ডর্টমুন্ড দুর্গ জয় করলেন রোনালদো
রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি গায়ে রোনালদোর ৪০০ তম ম্যাচ। আর সবমিলিয়ে ইউরোপিয়ান ফুটবলে ১৫০ তম। দুইটি মাইলফলক ছোঁয়ার দিনে দুই গোল করে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো উদযাপন করলেন নিজের মতো করেই। আর তাতেই চ্যাম্পিয়নস লিগের 'এইচ' গ্রুপের খেলায় বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে ৩-১ গোলে হারাল রিয়াল মাদ্রিদ।
আক্রমন-পালটা আক্রমণ, দেখার মতো গোল, রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্ত- সিগ্নাল ইদুনা পার্কে দুই দলের খেলা ছিল উত্তেজনায় ঠাসা। গতিশীল ফুটবল আর আক্রমণ, প্রতি আক্রমণে জমে ওঠা খেলায় চোখ সরানোই কঠিন হয়ে পড়েছিল প্রথম মিনিট থেকেই। শুরুতে সুযোগটা পেয়ে গিয়েছিল রিয়ালই। তবে দানি কারভাহালের নেয়া শট সহজেই ঠেকিয়ে দিয়ে সে যাত্রা দলকে বাঁচান রোমান বুয়ের্কি। ডর্টমুন্ড গোলরক্ষককে অবশ্য এরপর আরও বেশ কয়েকবার পড়তে হয়েছে কঠিন পরীক্ষার সামনে।
কারভাহালকে ফিরিয়ে দিলেও এর কিছুক্ষণ পর তিনিই হয়ে গেলেন রিয়ালের গোলের উৎস। তার উড়িয়ে মারা ক্রসে দারুণ এক ভলিতে জালে বল জড়িয়ে ম্যাচে প্রথমবারের মতো দলকে এগিয়ে দেন গ্যারেথ বেল। হতভম্ভ বুয়ের্কির নিরুপায় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার ছিল না সেসময়। পুরো ম্যাচে দারুণ কিছু সেভ করলেও, এমন অসহায় মুহুর্তে আরও দুবার পড়তে হয়েছে ডর্টমুন্ড গোলরক্ষককে।
রিয়ালের ওই গোলের আগেই ঘটেছিল ম্যাচের বিতর্কিত ঘটনা। ম্যাক্সিমিলিয়ানো ফিলিপের হেড প্রথমে কেইলর নাভাস ঠেকিয়ে দেয়ার পর গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করার সময় বল হাতে লাগে সার্জিও রামোসের। ডর্টমুন্ড পেনাল্টির আবেদন করলেও অবশ্য সেটা এড়িয়েই গেছেন রেফারি।
বিরতির আগে অবশ্য রামোসই পারতেন ব্যবধান দ্বিগুণ করতে। কিন্তু কর্নার থেকে ফাঁকায় থেকেও হেড করে লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। রামোসের আফসোসটা দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আরও বাড়তে পারত। তবে সেই যাত্রায়ও রামোসকে বাঁচিয়েছেন সতীর্থ রাফায়ের ভারান। ইয়ারমালেংকার হেড ভারান গোললাইন থেকে ক্লিয়ার না করলে ৪৬ মিনিটেই সমতায় ফিরতে পারত ঘরের দল। এরপর উলটো ডর্টমুন্ডের আফসোসটাই বাড়িয়ে দেন রোনালদো। বেলের পাস থেকে বাঁ পায়ের শটে জালে বল জড়ান ওই ঘটনার চার মিনিট পরই।
রিয়ালের দুই গোলের লিডটা অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৫৪ মিনিটে অবামেয়াংয়ের গোলে প্রাণ ফিরে পায় ডর্টমুন্ড। গোল পেলেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা ভালো যায়নি অবামেয়াংয়ের। আরও বেশ কিছু সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে হয়ত হার এড়াতে পারত তার দল।
অবামেয়াং অবশ্য সুযোগ কাজে লাগানোর শিক্ষাটা পেতে পারেন এই ম্যাচ থেকেই, রোনালদোর কাছ থেকে। ৭৯ মিনিটে জোরালো শটে গোল করে আবারও ম্যাচ থেকে ডর্টমুন্ডকে ছিটকে দেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। পরে আর সেখান থেকে এরপর আর ফিরে আসা হয়নি ডর্টমুন্ডের। বরং মার্কো আসেনসিও, রামোসরা বাড়াতে পারতেন জয়ের ব্যবধান। তবে দুবারই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বুয়ের্কি। ৭৬ মিনিটে আসেনসিওর বদলি হয়ে মাঠ ছাড়ার আগে দারুণ এক সেভ করে ইস্কোকেও গোলবঞ্চিত করেছিলেন তিনি।
আগের ম্যাচে করেছিলেন দুই গোল, এবারও তুলনামূলক কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষেও দেখা মিললই একই রোনালদোর। চ্যাম্পিয়নস লিগে শেষ সাত শট অন টার্গেটের ৬ টি থেকেই গোল করেছেন তিনি। আগের মৌসুমে দুইবারের চেষ্টায় হারাতে না পারলেও, এবার রোনালদো একাই আসলে হারিয়ে দিলেন ডর্টমুন্ডকে।