মুশফিক ছয় মারতে পারেন, জানতেনই না নাজমুল হাসান
নিদাহাস ট্রফির দল ঘোষণার ঠিক আগেই জানিয়েছিলেন, এবারের সফরে তিনিও সঙ্গী হচ্ছেন দলের। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এখন নিশ্চয়ই একটু স্বস্তিতে থাকবেন। ২১৪ রান তাড়া করে বাংলাদেশ যে অবশেষে হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়েছে। তবে নাজমুল হাসান জানতেনই না,মুশফিক এমনভাবে ছয় মারতে পারেন!
জয়ের পর আজ কলম্বোতেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন নাজমুল হাসান। মুশফিকের ৩৫ বলে ৭২ রানের ইনিংসে তাঁর বিস্ময়টাও অবশ্য গোপন করলেন না।
‘তামিম–সৌম্য যে মারতে পারে আমরা জানি। লিটন যে মারতে পারে জানতাম না। মুশফিক? ওকে বললাম, তুমি যে এমন মারতে পার, জানতামই না! ও তো আসলে গত দুই বছরে ছয় মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ক্যাচ হয়। ও মারতে পারে। কিন্তু ছয় মারার খেলোয়াড় নয়। ছয় মারে তিনজন- তামিম, সৌম্য, সাব্বির। সাব্বির তো ছন্দেই নেই। ভালো ফিল্ডিং করেছে, যা হোক। লিটন কাল যেভাবে খেলেছে খেলার টোন বদলে দিয়েছে।’
অবশ্য মনে করিয়ে দেওয়া যায়, টি-টোয়েন্টিতে মুশফিকের ছয় আছে ২৬টি। শুধু সাকিব, তামিম আর মাহমুদউল্লাহই এই সংস্করণে তাঁর চেয়ে বেশি ছয় মেরেছেন।
কিন্তু চাপে থাকা বাংলাদেশ দল এমন দারুণভাবে বেরিয়ে আসল কিভাবে? নাজমুল হাসান বললেন, ম্যাচের আগের দিন রাতে এসব নিয়েই বসেছিলেন দলের সঙ্গে, ‘বসলাম ওদের সঙ্গে পরশু রাতে। ওদের বলতে- মুশফিক, তামিম ও রিয়াদের সঙ্গে। ইমোশনাল কথাও হলো অনেক। খেলায় হারজিত হবেই। ভারতের সঙ্গে ব্যাটিং যেভাবে হয়েছে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। ওদের বললাম, ভারত একটার পর একটা অফ স্টাম্পের বাইরে বল করছে আর তোমরা ঘুরিয়ে মারতে চাইছ, এগুলো তো ক্রিকেটিং শট না। নতুন ছেলেরা করে, সেটা একটা কথা, তামিম, মুশফিক, রিয়াদের শক্তির জায়গা তো এটাই...ব্যাটে বল লাগে না, ৫৭টা ডট বল। এগুলো নিয়ে কথা হচ্ছিল। এসব থেকে কে ওদের বের করে আনবে? আমি তো নন-টেকনিক্যাল। ওদের কাজ ওদেরই করতে হবে। ওদের ওয়ালশ আছে, স্বল্পকালীন সময়ে সে এসেছে। তার কাছে তো ব্যাটিং কৌশল আশা করতে পারি না। এটা নিয়ে অনেক আলাপ হয়েছে। (ওরা) ইমোশনাল হয়েছে। আমি বললাম ইমোশনাল হওয়ার দরকার নেই, যদি বেসিকে ঠিক থাকে। সবাই যেখানে আমাদের ভয় পায়, এখন কী হয়েছে? শারীরিক ভাষা খারাপ কেন? কাল বলেছিলাম হারজিত ব্যাপার নয়, তবে প্রতিটি বলে প্রতিটি খেলোয়াড়কে বোঝাতে হবে আমরা জিততে চাই।’
লিটনকে যে শুরুতে নিয়ে আসা হলো, সেই সিদ্ধান্তের প্রশংসাও করেছেন নাজমুল হাসান, ‘কাল একটা জিনিস ভালো লেগেছে, হঠাৎ করে লিটন দাসকে ওপেনিংয়ে এনেছে। শুরুতে এটা আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নেইনি। শ্রীলঙ্কা হয়তো পরিকল্পনা করেছিল তামিম ও সৌম্যকে নিয়ে। কোন বোলার আনবে সেটাও সেট করা। এই প্লানে ব্যাঘাত ঘটাতেই লিটনকে ওপেনিংয়ে আনা। আর লিটন যেহেতু ছন্দে আছে, যে বোলার আসুক সে মারতে পারবে। তখন তামিম পরের দিকে এসে বলল, এটা খারাপ নয়। ভালো আইডিয়া। আমি শুধু বললাম, যাই করো লিটন ও সৌম্যর সঙ্গে একটু কথা বলে নিও।’
শেষ পর্যন্ত কাজ হয়েছে ওই কথাতেই।