প্রতিপক্ষের উপহারেই এলো বার্সার কষ্টের জয়
স্কোরলাইন দেখে অনেক সময়ই ম্যাচের আসল চেহারাটা বোঝা যায় না। আবার কখনো কখনো তার ব্যতিক্রমও হয়। আজ যেমন হলো। ১-০ গোলের জয়টা যতটা কষ্টসাধ্য হওয়ার কথা, স্পোর্টিং লিসবনের সঙ্গে বার্সেলোনার জয় পেতে তার চেয়েও বেশি ঘাম ঝরাতে হয়েছে। বার্সার জন্য শেষ পর্যন্ত জীয়নকাঠি হয়ে এসেছে এই মৌসুমে তাদের গোলের আরেকটি অন্যতম উৎস- আত্মঘাতী গোল। তবে এই মৌসুমে এখনো প্রতিটা ম্যাচেই জিতেছে, সেটা মনে করেই বার্সা কোচ আরনেস্তো ভেলভার্দে একটু তৃপ্তি খুঁজতে পারেন।
শুরু থেকেই দুই দলের লড়াই হয়েছে সেয়ানে সেয়ানে। মেসি, সুয়ারেজরা যখনই স্পোর্টিং-রক্ষণে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন, বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন ম্যাথিউ-কোয়েন্ত্রাওরা। প্রথমার্ধের ৪২ মিনিটে কোয়ান্ত্রাও মেসির নিশ্চিত গোলটা দারুণ এক ট্যাকলে বাঁচিয়ে দিলেন। কোয়েন্ত্রাওর উদযাপনটা এরপর গোল করার চাইতে কম কিছু ছিল না!
প্রথমার্ধে বার্সা আর কোনো গোল পায়নি। রাকিতিচ, ইনিয়েস্তারা মাঝ মাঠে ছিলেন একেবারেই অনুজ্জ্বল। দুজনেই বেশ কিছু ভুল পাস দিয়েছেন, সুয়ারেজও ঠিক সপ্রতিভ ছিলেন না। মেসি যাও একটু সুযোগ পাচ্ছিলেন, সেটা আটকে যাচ্ছিল প্রতিপক্ষ রক্ষণে। শেষ পর্যন্ত ভাগ্যের সহায়তাই দরকার হলো বার্সার। উড়ে আসা ফ্রিকিকটা হেড করে সুয়ারেজ গোলই করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ঠিকঠাক না লাগায় সেটা চলে যায় পেছনে। সেবাস্তিয়ান কোয়াতেস কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখেন, বলটা তার গায়ে লেগে জড়িয়ে গেছে জালে। এই মৌসুমে সবশুদ্ধ চারটি আত্মঘাতী গোল পেল বার্সা, এর চেয়ে বেশি গোল পেয়েছেন শুধু লিওনেল মেসি।
এরপরও স্পোর্টিংও রক্ষণ পরীক্ষা দিয়ে গেছে, ম্যাথিউস দারুণ ট্যাকলে আরেক বার রুখে দিয়েছেন পুরনো সতীর্থ মেসিকে। সুযোগ পেয়েছিল স্পোর্টিংও, কিন্তু টের স্টেগেনের দুর্দান্ত সেভে সমতা ফেরাতে পারেনি। শেষ দিকে বরং পলিনহোই ভালো একটা সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি।
বার্সার সঙ্গে আগের ম্যাচ হারার পর অবশ্য আজ ফিরে এসেছে জুভেন্টাস। ফিরেছেন এই মৌসুমে নিজেকে হারিয়ে খুঁজতে থাকা গঞ্জালো হিগুয়াইনও। ৬০ মিনিটে বদলি হিসেবে নেমেছিলেন, নয় মিনিট পরেই পেয়েছেন প্রথম গোল। অলিম্পিয়াকোসের সঙ্গে ২-০ গোলের জয়ে অন্য গোলটি মারিও মানজুকিচের।
বরং মস্কোতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জয়টাই অনেক সহজে এসেছে। সিএসকেএ মস্কোর সঙ্গে ৪-১ গোলের জয়ে জোড়া গোল করেছেন রোমেলু লুকাকু। অন্য দুইটি গোল করেছেন অ্যান্থনি মার্শিয়াল ও হেনরিক মিখিতারিয়ান। ২০১৩ সালের পর এই প্রথম প্রতিপক্ষের মাঠে গিয়ে গোল পেল ইউনাইটেড, চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে গ্রুপের সবার ওপরেই রইল। বরং দিনের সবচেয়ে বড় চমক বলা যায় সুইস ক্লাব বাসেলের কাছে পর্তুগালের বেনফিকার ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়া।
দিনের অন্য দুই ম্যাচে অ্যান্ডারলেখটকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে সেল্টিক। তার আগে আজারবাইজানের ক্লাব কারাবাগকে ২-১ গোলে হারিয়েছে রোমা।