• ক্লাব ফুটবল
  • " />

     

    লিভারপুল কেন 'দ্য রেডস', ইউনাইটেড কীভাবে 'রেড ডেভিলস'?। জার্সিকথন। পর্ব ২

    লিভারপুল কেন 'দ্য রেডস', ইউনাইটেড কীভাবে 'রেড ডেভিলস'?। জার্সিকথন। পর্ব ২    

    আপনি জানেন কি, লিভারপুলের ইতিহাসের প্রথম দিকের জার্সির রঙ লাল ছিল না। তাদের সমার্থক হোম ভেন্যু অ্যানফিল্ড আগে ছিল নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী এভারটনের মাঠ। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের শুরুটাও হয়েছিলও লাল জার্সি ছাড়াই। কিন্তু অ্যানফিল্ডের সাথে লিভারপুলের জার্সির সম্পর্কটা কী? আর ইতিহাসের শুরুটা লাল জার্সি দিয়ে না হলেও এই দুই দলকে কেন ডাকা হয় ‘দ্য রেডস’ আর ‘রেড ডেভিলস’ বলে? 

    বিশ্বের বিখ্যাত ক্লাবগুলোর জার্সির পেছনের গল্প নিয়ে প্যাভিলিয়নের এই আয়োজন ‘জার্সিকথন’। এই সিরিজের দ্বিতীয় পর্বে থাকছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের লিভারপুল এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জার্সির পেছনের গল্পগুলো।

    লিভারপুলের গল্পটা দিয়েই শুরু করা যাক।

    ইতিহাসের বইয়ে লিভারপুলের প্রতিষ্ঠাকাল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ১৮৯২কে। তবে এর প্রেক্ষাপট বুঝতে হলে আমাদেরকে প্রায় ১৫ বছর পিছিয়ে যেতে হবে। ১৮৭৮ সালে মার্সিসাইডে প্রতিষ্ঠিত হয় এভারটন ফুটবল ক্লাব। শুরুতে এভারটনের কোনো নির্দিষ্ট হোম ভেন্যু ছিল না। পরবর্তীতে ১৮৮৪ সালে দলটি থিতু হয় অ্যানফিল্ডে। তখন অ্যানফিল্ডের মালিকানা ছিল স্থানীয় ব্যবসায়ী জন হোল্ডিংয়ের কাছে। পরের বছরগুলোতে এভারটন বেশ সাফল্য পেতে থাকে। ১৮৮৮ সালে শুরু হওয়া ফুটবল লিগের অন্যতম সদস্য ছিল তারা, এরপর ১৮৯১ সালে জিতে নেয় নিজেদের প্রথম লিগ শিরোপা। 

    প্রতিষ্ঠালগ্নে লিভারপুল: Image Source: LFC TV

    এভারটনের এই সাফল্যের ছোঁয়া লাগে অ্যানফিল্ডেও। অ্যানফিল্ডে দর্শকদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে, স্টেডিয়ামের সুযোগ সুবিধা এবং পরিসর বাড়ানোর প্রয়োজন হয়ে পড়ে। আবার ক্লাবের সাফল্যের প্রেক্ষিতে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষও ভাড়া বাড়ানোর দাবি করে। কিন্তু এই দাবিকে অযৌক্তিক মনে হয় এভারটনের কাছে। ফলস্বরূপ, মনমালিন্য বাড়তে থাকে। এরই পথ ধরে, ১৮৯২ সালে অ্যানফিল্ডের সাথে এভারটনের সম্পর্ক ছিন্ন হয়। অ্যানফিল্ড ছেড়ে এভারটন চলে যায় গুডিসন পার্কে। হুট করে এভারটনের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ায় যেন একটু বিপদে পড়ে যান জন হোল্ডিং। তখন তিনি সিদ্ধান্ত নেন নতুন ক্লাব প্রতিষ্ঠার। ১৮৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘এভারটন অ্যাথলেটিক’ ক্লাব, পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন করে যা পরিণত হয় ‘লিভারপুল ফুটবল ক্লাব’-এ।

    শুরুতে লিভারপুলের জার্সির রঙ ছিল অনেকটা এভারটনের মতোই। নীল আর সাদা। এরপর ১৮৯৬ সালে প্রথমবারের মতো পরিবর্তন করা হলো লিভারপুলের কিটের রঙ। এভারটনের থেকে নিজেদের আলাদা করার জন্যই, লাল জার্সির সাথে সাদা শর্টস পরতে শুরু করে লিভারপুল।

