রিজওয়ান-শাকিলের দৃঢ়তায় দ্বিতীয় দিন পাকিস্তানের
১ম টেস্ট, রাওয়ালপিন্ডি (টস- বাংলাদেশ/ফিল্ডিং)
পাকিস্তান - ৪৪৮/৬, ১ম ইনিংস (রিজওয়ান ১৭১*, শাকিল ১৪১, সাইম ৫৬, হাসান ২/৭০, শরিফুল ২/৭৭, মিরাজ ১/৮০)
বাংলাদেশ - ২৭/০, ১ম ইনিংস (সাদমান ১২*, জাকির ১১*, নাসিম ০/৭)
২য় দিন, স্টাম্পস
পিন্ডিতে গত কয়েক টেস্ট ধরেই যে ব্যাটিং বান্ধব উইকেট দেখা যেত তার ব্যতিক্রম এবার হবে বলেই মনে হয়েছিল প্রথম দিনে। তবে দ্বিতীয় দিনে প্রখর রোদের মাঝে পিন্ডি ফিরল সেই চেনা রূপে; আর তাতেই মাথা কুটে মরার দশা হল বাংলাদেশের বোলারদের। সৌদ শাকিল ও মোহাম্মদ রিজওয়ান সুবিশাল জুটি গড়ে দিনভর বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের খাটিয়ে মারলেও তাদের ইনিংস ঘোষণাটাও জাগিয়েছে বিস্ময়। শেষ বিকেলে পাকিস্তানের তোলা সকল প্রশ্নের জবাব এরপর ভালোভাবেই দিয়েছে সাদমান ইসলাম-জাকির হাসান জুটি।
রিজওয়ান যখন ডাবল সেঞ্চুরির দিকে ছুটছিলেন তখন জেসন গিলেস্পির সাথে আলোচনা করে এর মাঝেই ইনিংস ঘোষণা করে বসলেন অধিনায়ক শান মাসুদ। ভাবনায় হয়ত ছিল শেষ বিকেলে পেসারদের দিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটারদের চেপে ধরা। নাসিমের দারুণ স্পেলে পাকিস্তান ফল পেলেও পেতে পারত। তবে সাদমান-জাকির মাটি কামড়ে পড়ে থাকায় কোনো বিপদ ছাড়াই বিকাল পাড়ি দিয়েছে বাংলাদেশ।
তেমন বিপদ সামলানোর কাজে পাকিস্তানও ছিল সমান পারদর্শী। ১৬ রানেই আগের দিন ৩ উইকেট খুইয়ে বসার পর সেই যে পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের হাল ধরেছিলেন শাকিল, রিজওয়ানের সঙ্গে আজ তা রূপ দিয়েছিলেন রানের পাহাড় গড়ার প্রকল্পে। সকালের সেশনটা দুজনেই খেলেছেন সাবধানে। আগের দিনের মতো লাইন-লেংথ ধরে রাখার কাজটা এদিন অবশ্য করতে পারেননি শরিফুল-হাসানরা। গতির ওপর মনোযোগ দিতে গিয়ে নাহিদ ছিলেন একেবারেই ছন্নছাড়া। সুযোগ লুফে নিয়ে প্রথম সেশন নির্বিঘ্নে পার করে দিয়ে লাঞ্চে এই দুজনে মিলে দলকে নিয়ে যান ২৫৬ রানে।
লাঞ্চের পরও মনোযোগ ধরে রেখে দুজনে আগাতে থাকেন, তবে এবার রান তোলায় মনোযোগ দেন দুজনেই। দুজনেই সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে থাকলেও পরে উইকেটে আসা রিজওয়ান সেঞ্চুরি পান ১৪৩ বলে। কিছুক্ষণ পরেই ১৯৫ বলে নিজের তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি পেয়ে যান পাকিস্তান সহ-অধিনায়ক শাকিল। চা-বিরতির কিছু আগেই অবশ্য বাইশ গজ থেকে বিদায় নিতে হয় শাকিল। মেহেদী হাসান মিরাজের তীক্ষ্ণ ঘূর্ণিতে বেরিয়ে যাওয়া অফ স্পিনে ব্যাট লাগাতে গিয়ে পা কিছুটা বেরিয়ে গেলে ক্ষিপ্রতার সাথে স্টাম্পিং করে ফেলেন লিটন। ১৪১ রানে শাকিল থামলেও রানের পাহাড় গড়ার দিকেই এগিয়ে যেতে থাকে পাকিস্তান।
পরের সেশনে রিজওয়ান হয়ে ওঠেন আরও ভয়ংকর। মাঝে সাকিব তার পরিশ্রমের ফসল পান আঘা সালমানকে মিরাজের তালুবন্দি করে। এরই মাঝে দেড়শো রানের মাইলফলক পার করে ফেলা রিজওয়ানের সাথে যোগ দিয়ে শাহীন আফ্রিদি ব্যাটিং করেন ওয়ানডে ভঙ্গিমায়। ২৪ বলে ২৯* রান করে ফেলা আফ্রিদিকে থামতে হয় আকস্মিক ইনিংস ঘোষণাতেই। সেই সাথে ১৭১* রানে থেকে রিজওয়ানকে সন্তুষ্ট থাকতে হয় নিজের সর্বোচ্চ টেস্ট ইনিংসের স্বাদ নিয়ে। শেষ বেলায় অবশ্য বাংলাদেশও তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছে দৃঢ় ব্যাটিংয়ে।