হার এড়িয়ে রেকর্ড গড়ল বার্সা
গত মাসেই কোপা ডেল রে'র কোয়ার্টার ফাইনালে নিজেদের মাঠে বার্সেলোনাকে হারিয়েছিল এস্পানিওল। পুরো মৌসুমে ঐ একবারই হেরেছে বার্সা। আজও কর্নেয়া এল প্রাটে বার্সার বিপক্ষে ৮০ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে ছিল তারাই। মাত্র মিনিট দশেক বাকি থাকতেও লিড ধরে রাখায় ১৪ বছর পর বার্সার বিপক্ষে লিগে জয়ের স্বপ্নে বিভোর তখন এস্পানিওল সমর্থকেরা। এমন সময় ডিবক্সের বাঁপ্রান্তে ফ্রিকিক পেল বার্সা। লিওনেল মেসির ফ্রিকিকে লাফিয়ে হেড করে দলকে সমতায় ফেরালেন জেরার্ড পিকে। লা লিগায় বার্সার বিপক্ষে জয়ের অপেক্ষাটা আরেকটু বাড়ল এস্পানিওলের। নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের মাঠে ১-১ গোলে ড্র করে অপরাজিত থাকার রেকর্ডটা অক্ষুণ্ণ রাখল এর্নেস্তো ভালভার্দের দল। আজ হার এড়িয়ে লা লিগায় বার্সার হয়ে পেপ গার্দিওলার টানা ২১ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড নিজের করে নিলেন ভালভার্দে (২২)।
এস্পানিওলের বিপক্ষে ম্যাচ শুরুর আগেই বার্সার মূল একাদশ দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন অনেকেই। লুইস সুয়ারেজ, ফিলিপ কুতিনিয়োদের নামালেও দলের মূল তারকা মেসিকে বিশ্রাম দিয়েছিলেন ভালভার্দে। আগামী সপ্তাহ থেকে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর খেলা, সেই সাথে ভ্যালনেসিয়ার বিপক্ষে কোপা ডেল রে সেমিফাইনাল, ওদিকে লা লিগা টেবিলের শীর্ষে ১১ পয়েন্টের লিড- সব মিলিয়ে মেসিকে বেঞ্চে বসিয়ে রাখতে দ্বিধান্বিত হননি ভালভার্দে। অবশ্য মেসির অভাবটা শুরু থেকেই দারুণ ভোগাচ্ছিল বার্সাকে। সুয়ারেজ, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, পলিনিয়ো, কুতিনিয়োদের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাবটাও ছিল সুস্পষ্ট। ওদিকে শুরু থেকেই সুয়ারেজদের উদ্দেশ্যে দুয়োধ্বনি দিয়ে যাচ্ছিলেন এস্পানিওল সমর্থকেরা। বার্সার প্রতিটি ভুল পাস, তাদের বিরুদ্ধে যাওয়া প্রতিটি সিদ্ধান্তের সাথে সাথেই সমর্থকদের গর্জনে প্রকম্পিত হচ্ছিল বৃষ্টিস্নাত কর্নেয়া এল প্রাট। বৃষ্টির কারণে দু'দলেরই পাসিং-এ সমস্যাটা ছিল চোখে পড়ার মত। ম্যাচের প্রথম সুযোগ পায় বার্সা, ২৪ মিনিটে। ডিবক্সের বাইরে থেকে কুতিনিয়োর জোরাল বাঁকানো শট সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ গোলরক্ষক দিয়েগো লোপেজকে পরাস্ত করলেও প্রতিহত হয় ক্রসবারে।
প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধের পুরোটা সময়ও বৃষ্টির কারণে নিজেদের স্বভাবসুলভ খেলাটা খেলতে পারেনি দু'দলের কেউই। ৪৭ মিনিটে বার্সার জালে বল পাঠিয়েছিল এস্পানিওল। কিন্তু মরেনোর দিকে লিও বাপতিস্তাও পাস বাড়ানোর আগেই বল বাইরে চলে যাওয়ায় গোলের বদলে গোলকিকের বাঁশি বাজান রেফারি। কিন্তু ৬৬ মিনিটে আর মরেনোকে দমিয়ে রাখতে পারেনি বার্সা। ডানপ্রান্ত থেকে সার্জিও গার্সিয়ার নিঁখুত ক্রসে হেড করে বার্সা গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগেনকে পরাস্ত করেন এই স্প্যানিয়ার্ড।
অপরাজিত থাকার রেকর্ড হারানোর চিন্তায় মেসিকে ঠিকই নামিয়ে দেন ভালভার্দে। ৮২ মিনিটে মেসির ফ্রিকিকেই হেড করে দলকে সমতায় ফেরান পিকে। স্পেনের প্রায় সব মাঠের মতো এখানেও পুরোটা সময়ই দুয়োধ্বনির শিকার ছিলেন এই স্প্যানিশ ডিফেন্ডার। গোলের পরই মুখে আঙ্গুল দিয়ে পিকের করা উদযাপনই বলে দিচ্ছিল, গোল করতে ঠিক কতটা মরিয়া ছিলেন তিনি।
আজকের পর ৫৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুই নম্বরে থাকা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সাথে বার্সার লিডটা গিয়ে দাঁড়াল ১২-তে।