• বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    মেহেদী-রশিদের ঘূর্ণিতে ম্লান গেইল-ম্যাককালামরা

    মেহেদী-রশিদের ঘূর্ণিতে ম্লান গেইল-ম্যাককালামরা    

    কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ২০ ওভারে ১৫৩/৬ (ইমরুল ৪৭, স্যামুয়েলস ৪১; মাশরাফি ২/২২, পেরেরা ২/২৬)

    রংপুর রাইডার্স ২০ ওভারে ১৩৯/৭ (বোপারা ৪৮*, মিঠুন ৩১; মেহেদী ২/১৫, রশিদ ২/১৮)

    ফলঃ কুমিল্লা ১৪ রানে জয়ী


    টি-টোয়েন্টিতে ১৫৩ রান এমন কিছু নয়। বিশেষ করে ক্রিস গেইল-ব্রেন্ডন ম্যাককালামরা যে দলে আছেন, তাদের জন্য তো নয়ই। তবে রশিদ খানদের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের জন্য এই রান হয়ে গেল যথেষ্টই। টানা চার জয়ে কুমিল্লা এখন উড়ছে। আর চার ম্যাচে তিন পরাজয়ে রংপুর রইল পয়েন্ট তালিকার তলানিতেই।

    শনিবারের মিরপুরের গ্যালারি বিকেল থেকেই কানায় কানায় পূর্ণ। গেইল-ম্যাককালাম প্রথমবারের মতো একসাথে ব্যাট করবেন বিপিএলে, উপলক্ষ তো ছিলই। মেহেদী হাসানের প্রথম ওভারেই আউট হতে পারতেন গেইল, কিন্তু পরিষ্কার মনে হওয়া এলবিডব্লু দেননি আম্পায়ার। তবে রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে, আউট না দিলেও পারতেন।

    তবে খানিক পর লিটন দাশ যখন হাসান আলীর বলে গেইলের সহজ ক্যাচ মিস করলেন, সেটার জন্য কুমিল্লাকে হাপিত্যেশ করতে হবে বলেই মনে হচ্ছিল। পরের তিন বলে তিন চার মারলেন গেইল, মিরপুরে তখন উৎসবের তুমুল কোরাস।

     

     

    খানিক পর পঞ্চম ওভারে বোলিংয়ে এলেন রশিদ খান, এলবিডব্লুতে ফেরালেন গেইলকে। যদিও এবার বল স্টাম্প মিস করছিল। ওই ওভারেই আউট কুশল পেরেরা,, ৩১ রানে হারাল দ্বিতীয় উইকেট। পরের ওভারে খেল আরও বড় ধাক্কা, মেহেদীর বলে স্টাম্পড হয়ে গেলেন ম্যাককালাম। দুই বল পর আবারও মেহেদীর আঘাত, এবার শাহরিয়ার নাফীস বলের লাইন মিস করে হলেন বোল্ড। কুমিল্লা হঠাৎ করেই তখন ড্রাইভিং সিটে।

    এরপর একটু একটু করে ম্যাচে ফেরালেন রবি বোপারা ও মোহাম্মদ মিঠুন। পঞ্চম উইকেটে যোগ করলেন ৬৭ রান। কিন্তু রান রেট যখন পাল্লা দিয়ে বেড়ে যাচ্ছিল। মিঠুনের আউটের পর মাশরাফি ক্রিজে এসেও সেটি খুব কমাতে পারলেন না। বোপারাও ব্যর্থ পরিস্থিতির দাবি মেটাতে, ৪৮ বলে ৪৮ রানের ইনিংসটা শেষ পর্যন্ত পারেনি দলকে জেতাতে। শেষ ৩ ওভারে রংপুরের দরকার ছিল ৪৫ রান, শেষ ওভারে ২৬। কিন্তু থিসারা আর বোপারা মিলে নিতে পারলেন ১২ রান।

     তার আগে অবশ্য কুমিল্লার শুরুটা ছিল বেশ সতর্ক। প্রথম ৩ ওভারে রান উঠেছিল ১৫। চতুর্থ ওভারে একটু আগ্রাসী হতে গেলেন তামিম, পর পর দুই চার মারলেন রুবেলের বলে। কিন্তু সেটা করতে গিয়েই হলো সর্বনাশ, পুল করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিলেন। রুবেল আগ্রাসী উদযাপনে বুঝিয়ে দিয়েছেন, উইকেটটা তাঁর জন্য কতটা দরকার ছিল।

    পাওয়ারপ্লেটা অবশ্য কুমিল্লা মোটামুটি দেখেশুনেই পার করে দিয়েছে। প্রথম ছয় ওভারে রান এসেছে ৪২, তবে উইকেট হারিয়েছে ঐ তামিমেরটাই। সপ্তম ওভারেই মাশরাফির বল ডাউন দ্য উইকেটে এসে বোল্ড হয়ে গেছেন লিটন। তবে কুমিল্লা সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা পেয়েছে এক ওভার। মাশরাফির বলেই লাইনের আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে গেছেন জস বাটলার। ৫৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কুমিল্লার সামনে তখন অশনী সংকেত।

    তবে ইমরুল কায়েস আগের ম্যাচের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছিলেন। সোহাগ গাজীর ছয় মেরে আভাস দিচ্ছিলেন দিনটা তাঁর। এরপর নাজমুল অপুর পর পর দুই বলে দুই চারে ফিফটিটা মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। কিন্তু এর পরেই হল ছন্দপতন, পেরেরার দারুণ এক ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে গেলেন ৩২ বলে ৪৭ রান করে। ফিফটিটা একটুর জন্য পাওয়া হয়নি, তবে এবারের বিপিএলে উপুল থারাঙ্গার পর সবচেয়ে বেশি রান এখন তাঁরই।

    মারলন স্যামুয়েলস অবশ্য তখনও ছিলেন, শুরুটা তাঁর বরাবরের মতোই স্লথ। স্ট্রাইকরেট ২০ পেরিয়েও ১০০ রেখে যাচ্ছিলেন, প্রস্তুত নিচ্ছিলেন শেষের দিকে ঝড় তোলার জন্য। ছয়-চার মারছিলেন বটে, কিন্তু কুমিল্লার রানের গতিটা খুব বাড়ছিল না। শেষ পর্যন্ত ১৮তম ওভারের শেষ বলে আউট হয়ে গেলেন ৩৪ বলে ৪২ রান করে। শেষ পর্যন্ত রংপুর যে ১৫০ পেরিয়েছে, তার মূল কৃতিত্ব সাইফ উদ্দিনের। রুবেলের শেষ ওভারে ছয়-চারে কুমিল্লাকে এনে দিয়েছেন ১৫৩ রানের পুঁজি।