রোনালদোর রাতে রিয়ালের জয়
বছর তিনেক আগে এই আলিয়াঞ্জ অ্যারেনাতেই জোড়া গোল করে এক যুগ পর রিয়ালকে নিয়ে গিয়েছিলেন চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে। চলতি মৌসুমে ফর্মটা ভাল যাচ্ছিল না। বায়ার্নের মাঠে ফিরলেও রোনালদোর জাল খুঁজে পাওয়ার পক্ষে বাজি ধরার লোকের সংখ্যা ছিল নেহায়েতই কম। কিন্তু প্রত্যেকবারের মত এবারো দলের প্রয়োজনে স্বরূপে ফিরলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। 'সিআর৭'-এর জ্বলে ওঠার রাতে পিছিয়ে পড়েও বায়ার্নকে তাদেরই মাঠে ১-২ ব্যবধানে হারালো রিয়াল মাদ্রিদ। জোড়া গোল করেছেন রোনালদো, সেই সাথে বনে গেছেন ইউরোপিয়ান প্রতিযোগীতায় গোলের 'সেঞ্চুরি' পূরণ করা একমাত্র খেলোয়াড়।
স্কোরলাইনটা আরও বড় হতে পারতো রিয়ালের পক্ষেই। রিয়ালের আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের সুযোগ হাতছাড়ার ম্যাচে রীতিমত দুর্ভেদ্য দেয়ালই হয়ে উঠেছিলেন ম্যানুয়েল নয়্যার। একাধিক নিশ্চিত গোল বাঁচিয়ে টিকিয়ে রেখেছেন বায়ার্নের সেমিতে যাওয়ার প্রদীপ।
ম্যাচ হারলেও শুরুতে লিডটা নিয়েছিল বায়ার্নই। ২৫ মিনিটে ভিদালের গোলে এগিয়ে যায় বায়ার্ন। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সর্বশেষ ম্যাচে চিলির হয়ে গোলের একাধিক সুযোগ হাতছাড়া করা ভিদাল বলেছিলেন, গোলগুলো তিনি বাঁচিয়ে রাখছিলেন রিয়ালের জন্যই। ভিদালের কথা যে এভাবে ফলবে, এমনটা খুব সম্ভবত ভাবেননি কট্টর বায়ার্ন সমর্থকেরাও। প্রথমার্ধের একেবারে শেষদিকে বিতর্কিত এক পেনাল্টি পায় বায়ার্ন। কিন্তু ১২ গজ বল জালে পাঠাতে ব্যর্থ হন সেই ভিদালই। ভিদালের পেনাল্টি মিসে হালে পানি ফিরে পাওয়া রিয়াল সমতায় ফেরে দ্বিতীয়ার্ধের একেবারে শুরুতেই। ৪৭ মিনিটে কারভাহালের ক্রস থেকে বল জালে পাঠান ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
এই গোলের সুবাদে টানা ৫৩ ম্যাচে গোল পেল 'লস ব্লাঙ্কোস'রা। ৫৮ মিনিটে পর্তুগিজ সুপারস্টারকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন হাভি মার্টিনেজ। এর মিনিট তিনেক পর আবারো রোনালদোকেই ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় এই স্প্যানিশকে। বাকি ম্যাচ আক্ষরিক অর্থেই ছিল নয়্যার বনাম রিয়ালের আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের। মিনিট দুয়েকের মাঝে রোনালদো ও বেনজেমার নিশ্চিত দুটি গোল বাঁচিয়ে দেন দীর্ঘদেহী এই কিপার। কিন্তু ৭৭ মিনিটে আর শেষরক্ষা হয়নি বায়ার্নের। বেলের বদলি হিসেবে নামা অ্যাসেন্সিওর ক্রস থেকে নয়্যারকে ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মত পরাস্ত করেন রোনালদো। জার্মান দলের বিপক্ষে রিয়ালের পারফরম্যান্স খারাপ থাকলেও এখানেও উজ্জ্বল রোনালদো। জার্মানীর দলগুলোর বিপক্ষে ১৯ বার জাল খুঁজে পেয়েছেন এই উইঙ্গার।
৮৩ এবং ৯২ মিনিটে বেনজেমা ও রামোসের দুটি গোল বাতিল হয় অফসাইডের কারণে। ম্যাচের একেবারে শেষদিকে কারভাহালের আরো একটি নিখুঁত ক্রস হেড দিতে গিয়ে পড়ে যান রোনালদো। নাহলে হ্যাটট্রিক নিয়েই মাঠ ছাড়তে পারতেন 'সিআর৭'। আজকের জয়ে ইউসিএল-এ হোমে বায়ার্নের টানা ১৭ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড ভেঙ্গে দিল রিয়াল মাদ্রিদ। সেমিতে যেতে হলে দ্বিতীয় লেগে দু গোলের ব্যবধানে জিততে হবে বায়ার্নকে।
রাতে অন্য ম্যাচে নিজেদের ঘরের মাঠে লেস্টার সিটির বিপক্ষে ১-০ তে জয় পেয়েছে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। গোল করেছেন আন্তোনিও গ্রিযমান। আর গতকাল পরিত্যক্ত হওয়া শেষ আটের অন্য ম্যাচে বরুশিয়াকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে মোনাকো।