• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    এ শুধু মেসির দিন...

    এ শুধু মেসির দিন...    

    ম্যাচের আগে ম্যানুয়েল নয়্যারের কথাটা কি মনে রেখেছিলেন, "বিশ্বকাপ ফাইনালেই তো ওকে হারিয়েছি। কে সেরা সেটা লিওনেল মেসিকে আবার দেখিয়ে দেব"? নইলে প্রথম গোলের পর অমন বুনো উল্লাসে ভেসে যাবেন কেন? মেসি শুধু নয়্যারকেই স্তব্ধ করে দেননি, টিভিসেট বা ন্যু ক্যাম্পে থাকা হাজারো দর্শককেও স্তম্ভিত করে দিয়েছেন। দ্বিতীয় গোলের পর স্কাই স্পোর্টসের ধারাভাষ্যকার মার্টিন টাইলেরকে পর্যন্ত বলতে বাধ্য করেছেন, "শুধু ফুটবলেই আপনি এসব দেখতে পারেন।" 

     


    বায়ার্নকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার জয়টা তো মেসিময়। প্রথম দুইটি গোল নিজে করেছেন। দূর থেকে দারুণ এক শটে প্রথমে বিধ্বস্ত করেছেন নয়্যারকে। পরে বোয়েটাংকে নাকানিচুবানি খাইয়ে নয়্যারের মাথার উপর দিয়ে নিজের দুর্বলতর ডান পা দিয়ে যে চিপ করেছেন, সেটা হয়ে গেছে ফুটবল পুরাণের অংশ । শেষে নেইমারকে দিয়ে বায়ার্নের জালে ঠুকে দিয়েছেন আরেকটি পেরেক। কে সেরা, সেই প্রশ্নের উত্তরটা বোধহয় এখন না দিলেও চলে।

     

     

    অথচ ৭৫ মিনিট পর্যন্তও মনে হচ্ছিল, ন্যু ক্যাম্পে ফিরে পেপ গার্দিওলা কৌশলগত জয়ী হয়েই মাঠ ছাড়বেন। একের পর এক সুযোগ পাচ্ছিল বার্সা, কিন্তু কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছিল না। নিজের কথা রাখতেই নয়্যার যেন অতিমানব হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। সুয়ারেজকে নিশ্চিত গোল থেকে বঞ্চিত করেছেন, সামনে এগিয়ে এসে রুখে দিয়েছেন আলভেজ-নেইমারকে। সুয়ারেজ-নেইমারও আরও বেশ কিছু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। মনে হচ্ছিল, বার্সাকে সন্তুষ্ট থাকতে হবে ড্র নিয়েই। কিন্তু কীসের কী? ২০০৬ সালের পর চ্যাম্পিয়নস লিগে সবচেয়ে কম 'বল পজিশন' (৪৭ শতাংশ) নিয়েও বার্সা শেষ ১৫ মিনিটে ছিড়েখুঁড়ে ফেলেছে বায়ার্নকে। আরেকটু নির্দিষ্ট করে বললে করেছেন আসলে মেসি।

     

    আগের দিন চ্যাম্পিয়নস লিগে সবচেয়ে বেশি গোলে রোনালদো ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন মেসিকে। আজ আবার ছিল মেসির শততম ইউরোপিয়ান ম্যাচ। সেরাটা বোধহয় এই উপলক্ষের জন্যই জমিয়ে রেখেছিলেন। এই ম্যাচের আগে গার্দিওলা বলেছিলেন, মেসিকে থামানো সম্ভব নয়। শুধু ওকে বশ করে রাখা যায়। সেই কাজেও ৭৫ মিনিট পর্যন্ত সফল বায়ার্ন। কিন্তু এরপর প্রমত্ত ঝড় এল কোনো সংকেত না দিয়েই। আর তাতে উড়ে গিয়ে বায়ার্নের ফাইনাল স্বপ্ন এখন প্রায় মুছে গেছে।