    বিল শ্যাঙ্কলি; Image Source: PA/EMPICS

    এরপর ১৯৬৪ সালে, একটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেন লিভারপুলের ম্যানেজার বিল শ্যাঙ্কলি। সেই সিদ্ধান্তেই বদলে যায় লিভারপুলের ভিজুয়াল পরিচয়। লাল জার্সি, লাল শর্টস আর লাল মোজায় প্রথমবারের মতো লিভারপুলকে দেখেন সমর্থকেরা। জার্সির পুরো লাল রঙটা লিভারপুলকে মানসিকভাবে আরো শক্তিশালী করবে, প্রতিপক্ষের সামনে আরো ভয়ঙ্কর করে তুলবে, এমনটাই ছিল শ্যাঙ্কলির বিশ্বাস। সেই বিশ্বাসটা আরো জোরদার হয় ট্রেনিংয়ে সেন্টারব্যাক রন ইটসকে সম্পূর্ণ লাল কিটে দেখে। আর সেখান থেকেই এসেছিল কথাটা, “Red is for danger, red is for power.” 

    এরপর থেকেই লিভারপুলের হোম কিট হয়েছে পুরো লাল রঙের। ১৯৭৯ সালে প্রথমবারের মতো স্পন্সরের নাম বসে লিভারপুলের জার্সিতে। জাপানিজ ইলেক্ট্রনিকস কোম্পানি হিটাচির সাথে চুক্তি হয় লিভারপুলের। ফুটবলে কমার্শিয়াল শার্ট স্পন্সরশিপের অন্যতম প্রথম ঘটনা সেটাই। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত লিভারপুলের জার্সিতে ওঠে ইতালিয়ান কোম্পানি ক্যান্ডি-এর লোগো। ওই সময়ে অলরেডদের মাঠের ফলাফলও ছিল বেশ ভালো। তাই ফ্যানদের কাছেও ওই জার্সিটা আলাদা একটা নস্টালজিয়ার নাম। আশির দশকের শেষ দিকে লিভারপুলের জার্সি তৈরি করতে শুরু করে অ্যাডিডাস। অ্যাডিডাসের ওই তিন স্ট্রাইপওয়ালা জার্সিটা যেন মনে করিয়ে দেয় ইংলিশ ফুটবলে লিভারপুলের আধিপত্যের সময়কেই।

    ১৯৯০ সালে লিভারপুলের জার্সি; Image Source: Reuters

    ২০১২ সালে, জার্সি প্রস্তুত করার জন্য লিভারপুল চুক্তি করে আমেরিকান কোম্পানি ওয়ারিয়র স্পোর্টসের সাথে। লিভারপুলের ওই সময়কার কিছু জার্সির ডিজাইন বেশ কন্ট্রোভার্সির জন্ম দিয়েছিল। তবে ২০১৫ সালে ওয়ারিয়র স্পোর্টসকে কিনে নেয় নিউ ব্যালান্স, এবং লিভারপুলের জার্সিতেও তাদের লোগো দেখানো শুরু হয়। এরপর ২০২০ সালে নাইকির সাথে চুক্তি সম্পন্ন করে লিভারপুল। এই ডিলটা ছিল ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম বড় ডিল, আর এর মাধ্যমে আজ পর্যন্ত লিভারপুলের অফিশিয়াল কিট সরবরাহ করে চলেছে নাইকি।

    লিভারপুলের জার্সি তৈরি করছে নাইকি; Image Source: Getty Images

    এ তো গেল হোম কিটের গল্প।

    লিভারপুলের অ্যাওয়ে কিটগুলো সাধারণত বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ হয়। গত শতাব্দীর শুরুর দিকে প্রতিপক্ষের মাঠে লিভারপুল পরতো পুরো সাদা জার্সি। সত্তরের দশকে লিভারপুল অ্যাওয়ে কিট হিসেবে লাল ট্রিম দেওয়া হলুদ জার্সি আর লাল শর্টস। এরপর আশির দশকে ধূসর বর্ণের অ্যাওয়ে কিট তৈরি হয়েছিল লিভারপুলের জন্য। ভক্ত সমর্থকেরা খুব একটা পছন্দ না করলেও, ওই কিটটা ছিল আইকনিক। এরপর বিভিন্ন সময়ে নানা রঙের ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনের অ্যাওয়ে কিট পরেছে লিভারপুল। কখনো সবুজ-সাদা, কখনো কালো-সোনালী, কখনো পার্পেল-কালো, আবার কখনো সাদা-কালো-লাল, অথবা কমলা। 

    ২০২৪-২৫ মৌসুমের অ্যাওয়ে কিট; Image Source: Getty Images

    অ্যাওয়ে কিটগুলো বৈচিত্র্যপূর্ণ হলেও, লিভারপুলের থার্ড কিটগুলোতে সাধারণত এক্সপেরিমেন্টের ছোঁয়া থাকে। ১৯৮৯ সালে প্রথমবারের মতো থার্ড কিট আনে লিভারপুল। ধূসর বর্ণের ওই কিটটাকে ওই মৌসুমের অ্যাওয়ে কিট হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা ছিল তাদের, কিন্তু অন্যান্য দলগুলোর জার্সির রঙের সাথে মিলে যাওয়ায় এটাকে থার্ড কিট হিসেবে ঘোষণা করে লিভারপুল। এরপর বিভিন্ন সময়ে থার্ড কিট হিসেবে সোনালি, নিয়ন গ্রিন, নেভি ব্লু-কমলা, পার্পেল, সাদা, নীলসহ বিভিন্ন রঙের বিভিন্ন ডিজাইন দিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করেছে লিভারপুল।

