আবারও শেষ মুহূর্তে রিয়ালকে হতাশ করল ডর্টমুন্ড
ম্যাচের তখন ৮৭ মিনিট। মার্সেলোর ভুলে কাউন্টারে বল পান অবামইয়াং। তার পাস থেকে নাভাসকে পরাস্ত করে ম্যাচে সমতা আনেন মার্কো রয়েস। সিগনাল ইদুনা পার্কের মত বার্নাব্যুতেও ডর্টমুন্ডের শেষ মুহূর্তের গোলে কপাল পুড়লো রিয়ালের। এর আগে বেনজেমার জোড়া ও অবামেয়াংয়ের গোলে ২-২ ব্যবধানে শেষ হয় ম্যাচটি। আজো গোল করতে ব্যর্থ হওয়ায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ গোলের 'সেঞ্চুরি'টা এখনো অধরাই থাকলো রোনালদোর।
আক্রমণ, পাল্টা-আক্রমণের ম্যাচের প্রথম সুযোগটি আসে মাত্র ৪ মিনিটেই। ভারানের ভুলে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শুর্লের শট উপর দিয়ে চলে গেলে স্বস্তির নি:শ্বাস ছাড়ে রিয়াল। ১০ ও ১৮ মিনিটে রোনালদোর সুযোগসন্ধানী দুটি পাসে গোল করতে ব্যর্থ হন বেনজেমা ও হামেস। অবশ্য ম্যাচের ২৮ মিনিটে রিয়ালকে ঠিকই লিড এনে দেন বেনজেমা। কারভাহালের নিচু ক্রস থেকে ওয়াইডেনফেলারকে পরাস্ত করেন এই ফরাসী স্ট্রাইকার। এই গোলের সুবাদে ৪৯ গোল নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বকালের ৬ষ্ঠ সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড এখন বেনজেমার। ম্যাচে একাধিক কাউন্টার অ্যাটাকে পাওয়া সুযোগ নষ্ট করেছেন দেম্বেলে, অবামইয়াংরা। ৪০ মিনিটে শুর্লের ফ্রিকিক দুর্দান্ত ভাবে বাঁচিয়ে দেন নাভাস। ১-০ গোলে শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধের মাত্র ৫ মিনিটেই এগিয়ে গিয়ে, এমনকি লিডও নিতে পারতো ডর্টমুন্ড। কিন্ত প্রথমার্ধের মতই দেম্বেলে ও ক্যাস্ট্রোর ভুলে তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ডর্টমুন্ডের ভুলের মাশুলটা ভালভাবেই নেয় রিয়াল। ৫২ মিনিটে সুবর্ণ এক সুযোগ হাতছাড়া করা বেনজেমা মিনিটখানেক পরেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন হামেসের নিখুঁত ক্রস থেকে। এই গোলের সুবাদে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গোলের 'হাফ সেঞ্চুরি' করলেন বেনজেমা, ইউসিএলে সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় উঠে আসলেন পঞ্চম স্থানে, ছুঁয়ে ফেলেছেন ইউসিএলে থিয়েরি অঁরির রেকর্ড। চলতি মৌসুমে অল্প সময় খেলেও রিয়ালের সর্বোচ্চ অ্যাসিস্ট এখন হামেস রদ্রিগেজের।
ম্যাচের ঘন্টাখানেক পর ডর্টমুন্ডকে ম্যাচে ফেরান অবামেয়াং। এই গোলের সুবাদে গ্রুপপর্বে বার্সা, রিয়াল ও ম্যান ইউনাইটেডের সর্বোচ্চ ২০ গোলের রেকর্ডে ভাগ বসালেন তুকেল শিষ্যরা। ৬৯ মিনিটে কর্ণার থেকে বেনজেমার হেড রয়েস লাইন থেকে বাঁচিয়ে না দিলে হ্যাটট্রিকটাও হয়ে যেত রিয়ালের 'নাম্বার নাইন' এর। ৭৮ মিনিটে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গোলের 'সেঞ্চুরি' পূরণের চমৎকার সুযোগ হাতছাড়া করেন রোনালদো। লুকাস ভাজকেজের দারুণ ক্রস থেকে কিপারকে একা পেয়েও রোনালদোর নেওয়া শট ফিরে আসে বারে লেগে
। ৮৭ মিনিটে অবামইয়াংয়ের পাস থেকে ডর্টমুন্ডকে সমতায় ফেরান রয়েস। সিগনাল ইদুনা পার্কেও ৮৮ মিনিটে শুর্লের গোলে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট ব্যর্থ হয়েছিল রিয়াল। এই গগোলে এক মৌসুমে গ্রুপপর্বে করা সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড এখন ডর্টমুন্ডেরই (২১)। শেষদিকে গোল করে আবারো মাদ্রিদের অভিজাতদের হতাশ করলেন রয়েস, অবামইয়াংরা। প্রায় ১৪ বছর পর ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে ২ গোলে এগিয়ে থেকেও জয়টা হাতছাড়া হল রিয়ালের। শেষবার এমনটি হয়েছিল এইকে অ্যাথেন্সের বিপক্ষে, সেই ম্যাচে দলে ছিলেন খেলোয়াড় জিদান।
এই ড্রতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই শেষ ষোলতে গেল ডর্টমুন্ড। গ্রুপ রানার আপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল রিয়ালকে। এই ড্রতে অবশ্য লিও বিনহাক্কেরের টানা ৩৪ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ডে ভাগ বসালেন জিদান।