• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    প্যারিসে 'খুন' হল বায়ার্ন

    প্যারিসে 'খুন' হল বায়ার্ন    

    ৯০ মিনিটের ম্যাচে তখন ৯০ সেকেন্ডও পার হয়নি। ডান দিক থেকে দুইজন ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে ক্রস করলেন নেইমার। এডিনসন কাভানি ঠিক নাগাল পেলেন না বলের। পেছন থেকে দৌড়ে আসা দানি আলভেজ ঠিকই সেই বল পাঠালেন জালে। পার্ক ডি প্রিন্সেসে শুরু থেকেই এগিয়ে যাওয়া প্যারিস সেন্ট জার্মেইকে আর ধরতেই পারল না বায়ার্ন মিউনিখ। আলভেজের পর গোল করলেন কাভানি আর নেইমারও। আর তাতে বায়ার্ন মিউনিখকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে দিল পিএসজি।

    নেইমার, কাভানি, কিলিয়ান এমবাপ্পেরা কতোটা ভয়ঙ্কর হতে পারেন তার প্রমাণটা হাতে নাতেই পেল কার্লো আনচেলত্তির দল। এমবাপ্পে কেবল গোল পাননি, কিন্তু পুরো ম্যাচেই ভুগিয়েছেন বায়ার্নের রক্ষণকে।  কাভানি আর নেইমারের গোলে এমবাপ্পের অবদানটাই ছিল সবচেয়ে বেশি।    



    দুই ব্রাজিলিয়ানের কল্যাণে দারুণ এক শুরুর পরও অবশ্য খেই হারিয়েছিল পিএসজি। তবে রোবেন-রিবেরিবিহীন বায়ার্ন ম্যাচে বল পজেশনে এগিয়ে থাকলেও সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারেনি। আক্রমণভাগে যে কোনো খেলোয়াড়ের চেয়ে  বরং জাভি মার্টিনেজই পেয়েছিলেন গোলের ভালো সুযোগ। ১৯ মিনিটে ডিবক্সের বাইরে থেকে জোরালো এক শট করেছিলেন। কিন্তু আলফোন্সে আরিওলা শক্তহাতে প্রতিহত করেন বায়ার্নের সেই চেষ্টা। এরপর রবার্ট লেভানডফস্কিও পেতে পারতেন গোল। কিন্তু বাঁ দিক থেকে আসা ক্রসে ঠিকমতো হেড করতে পারেননি পোলিশ স্ট্রাইকার।

    গোল না করার দুঃখ অবশ্য এর কিছুক্ষণ পরই ভুলতে পারতেন লেভানডফস্কি। কিন্তু তার করা ক্রস থেকে এবার পা ছোঁয়াতে পারেননি ডেভিড আলাবা।

    মাঝমাঠে বলের দখল নিয়ে বায়ার্ন আক্রমণে সুবিধা করতে না পারলেও প্রতি আক্রমণে নেইমার-এমবাপ্পেরা ঠিকই কাজে লাগিয়েছেন সুযোগগুলো। ৩১ মিনিটে এমবাপ্পের মাইনাস থেকে গোল করে কাভানি ম্যাচটা নিয়ে আসেন পিএসজির হাতের মুঠোয়।



    বায়ার্নকে ওলট-পালট করে দিয়ে প্রথমার্ধেই তিন গোলের লিড নিতে প্যারিসিয়ানরা। নেইমার-কাভানি-এমবাপ্পের সমন্বয়ে দারুণ এক গোলও দেখতে পারত চ্যাম্পিয়নস লিগ। কিন্তু শেষ কাজটা ভালোভাবে করতে পারেননি কাভানি। নেইমারের ব্যাকহিল থেকে কাভানির দূর্বল শট সহজেই ঠেকিয়ে দেন বায়ার্ন গোলরক্ষক।

    বুন্দেসলিগায় ম্যানুয়েল নয়্যারের অভাবটা ভালোই টের পেয়েছিল বায়ার্ন। এবার চ্যাম্পিয়নস লিগেও তার না থাকাটা ভুগিয়েছে দলকে। তার জায়গায় খেলতে নামা সভেন উলরেইখকে কঠিন এক পরীক্ষাই দিতে হয়েছে আজ। বলার অপেক্ষা রাখে না, পরীক্ষায় উতারাতে পারেননি বায়ার্ন গোলরক্ষক।

    দুই গোলে পিছিয়ে থেকে নিজের কৌশল থেকে কিছুটা ফিরে আসেন আনচেলত্তি। বিরতির পরই মাঠে নামান সেবাস্তিয়ান রুডি আর কিংসলে কোমানকে। তবে কৌশল বদলেও সুফল পাননি বায়ার্ন কোচ। উলটো ৬৩ মিনিটে নেইমার পিএসজির তৃতীয় গোল করে তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করেন ম্যাচে। এবারও গোলের উৎসব এমবাপ্পে। ডিবক্সের ভেতর থেকে দেয়া তার ক্রসেই গোল করেন নেইমার।  ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড অবশ্য আরও আগেই গোল পেতে পারতেন ম্যাচে। কিন্তু বায়ার্ন গোলরক্ষককে একা পেয়েও এর আগে বল মেরেছিলেন বারপোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে।

    তিন গোলে পিছিয়ে থেকে আরিয়েন রোবেনকে মাঠে নামিয়েছিলেন আনচেলত্তি। ততোক্ষণে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন পিএসজির আক্রমণভাগের ত্রয়ী। এরপর পিএসজির জালে একবার বল ঢুকিয়েও গোলবঞ্চিত হতে হয়েছে আরতুরো ভিদালকে। রেফারির অফসাইড সিদ্ধান্তে বাতিল হয় গোল। দ্বিতীয়ার্ধে দুই গোলে পিছিয়ে থাকার সময় জাভি মার্টিনেজও বল প্রায় ঢুকিয়ে ফেলেছিলেন জালে। কিন্তু গোললাইন অতিক্রম করার আগেই বল ক্লিয়ার করেন থিয়াগো সিলভা।

    শেষ দিকে দারুণ এক শট করেছিলেন কোমান। তাতে হয়ত ব্যবধানটাই কেবল কমাতে পারত বায়ার্ন। কিন্তু সে চেষ্টাও ব্যর্থ হয়ে যায় আরিওলার দৃঢ়তায়।