    ২০২৪-২৫ মৌসুমের থার্ড কিট; Image Source: Getty Images

    তবে অ্যাওয়ে বা থার্ড কিট যেমনই হোক না কেন, লিভারপুল পরিচয় তাদের লাল হোম জার্সি দিয়েই। ডাকনামটাও তাই এসেছে জার্সির ওই লাল রঙ থেকেই, “অলরেড”।

    আর হ্যাঁ, ২০১২ সাল থেকে অলরেডদের জার্সির পেছনে একটা ব্যাজ থাকে। দুই পাশে দুটো প্রজ্বলিত শিখার মাঝে লেখা থাকে ৯৭ সংখ্যাটি, স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় ক্লাবের ইতিহাসের ৪৫ বছর আগের বিয়োগান্তক ঘটনা, ‘হিলসবরো ট্র্যাজেডি’কে। সাথে যেন মনে করিয়ে দেওয়া হয়, “ইউ’ল নেভার ওয়াক অ্যালোন”।

    হিলসবরো ট্র্যাজেডিকে মনে করিয়ে দেওয়া '৯৭'; Image Source: Nike

    লিভারপুলের জার্সির গল্পে এখানেই দাঁড়ি টানা হোক। এবার বরং আসা যাক ইংল্যান্ডের আরেক সফল দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জার্সির গল্পে।

    লিভারপুলের মতো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডও পরিচিত তাদের লাল জার্সি দিয়ে। তবে শুরুতে কিন্তু ইউনাইটেডের জার্সির রঙ লাল ছিল না। ইন ফ্যাক্ট, দলটার নামই তো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছিল না!

    ১৮৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া দলটার নাম ছিল নিউটিন হেলথ এলওয়াইআর ফুটবল ক্লাব। ক্লাবের মূল খেলোয়াড়রা কাজ করতেন ল্যাঙ্কাশায়ার অ্যান্ড ইয়র্কশায়ার রেলওয়েতে, আর সেখান থেকেই আসে দলটির জার্সির সবুজ-সোনালি রঙটা। জার্সির দুই হাফে ছিল দুই রঙ, এর সাথে সাদা শর্টস আর সবুজ মোজা। তবে ১৯০০ সালের দিকে ক্লাবটা দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়। 

    প্রতিষ্ঠালগ্নে নিউটন হিথ এলওয়াইআর ফুটবল ক্লাব; Image Source: X

    ১৯০২ সালে ক্লাবটাকে কিনে নেন স্থানীয় ব্যবসায়ী জন হেনরি ডেভিস। এরপরই ক্লাবের নাম পরিবর্তিত হয়ে হয় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। পরিচয়ের সাথে সাথে নতুন জার্সির রঙও বেছে নেয় তারা। লাল জার্সি, সাদা শর্টস আর কালো মোজা।

    কে জানতো, যে এই লাল জার্সিই একটা সময়ে হয়ে যাবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রতিশব্দ।

    বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে এই সিম্পল কিটটাই পরতে দেখা গেছে ইউনাইটেডকে। এই জার্সিতেই চল্লিশ আর পঞ্চাশের দশকে, স্যার ম্যাট বাসবির অধীনে ইংল্যান্ডে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে তারা। ববি চার্লটন, ডানকান এডওয়ার্ডসদের ওই তারুণ্যনির্ভর দলটাকে ডাকা হতো ‘বাসবি বেবস’ নামে। পঞ্চাশের দশকে মাঠে দারুণ সাফল্য পাওয়া দলটার শেষ পরিণতি অবশ্য ভালো হয়নি। ১৯৫৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিউনিখে এক বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান আটজন খেলোয়াড়সহ মোট তেইশজন।

    'বাসবি বেবস'; Image Source: Getty Images

    ওই শোকাবহ ঘটনার পর ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে থাকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ষাটের দশকে ইউনাইটেডের জার্সি ছিল আরো বেশি মিনিমালিস্ট, যেন সাধারণ এক টুকরো লাল কাপড় দিয়েই তৈরি হয়েছিল জার্সিটা। বাসবি বেবসের বদলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এ সময়ে পরিচিত হতে থাকে ‘রেড ডেভিলস’ নামে। 

