• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    বিধ্বংসী বায়ার্নে বিধ্বস্ত আর্সেনাল

    বিধ্বংসী বায়ার্নে বিধ্বস্ত আর্সেনাল    

    দ্বিতীয়ার্ধের দশ মিনিটের এক ঝড়েই উড়ে গেল আর্সেনাল। অ্যালেয়াঞ্জ অ্যারিনাতে আর্সেনালকে ৫-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলেছে বায়ার্ন মিউনিখ। প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ প্রথমার্ধের পর ৫৩ থেকে ৬৩ মিনিটের মধ্যে আর্সেনালের জালে তিনবার বল পাঠিয়ে ম্যাচটা নিজেদের করে নিয়েছে আনচেলিত্তর দল। 

    ম্যাচের স্কোরলাইন অবশ্য প্রথমার্ধের প্রতিদ্বন্দ্বীতার কথা বলে না। তবে প্রথম ৪৫ মিনিটে দুই দলের লড়াইটা ছিল হাড্ডাহাড্ডি। প্রথমার্ধের শুরুটা ছিল বায়ার্নের মিউনিখের আক্রমণ দিয়েই। গোল পেতেও দেরী করতে হয়নি। ১১ মিনিটে রোবেনের ডিবক্সের বাইরে থেকে করা গোলে এগিয়ে যায় জার্মান চ্যাম্পিয়নরা। ডান প্রান্ত থেকে কাট করে ঢুকে ডিবক্সের বাইরে থেকে টপ কর্নারে বল জড়ান রোবেন। অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না আর্সেনাল গোলরক্ষক ডেভিড অস্পিনার। 



    আধ ঘন্টা পার হবার পর ম্যাচে ফেরার দারুণ সুযোগ পায় আর্সেনাল। পেনাল্টি পেয়ে যায় ওয়েঙ্গারের দল! সানচেজের নেয়া স্পটকিক প্রথমে ঠেকিয়ে দিলেও শেষরক্ষা করতে পারেননি ম্যানুয়েল নয়্যার। ফিরতি বলে দ্বিতীয় চেষ্টায়ও ব্যর্থ হলে, তিন দানে ঠিকই বায়ার্নের জালে বল জড়ান সানচেজ। সমতায় ফেরা ম্যাচে উত্তেজনা ফিরে আসে। এরপর প্রথমার্ধের বাকিটা সময় বেশি উজ্জ্বল ছিল আর্সেনালই।

    লড়াইয়ের আভাস দিয়েও দ্বিতীয়ার্ধে বদলে যায় ওয়েঙ্গারের দল, ঘুরে যায় পাশার দান। আসলে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে বায়ার্নই। একের পর এক আক্রমণে কোনঠাসা করে ফেলে আর্সেনালকে। গানারদের লন্ডভন্ড করে দেয়ার সূচনাটা করেন লেভানডফস্কি নিজে। ৫৩ মিনিটে গোল করেন হেড থেকে। এই গোল নিয়ে অ্যালেয়াঞ্জ অ্যারিনায় শেষ ১৩ ম্যাচে পোলিশ স্ট্রাইকারের গোল সংখ্যা হল ১৫ টি! এখানেই অবদান শেষ নয় লেভানডফস্কির, এরপর সতীর্থ থিয়াগোকে সাহায্য করেন গোল করতে। তার দেয়া দারুণ এক ব্যাক ফ্লিক থেকে বল পেয়ে গোল করেন থিয়াগো। ৫৬ মিনিটে খেলার স্কোর দাঁড়ায় ৩-১। উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচটা একপেশে হয়ে যায় তখনই।



    কিন্তু বায়ার্নের গোলক্ষুধা কি আর তাতে কমে! বায়ার্নের একের পর এক আক্রমণ সামলাতে ব্যস্ত আর্সেনাল ডিফেন্ডাররা  ৬৩ মিনিটে আবারও গোল খেয়ে বসে। গোলদাতা এবারও থিয়াগো। চ্যাম্পিয়নস লিগে আগের ৩২ ম্যাচে মাত্র তিন গোল করা থিয়াগো আর্সেনালের বিপক্ষেই আজ করলেন আরও দুই গোল। থিয়াগোর মতো গোলখরা কাটিয়েছেন থমাস মুলারও। ৮৬ মিনিটে  মাঠে নেমে পঞ্চম গোলটি করেন মুলার। এই মৌসুমে গোল করতে ভুলে যাওয়া মুলারের অবশ্য চ্যাম্পিয়নস লিগে ৩৯ তম গোল এটি! 

    শেষ পর্যন্ত ৫-১ গোলে শেষ হয় খেলা। আর্সেনালের গোলরক্ষক ডেভিড অস্পিনা অসাধারণ কিছু সেভ করে দলকে আরও বড় বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। স্কোরলাইনটা আরও বড় হতে না দেয়ায় অবশ্য রেফারির অবদানও কম নয়! ম্যাচে দুইবার পেনাল্টিও পেতে পারত বায়ার্ন; তবে রেফারির সিদ্ধান্তটা পক্ষে না যাওয়ায় হয়ত ম্যাচ শেষে তেমন একটা আফসোস থাকবে না আনচেলত্তির!  

    ২০১৫ সালে শেষবার এই দুই দলের দেখায়ও ৫-১ গোলেই হেরেছিল আর্সেনাল। সেই পুরোনো স্কোরলাইনটিই ফিরে এলো আজ আরেকবার। ইউরোপে ইংলিশ দলদের মধ্যে সবার আগে ২০০ গোল হজমের লজ্জাটা সঙ্গী হয়েছে আর্সেনালের আজকের ম্যাচ শেষেই। সাথে দ্বিতীয় লেগের আগেই আরও একবার প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল শেষ ষোল থেকে আর্সেনালের বিদায়। অন্যদিকে অনেক প্রাপ্তির রাতে বায়ার্নের সাফল্যের মুকুটে যোগ হয়েছে আরেকটি পালক। ঘরের মাঠে সবচেয়ে বেশি জয়ের রেকর্ডটা এখন বায়ার্নেরই। নিজেদের মাঠটাকে এবার আনুষ্ঠানিকভাবেই 'দূর্গ' ঘোষণা করতে পারেন বায়ার্ন মিউনিখ সমর্থকেরা।