি কেইলর নাভাসকে ফাকি দিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু বল জালে না জড়িয়ে বাম পাশের গোলবারে লেগে ফিরে আসে। পরের কিকে গোল করেই রোনালদোর সেই জার্সি খোলা উদযাপন আর সাথে উনডেসিমা জয়ের আনন্দে ভাসান গোটা রিয়াল মাদ্রিদকেই।


     
    অথচ পুরো ম্যাচেই রিয়ালের তুলনায় বরং উজ্জ্বল ছিল সিমিওনের অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। হুয়ানফ্রানও ম্যাচ জুড়েই ছিলেন সপ্রতিভ। অতিরিক্ত সময়েও রিয়াল মাদ্রিদের রক্ষণের ডান প্রান্ত ভেদ করে বারবার আক্রমণ রচনা করছিলেন, আর রক্ষণ সামলানোর কাজটা কতোখানি ভালোভাবে করেছেন তার প্রমাণ গতকাল ম্যাচ জুড়েই রোনালদোর অকার্যকর থাকা।

    কিন্তু ভাগ্যের ফেরে হুয়ানফ্রান থেকে গেলেন পরাজিতের দলেই। আর হারটাও এল তারই পেনাল্টি মিসের কারণে। মাঠের এক প্রান্তে যখন বাধভাঙ্গা উল্লাসে ব্যস্ত রিয়াল সমর্থকেরা তখন মাঠের অন্যপ্রান্তে অ্যাটলেটিকো সমর্থকদের দিকে ধীর পায়ে হেটে যাচ্ছিলেন হুয়ানফ্রান। লাল রঙা গ্যালারির সমর্থকদের কাছে এসে হাত জোর করে ক্ষমা চাইলেন। গ্যালারির সাদা সমর্থকেরা যখন আনন্দ উল্লাসে ব্যস্ত তখন হুয়ানফ্রানের এমন ঘটনায় আবেগটা আরও চেপে বসে অ্যাটলেটিকো সমর্থকদের মনে। পুরো গ্যালারি একসাথে দাঁড়িয়ে সম্মান জানায় হুয়ানফ্রানকে। ঘরের ছেলেকে এর চেয়ে বড় সান্ত্বনা আর কিই বা দিতে পারতেন তাঁরা, পরপর দুই ফাইনালে হারের যন্ত্রণাটা তো অশ্রু হয়েই ঝরছিল তাঁদের চোখে।    

    এটাই ফুটবল, যা মাঝে মধ্যে জীবনের চাইতেও বেশি কিছু। আনন্দ আর হতাশার মাঝের ফারাকটুকুও ওই একটা পেনাল্টি কিকের বারে লেগে ফিরে আসা।