    মিউনিখ ট্র্যাজেডি; Image Source: Getty Images

    বলে রাখা ভালো, রেড ডেভিলস নামের পেছনে একটা গল্প আছে। সালফোর্ড রাগবি লিগ ক্লাব নামক একটা স্থানীয় রাগবি দল ছিল। পঞ্চাশের দশকে ফ্রান্স ট্যুরের সময়ে, ফরাসি মিডিয়া তাদেরকে আখ্যায়িত করে ‘রেড ডেভিলস’ বলে। পরে স্যার ম্যাট বাসবি এই নামটা পছন্দ করেছিলেন ইউনাইটেডের জন্য। আর মিউনিখ-দুর্ঘটনার পরে এই নামটা বিখ্যাত হতে শুরু করে ইউনাইটেডের জন্য। 

    এরপর সত্তরের দশকে প্রথমবারের মতো ক্লাবের ব্যাজ বসানো হয় জার্সিতে। এই সময়ে প্রথমবারের মতো নীল অ্যাওয়ে কিটও বের করে ইউনাইটেড, যে জার্সিটা মনে করিয়ে দিতো ইউনাইটেডেরই সেই আদি ক্লাব নিউটন হেলথ ক্লাবকে। আশির দশকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড চুক্তি করে শার্পের সাথে, ক্লাবের জার্সিতে প্রথমবারের মতো বসে স্পন্সরের লোগো। স্লিভ আর শর্টসে অ্যাডিডাসের ক্লাসিক তিনটা স্ট্রাইপ, ক্রু নেক কলার আর শার্পের লোগো সম্বলিত ওই জার্সিটা এখনো ইউনাইটেডের সমর্থকদের মনে করিয়ে দেয় পুরোনো দিনের কথা। এরপর নব্বইয়ের দশকে ইউনাইটেডে শুরু হলো ফার্গি-যুগ। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের অধীনে ইউনাইটেড হয়ে উঠতে ইউরোপীয় পরাশক্তি। ওই যুগের লাল জার্সির সাথে সোনালি-কালো ট্রিমের কলার আর সাদা শর্টসের কিটটা ম্যান ইউনাইটেডের অনেক সফল মুহূর্তের সাক্ষী।

    একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে জার্সি ম্যানুফ্যাকচারার হিসেবে ইউনাইটেড চুক্তি করে নাইকির সাথে। নাইকির জার্সিতে ডিজাইনের আধিক্য ছিল না। লাল জার্সির সামনে অ্যামেরিকান ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপের লোগো, দুই পাশে সাদা স্ট্রাইপ, সাদা শর্টস আর কালো মোজা, এই জার্সিতেই ২০০৭-০৮ মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ব্যালন ডি'অর জিতেছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।

    Image Source: Getty Images

    এরপর অনেক দিন কাটলো। মেডলক নদীতে বহু জল গড়ালো, ফার্গুসন চলে গেলেন, ইউনাইটেডের মাঠের সাফল্য কমে এলো। ২০১৫ সালে, ২৩ বছর পর আবারও ইউনাইটেডের সাথে চুক্তি করলো অ্যাডিডাস। একই সময়ে তাদের জার্সির মূল স্পন্সর ছিল শেভ্রলেট। অ্যাডিডাসের জার্সিতে বেশ পরীক্ষা-নিরীক্ষার ছোঁয়া দেখা যায়। ২০২০-২১ মৌসুমে ইউনাইটেডের হোম জার্সিতে ছিল কালো স্ট্রাইপ, ২০২১-২২ এর অ্যাওয়ে জার্সিটা ছিল ‘৯০-এর দশককে মনে করিয়ে দেওয়া নীল-সাদা রঙের।

    Image Source: Getty Images

    এরপর ২০২১-এ ইউনাইটেডের মেইন স্পন্সর হয় টিম ভিউয়ার। তাদের লোগো সম্বলিত ২০২১-২২ মৌসুমের জার্সিটা ছিল সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম সেরা জার্সি। ২০২২-২৩ মৌসুমের সবুজ-সাদা রঙের থার্ড কিটটাও তৈরি করা হয়েছিল নিউটন হেলথ ক্লাবকে স্মরণ করেই। চলতি ২০২৪-২৫ মৌসুমে লাল হোম জার্সির পাশাপাশি ইউনাইটেড বের করেছে নীল ধরনের অ্যাওয়ে আর সাদা-লাল-কালোর থার্ড কিটও।  

    Image Source: Getty Images

    লিভারপুল এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ইংল্যান্ডের দুই বড় দলই বিখ্যাত তাদের লাল হোম জার্সির কারণে, দুটো দলের ডাকনামেই আছে ‘রেড’ শব্দটা। তবে ইতিহাস-ঐতিহ্য আর ধারেভারে দুটো দলই সমৃদ্ধ হলেও দুই দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স অবশ্য বলছে পুরো ভিন্ন গল্পই।