অন্তিম মুহূর্তের গোলে জিতল চেলসি
অতিরিক্ত সময়ের মাত্র ত্রিশ সেকেন্ড বাকি তখন। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের অর্ধে ফ্রিকিক পেল চেলসি। উইলিয়ান, এন’গোলো কান্তে, তিয়েমুয়ে বাকায়োকো হয়ে ডিবক্সে বল পেলেন মার্কোস আলোনসো। ‘উইক ফুট’-এ করা আলোনসোর মাইনাসে ইয়ান ওবলাককে পরাস্ত করলেন মিনিট দশেক আগে বদলি হিসেবে নামা মিচি বাতশুয়াই। পিছিয়ে পড়েও আক্ষরিক অর্থেই ম্যাচের শেষ কিকে জয় নিশ্চিত করায় অবিশ্বাসে চোখ ঢাকা আন্তোনিও কন্তে পরমূহূর্তেই মাতলেন বুনো উল্লাসে। ‘ভিআইপি’ বক্সে থাকা দিয়েগো কস্তার হাত দিয়ে মুখ ঢাকার অভিব্যক্তিই যেন তখন সমগ্র অ্যাটলেটিকোর প্রতিচ্ছবি। নিজেদের নতুন মাঠ ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচটা স্মরণীয় করে রাখতে পারলো না অ্যাটলেটিকো। চেলসির কাছে ২-১ গোলে হেরে গেছে সিমিওনের দল।
দুই ক্লাবের মধ্যে ‘সাবেক’ এবং ‘বর্তমান’-এর খেলোয়াড়দের তালিকাটা বেশ বড়ই বলা চলে। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে মাঠ কাঁপানো দিয়েগো কস্তা, ফার্নান্দো তরেস এবং ফিলিপ লুইজ, থিবো কর্তোয়া- চারজনই খেলেছিলেন চেলসির হয়ে। ইংল্যান্ডযাত্রা শেষে নাড়ির টানে কস্তারা মাদ্রিদে ফিরলেও স্ট্যামফোর্ড ব্রিজেই থিতু হয়ে গেছেন কর্তোয়া। ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে রীতিমত সাবেক-বর্তমানদের এক পুনর্মিলনীই বসেছিল আজ।
কস্তার অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে প্রথম সুযোগটা পেয়েছিল চেলসিই। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে এডেন হ্যাজার্ডের দুর্দান্ত শট ওবলাককে ফাঁকি দিলেও প্রতিহত হয় বারে। চেলসির আক্রমণ জোয়ার সামলে লিডটা নিয়েছিল অ্যাটলেটিকোই। ৩৯ মিনিটে ডিবক্সে লুকাস হার্নান্দেজকে ফেলে দিয়ে সিমিওনের দলকে পেনাল্টি উপহার দেন ডেভিড লুইজ। ১২ গজ থেকে দীর্ঘদেহী কর্তোয়াকে পরাস্ত করতে ভুল করেননি আঁতোয়া গ্রিজমান। প্রথমার্ধের অন্তিম মূহূর্তে কোকের শট কর্তোয়া রুখে দিলেও ফিরতি বলে মাত্র গজ দুয়েক দূরে থাকা সল নিগুয়েজের শট চলে যায় গোলের বাইরে দিয়ে। প্রথমার্ধে গোলের বেশকিছু সুযোগ হাতছাড়া করার বেশ চড়া মূল্যই দিতে হয়েছে অ্যাটলেটিকোকে।
দ্বিতীয়ার্ধের ৫৯ মিনিটে অবশেষে ওবলাককে পরাস্ত করতে সক্ষম হয় চেলসি। বাঁ-প্রান্ত থেকে হ্যাজার্ডের ক্রসে দারুণ এক হেডে দলকে সমতায় ফেরান চেলসির সমর্থকদের নতুন ‘চোখের মণি’ আলভারো মোরাতা। মিনিট তিনেক পর লিডটাও প্রায় নিয়েই নিয়েছিল চেলসি। ৬২ মিনিটে হ্যাজার্ডের শট ওবলাক ফিরিয়ে দিলেও সলের মতই ফিরতি বলে সহজ গোল মিস করেন সেস্ক ফ্যাব্রেগাস। শেষমেশ বাতশুয়াইয়ের অন্তিম মূহূর্তের গোলেই পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে চেলসি। চলতি বছরে প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড়দের মধ্যে বদলি হিসেবে নেমে সর্বোচ্চ গোল এখন এই বেলজিয়ানেরই (৪)। আর দারুণ একটা পারফরম্যান্সের পর কন্তে দাবি করতেই পারেন, জয়টা তাদের পাওনা ছিল!