• ত্রিদেশীয় সিরিজ
  • " />

     

    সেই স্লিপ এই স্লিপ, সেই মুজারাবানি এই মুজারাবানি

    সেই স্লিপ এই স্লিপ, সেই মুজারাবানি এই মুজারাবানি    

    সেই স্লিপ, এই স্লিপ 
    ২০১৫। নভেম্বর। জিম্বাবুয়ের শেষ ব্যাটসম্যান টউরাই মুজারাবানি ব্যাটিংয়ে। বোলিংয়ে মুস্তাফিজ। স্লিপ-কর্ডনে দাঁড়িয়ে গেলেন সাতজন ফিল্ডার! মুজারাবানির উইকেটটা অবশ্য নিয়েছিলেন আরাফাত সানি। ২০১৮। জানুয়ারি। জিম্বাবুয়ের ৪ উইকেট নেই, ব্যাটসম্যান ম্যালকম ওয়ালার। বোলার মুস্তাফিজ। এবার স্লিপ পজিশনে তিনজন, গালিতে দুইজন। এই ফিল্ড-সেটিংটাও বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না অবশ্য। তবে সেদিনের মতো আজও জিম্বাবুয়ের শেষ ব্যাটসম্যান ছিলেন আরেক মুজারাবানি। ব্লেসিং মুজারাবানি। যার উইকেট আবার নিলেন মুস্তাফিজই! 

     

    ব্যাট-প্যাড থেকে লং-প্যাড
    ক্লোজ-ইন বা ব্যাট-প্যাড পজিশনে ফিল্ডিং করতে প্যাড-গার্ড-হেলমেট, সবরকম সুরক্ষাই লাগে ফিল্ডারের। সাব্বিরের ভাগে পড়েছিল সে দায়িত্ব। তবে একদিক থেকে পেসার, আরেকদিক থেকে স্পিনার একটু সমস্যায় ফেললো সাব্বিরকে। এক ওভারের মাঝে প্যাড খুলে আবার পরা সময়সাধ্য, সাব্বির তাই মিডউইকেটে দাঁড়িয়ে গেলেন প্যাড পরেই! 

     

    আউট থেকে ওয়াইড, ভায়া নট-আউট 
    লেগস্টাম্প দিয়ে বেড়িয়ে যাওয়া বল। তামিম ফ্লিক করতে গিয়ে সফল হলেন না ঠিক। আম্পায়ার শরাফউদ্দৌলা জিম্বাবুইয়ানদের পক্ষে সিদ্ধান্ত দিলেন, তামিম কট-বিহাইন্ড। তামিম নিলেন রিভিউ, মাঝামাঝি এসে সাকিবের সঙ্গে গ্লাভস ঠুকিয়ে যেন বুঝিয়েও দিলেন, ঠিকঠাকই আছে সব। আর ততক্ষনে শরাফউদ্দৌলা বুঝে গেছেন, গোলমেলে হয়ে গেছে সব! মুখের অভিব্যক্তিই বলে দিচ্ছিল, সিদ্ধান্তটা ভুল দিয়েছেন। টিভি আম্পায়ার ব্রুস অক্সেনফোর্ড সেটা শুধরিয়ে নিতে বললেন, নট-আউট তামিম। তবে লেগসাইড দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বল, ব্যাটেও লাগেনি, হিসাবমতো সেটা হওয়ার কথা ওয়াইড। তামিম চাইলেন সেটাই। আরেকবার অক্সেনফোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ শরাফউদ্দৌলার, যে বলে তামিম আউট হয়েছিলেন, সেটাই হয়ে গেল ওয়াইড! 

     

    ২০১৫। নভেম্বর।


    মুজারাবানির হাত ফসকানি 
    ক্রেমারের বলটা ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে কাট করেছিলেন তামিম। ডিপ মিডউইকেট থেকে দৌড়ে এসে ডাইভ দিলেন ব্লেসিং মুজারাবানি। বল ঠেলে দিলেন, ততক্ষণ পর্যন্ত দারুণ প্রচেষ্টা। প্রথম বিপত্তিটা ঘটলো থ্রোয়ের সময়। কিপারের দিকে বল না গিয়ে গেল থার্ডম্যানের দিকে! মানে হাত ফসকে গেল বল। সেটা কুড়িয়ে পাঠানো হলো, আম্পায়ার ততক্ষণে থার্ড আম্পায়ারের শরণাপন্ন। রিপ্লে দেখালো, ডাইভ দিয়ে বল সরিয়ে দেওয়ার সময় পা ছুঁয়েছিল বাউন্ডারি লাইন। চার হলো। বৃথা চেষ্টা, বৃথাই থ্রো ফসকে যাওয়া! 

    মুজারাবানির পা ফসকানি 
    প্রথম নো বলটা করেছিলেন টেনডাই চাতারা, দ্বিতীয় ওভারে। ফ্রি হিটে এনামুল আগেভাগেই বড় শট খেলার প্রস্তুতি নিয়ে মিসটাইমিংয়ে নিতে পারলেন শুধু ১ রান। বাংলাদেশ এরপর ফ্রি হিট পেলো আরও চারটি, সবকটিই একই ওভারে! মুজারাবানি যেন নিজের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন। পপিং ক্রিজের দাগটা সীমানা, তিনি দিচ্ছেন লং জাম্প! প্রত্যেকবার যেন ছাড়িয়ে যাচ্ছিলেন নিজেকে! প্রথম ফ্রি হিটে মুশফিক রানই নিতে পারলেন না, ওপাশে আফসোসে পুড়ছিলেন তামিম। এরপর তামিম নিজেই পেলেন তিনটি ফ্রি হিট। প্রথম দুইটি মিস করলেন, শেষেরটিতে নিলেন একটা ডাবলস। নো-বল সমৃদ্ধ ম্যারাথন ওভার করলেও অন্তত চারটি ফ্রি হিটে মুজুরাবানি গুণেছেন মোটে ২ রান- সান্ত্বনা পেতে পারেন সেটাতেই! 

    নিস্ফলা থ্রো 
    আবারও মুজুরাবানির সেই ওভার। গল্প শেষ হয়নি এখনও। লেগস্টাম্পে ব্যাক অব আ লেংথের বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে খেললেন তামিম। দুই রান নিতে গিয়ে আরেকটু হলেই বিপত্তি ঘটেছিল! সরাসরি থ্রো এসে লাগলো স্টাম্পে, ধরবেন বলে গিয়েও উইকেটের সামনে থেকে থ্রোটা ছেড়েছিলেন উইকেটকিপার টেইলর। তবে তামিম বেঁঁচে গেলেন। পরের বলে মিডউইকেটে খেলে তামিম নিতে গেলেন সিঙ্গেল। এবারও সরাসরি থ্রো, তামিমের প্রান্তে তাক করেই। এবারও বেঁচে গেলেন তামিম।