বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের মাঝে ভেদাভেদ করেননি হাথুরুসিংহে
বাংলাদেশের দায়িত্বে থাকার সময় ক্রিকেটারদের মাঝে ভেদাভেদ তৈরী করেননি বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তবে মেধাবী ক্রিকেটারদের ‘পর্যাপ্ত সুযোগ’ দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ সফর শেষের আগে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে এসব বলেছেন তিনি।
‘আপনি সব ক্রিকেটারকেই জিজ্ঞাসা করলে জানতে পারবেন, আমার কাছে সিনিয়র-জুনিয়র কোনও ভেদাভেদ ছিল না। তবে আমি মেধাবি ক্রিকেটারদের পর্যাপ্ত সুযোগ দিয়েছি পারফর্ম করতে, এবং তারা করেছেও।’
দায়িত্বে থাকার সময় সৌম্য সরকারকে আলাদা করে দেখতেন বলেও প্রচলিত আছে। তবে হাথুরুসিংহে বলেছেন, ‘সৌম্য খুবই মেধাবি একজন ক্রিকেটার, তার পরিচর্যা করলে সে বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার হবে। আর বাংলাদেশে আরও ভাল ক্রিকেটারও আছে। তার মানে এই না, আমি অন্যান্য ক্রিকেটারকে কম সময় দিয়েছি।’
‘আমার রিয়াদের জন্য সময় ছিল। আমি যখন এসেছিলাম, সে পারফর্ম করছিল না। এখন তার নামের পাশে তিনটি আইসিসি টুর্নামেন্টের সেঞ্চুরি আছে। আমি মুশফিক, তামিমকে যেমন সময় দিয়েছি, ইমরুল ও সাব্বিরকেও দিয়েছি। আমার মনে হয় সাব্বির খুবই প্রতিভাবান একজন ক্রিকেটার, দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির এমন উইকেটে তাকে খেলানো হলো না কেন, সেটা বিস্ময়কর। এরপর মেহেদি মিরাজ আছে। তাদের দিকে যদি ভালভাবে নজর দেওয়া হয়, ভাল ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে। তারা ব্যর্থ হয়েছে, কিন্তু ক্রিকেট ব্যর্থতারই খেলা। অল্প সময়ের মাঝেই প্রতিক্রিয়া দেখানো একেবারেই উচিৎ নয়। তাদেরকে সুযোগ দিতে হবে, সময় দিতে হবে।’
শ্রীলঙ্কা সফরে শেষ টেস্টের আগে মাহমুদউল্লাহকে বাদ দিয়ে দেশেই ফেরত পাঠাতে চেয়েছিলেন হাথুরুসিংহে। তার আমলে ‘চাপ’- এ ছিলেন মুমিনুল হকও। চট্টগ্রাম টেস্টে সেঞ্চুরির পর মুমিনুলের উদযাপন নিয়েও কথা উঠেছিল। অবশ্য মুমিনুল পরে জানিয়েছিলেন, কাউকে দেখানোর জন্য উদযাপন করেননি তিনি। আর হাথুরুসিংহে বলছেন, ‘হ্যাঁ, আমি মুমিনুলকে এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে দেখিনি আগে। আমি মানুষের কথা জানি না, আপনার তাকেই জিজ্ঞাসা করতে হবে। সে খুব খুব ভাল একজন টেস্টে ক্রিকেটার, কিন্তু তাকে উন্নতি করতে হবে। কিছু উইকেটে সে দারুণ খেলতে পারে, তবে একটু স্পোর্টিং ধরনের উইকেটে তার নিজের খেলার উন্নতি করতে হবে। তবে সে অনেক উন্নতি করেছে। আমার মনে হয়, গত তিন বছরে আমি তাকে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে দেখেছি, আমার আসার আগের সময়ের থেকে। সে টেকনিকে বদল এনেছে, সে খুবই বুদ্ধিমান।’
কোচের সঙ্গে নির্বাচকের দায়িত্বও পালন করেছেন হাথুরুসিংহে। তিনি ঘরোয়া ক্রিকেট দেখেন না, এই অভিযোগের জবাবে বলেছেন, ‘আমি এটা মানি না, কারণ এর জন্য অন্য লোক ছিল। যাদের সঙ্গে আপনি কাজ করছেন, অবশ্যই তাদেরকে বিশ্বাস করতে হবে। মানে, আপনাকে তাদের সিদ্ধান্তে বিশ্বাস করতে হবে, সবকিছুর দিকে নজরও রাখতে হবে। এভাবেই তো কাজ হয়। আমার মনে হয়, এ কারণেই আপনারা মনে করেন আমার মাঝে স্বৈরাচারি ভাব আসে। আপনি যদি স্বৈরাচার হন, তাহলে তো অন্য লোকদের কাজ করতে দেওয়ার কথা নয়!’