সিলেটে চুরমার ঢাকার অহংকার
বিপিএল, ম্যাচ ১, সিলেট
ডায়নামাইটস ১৩৬/৭, ২০ ওভার (সাঙ্গাকারা ৩২, লুইস ২৬, সাকিব ২৩, ডেলপোর্ট ২০, প্ল্যাঙ্কেট ২/২০, নাসির ২/২১, আবুল ২/২৪)
সিক্সারস ১৩৭/১, ১৬.৫ ওভার (থারাঙ্গা ৬৯*, ফ্লেচার ৬৩, রশিদ ১/৩১)
ফল : সিক্সারস ৯ উইকেটে জয়ী
খেলা শুরু হতে তখনো ঘন্টা দেড়েক বাকি, সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের সবকটি গেটেই এর অনেক আগে থেকে লম্বা লাইন। শুরুতে গ্যালারি ফাঁকা থাকলেও ম্যাচ শুরুর একটু পর তা হয়ে গেল কানায় কানায় পূর্ণ। ১৮ হাজার দর্শকের সকাল থেকে রোদ মাথায় করে অপেক্ষাটা বৃথা যায়নি, ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটসের সঙ্গে প্রথম ম্যাচে সিলেট সিক্সারস পেয়েছে ৯ উইকেটের সহজ জয়।
কাগজে কলমে অবশ্য বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকাই এগিয়ে ছিল। তবে মাঠের হিসেব বদলে দিল সিলেট। উইকেট যেমন ধারণা করা হচ্ছিল, তার চেয়ে কিছুটা স্লথই ছিল। সেটি বুঝতে পেরে নাসির হোসেনের টসে জিতে বল করার সুফল এল দ্রুত। প্রথম ওভারেই নাসিরের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে হোয়াইটলিকে ক্যাচ দিলেন গত আসরের চমক মেহেদী মারুফ। শুন্য রানেই ঢাকা হারাল প্রথম উইকেট।
এরপর এভিন লুইস ও কুমার সাঙ্গাকারা মিলে একটু হাল ধরার চেষ্টা করছিলেন। দুজনের ৫৪ রানের জুটির সময় বড় কিছুর আশা দেখছিল ঢাকা। তবে নবম ওভারে আরও একবার নাসির দিলেন ব্রেকথ্রু। এবারও স্লথ উইকেটে টাইমিংয়ের গণ্ডগোল, ২৪ রান করে লং অফে ক্যাচ দিলেন লুইস।
একেকটা ক্যাচের সঙ্গে গ্যালারিতে তখন উল্লাসের তুমুল কোরাস। স্টেডিয়ামের এক প্রান্তের গ্রিন গ্যালারিতেও তখন রোদ উপেক্ষা করে মানুষজন চেঁচিয়ে উৎসাহ দিচ্ছে সোল্লাসে। দশম ওভারে প্লাঙ্কেটকে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন সাঙ্গাকারা, ৩২ রানেই থেমে গেল তাঁর ইনিংস।
ঢাকার পথ হারানোর শুরু তখন। সাকিবের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে গেলেন মোসাদ্দেক। তবে তখনও সাকিব আল হাসানের সঙ্গে টি-টোয়েন্টির অভিজ্ঞতম কাইরন পোলার্ড ছিলেন, একটি ছয় মেরে বড় কিছুর আশাও দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু পিচ পড়তে বাকিদের মতো ব্যর্থ হয়েও পোলার্ডও মারিতে গিয়ে দিলেন উইকেট। ১৭তম ওভারে সাকিব আল হাসানও যখন ২৩ রানে সেই মারতে আউট হলেন, ঢাকার ১৫০ করার আশা বড় একটা ধাক্কা খেল। শেষ ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রান করতে পেরেছে ঢাকা, এক ক্যামেরন ডেলপোর্টই যা একটু চেষ্টা করেছেন। শুভাগত হোমের এক ক্যাচ মিস ছাড়া সিলেটের ফিল্ডিংও ছিল দারুণ।
১৩৬ রানের লক্ষ্যটা এই উইকেটে যতটা সহজ হওয়ার কথা ছিল, সিলেটের দুই ওপেনার তার চেয়েও সহজ বানিয়ে ফেলেছেন। আন্দ্রে ফ্লেচার ও উপুল থারাঙ্গা প্রথম পাঁচ ওভারেই প্রায় নিশ্চিত করে দিয়েছেন ম্যাচের ফল। এর মধ্যেই রান হয়ে গেছে ৪০, ফ্লেচার-থারাঙ্গা চার ছয়ও মেরে ফেলেছেন।
শুরুতে ফ্লেচার একটু সতর্ক থাকলেও পরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন, ৩৮ বলেই পেয়ে গেছেন ফিফটি। তবে থারাঙ্গা ছিলেন আরও বেশি আগ্রাসী, ফিফটি পেয়ে গেছেন ৩৫ বলেই। শেষ পর্যন্ত মাত্র ১৬.৫ ওভারেই জয় পেয়ে গেছে সিলেট, স্টেডীয়ামের সিক্সারস সিক্সারস ধ্বনিটা অনুরণিত হয়েছে লাক্কাতুরার চা বাগান পর্যন্তও।