• বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    রংপুরকে উড়িয়ে রাজশাহীর প্রথম হাসি

    রংপুরকে উড়িয়ে রাজশাহীর প্রথম হাসি    

    বিপিএল, ম্যাচ ৯, মিরপুর 
    রংপুর ১৩৪/৫, ২০ ওভার (বোপারা ৫৪, নাফীস ২৩, রেজা ২/২৮, মিরাজ ১/১৯) 
    রাজশাহী ১৩৮/২, ১৬.৪ ওভার (মুমিনুল ৬৩, সিমন্স ৫৩, পেরেরা ১/১২)
    ফল : রাজশাহী কিংস ৮ উইকেটে জয়ী 


    নতুন ভেন্যু, নতুন উইকেট। টসে জিতে নতুন ‘রীতি’ মেনে ব্যাটিং নিলেন অধিনায়ক। তবে দুই অধিনায়কই বলেছিলেন উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ভাল, সেটা দুই ইনিংসেই। মাশরাফি আগে ব্যাটিং নিয়ে খুশী, পরে ব্যাটিং করতে হবে বলে অখুশী নন মুশফিকও। তবে ম্যাচশেষে মুশফিকের মুখেই হাসি, বোলিংয়ের পর যে ব্যাটিংয়েও রাজশাহী রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে রংপুরকে। উত্তরাঞ্চলের দুই দলের ফিরতি লড়াইয়ে জিতেছে রাজশাহী কিংস। 

    ১৩৫ রানের লক্ষ্যটা বড় নয়, রাজশাহীর দরকার ছিল একটা ভাল শুরুর। আজ আবার মুমিনুলের নিয়মিত সঙ্গী নেই, লুক রাইট তো চোটের কারণে আগে থেকেই বাইরে। লেন্ডল সিমন্স এলেন। দ্বিতীয় ওভারেই লাসিথ মালিঙ্গাকে আনলেন মাশরাফি। প্রথম ওভারে দিলেন ১ রান। মুমিনুল একটা সহজ সুযোগও দিলেন এর পরের ওভারে, মিড-উইকেটে সেটা ফেললেন নাজমুল ইসলাম। মালিঙ্গা পরের ওভারে এলেন, গুণলেন ১৪ রান! 

     

     

    রাজশাহীর ব্যাটিং তখন দম পেয়েছে যেন। লেন্ডল সিমন্স যখন রান-আউট হলেন, ততক্ষণে ভেঙ্গে গেছে রাজশাহীর সব রেকর্ড। এর আগে শুধু একটিই শতরানের জুটি ছিল রাজশাহীর, গত বছর ঢাকার সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে তুলেছিলেন মুমিনুল হক ও স্যামিট প্যাটেল। এবারও থাকলেন মুমিনুল, সঙ্গে এ ম্যাচে দলে আসা সিমন্স। দুজনই ফিফটি পেলেন, দুজন মিলে মেরেছেন চারটি করে চার। মুমিনুল মেরেছেন তিনটি ছয়, এর মধ্যে একটি মাশরাফিকে ফ্লিক করে। তবে এসব কিছুর পরও যেটা ছিল বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেই প্রান্তবদল দুজন করেছেন নিয়মিতই। সিমন্সের রান-আউটের পর একটা উইকেট পেয়েছে রংপুর, পেরেরার অসাধারণ ইয়র্কারে বোল্ড হয়েছেন ওয়েলার। তবে দেরি হয়ে গেছে তখন, বেশিই! 

    যেমন দেরি হয়েছিল তাদের প্রথম ইনিংসে রানের চাকাটা ঘোরাতে। 

    সিলেট থেকে ঢাকা, অনেক কিছু বদলে গেলেও একটা নিয়ম যেন পুনরায় প্রতিষ্ঠা করছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। গতবার ৯টি ম্যাচে প্রথম ওভারেই উইকেট পেয়েছিলেন, এবার ৩ ম্যাচের মধ্যে পেলেন ২টিতেই! জনসন চার্লস মিরাজের লেংথের কাছাকাছি যেতে না পেরে ক্যাচ দিয়েছেন, সেটা প্রথম ওভারেই। 

    একপাশে মোহাম্মদ মিঠুন চেষ্টা করলেন দ্রুত উইকেট যাওয়ার প্রভাবটা পুষিয়ে নেয়ার, উলটো এদিকে আউট হয়ে গেলেন আরেক ওপেনার অ্যাডাম লাইথ। ফরহাদ রেজার বেরিয়ে যাওয়া বলেই সর্বনাশ হয়েছে তার। সে ওভারেই রেজাকে অফস্টাম্পের বাইরে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন মিঠুন। ৪ ওভারের মাঝেই ৩ উইকেট হারিয়ে রংপুর তখন পড়ে গেছে চাপে। 

    সে চাপের পূর্ণ প্রতিফলন পাওয়া গেল শাহরিয়ার নাফিস ও রবি বোপারার ব্যাটে। পরের ৫ ওভারে এসেছে ১৫ রান, স্ট্রাইক বদল করতেই হিমশিম খেয়েছেন নাফিস ও বোপারা। কেসরিক উইলিয়ামসকে একটা চার মেরে বোঝা হালকা করতে চেয়েছেন বোপারা, পরের ওভারে ফ্র্যাঙ্কলিনকে মেরেছেন নাফীস। পরের ওভারেই আউট নাফীস, উইলিয়ামসকে জোরের ওপর মারতে গিয়ে পাননি জোরটাই! জিয়াউরের আগে পাঠানো হয়েছিল থিসারা পেরেরাকে, রানের গতি বাড়ানোর বদলে উলটো ফ্রাঙ্কলিনের বলে ক্যাচ দিয়েছেন শীঘ্রই। 

    রংপুরকে এরপর যতোখানি তোলার, তুলেছেন ওই বোপারাই। শেষ ওভারে ফিফটি করেছেন চার মেরে, তবে পরের বলেই জোরের ওপর খেলতে গিয়ে দিয়েছেন ডট। রংপুরের ইনিংসের যেন প্রতিচ্ছবিই এটা! ফাঁস চেপে বসেছিল ধীরে ধীরে,সে চাপ আলগা করতে গিয়ে তাতে জড়িয়েই গেছে আরও বেশি করে! 

    যা একটু হেসেছিলেন বোপারাই, তবে মুমিনুল-সিমন্সে ম্লান হয়ে গেছে তা।